লক্ষ্মীপুরে ব্রীজ না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার ১৫ হাজার মানুষের জন দূর্ভোগ

Picture.jpg

রিয়াজ মাহমুদ বিনু ।।

লক্ষ্মীপুরের রামগতি ২নং চর বাদাম ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের দিনামাঝির খেয়া নামক স্থানে ভূলুয়া নদীর উপর ব্রীজ না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁসের সাঁকো দিয়ে চলাচল করছেন ঐ এলাকার ছাত্র-ছাত্রী পথচারী সহ প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় এলাকাবাসীকে। বিশেষ করে স্কুল-মাদরাসায় পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রী শিশু ও বৃদ্ধাদের। অথচ নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা বার বার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসলে ও এর কোন উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম কলাকোপা গ্রামের ভুলুয়া নদীর উপর দিনামাঝির খেয়া নামক স্থানে একটি ব্রীজের অভাবে ১৫ হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে এই বাঁসের সাঁকো দিয়ে চলাচল করছেন।স্হানীয় ভুক্তভোগী আলী আরশাদ, আব্দুল গণী,আব্দুল মতিন, ও মুশাররাফ হোসেন মুশু বলেন বাদামতলি, বটতলি, জুগিগো সমাজ, চরকাদিরা ও চরবাদাম ইউনিয়নের ১৫ হাজার লোকের যাতায়াত এই সাঁকো দিয়ে।

প্রায় ৩০ বছর ধরে ভূলুয়া নদীর উপর সেতু নেই। নদীটির ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে গ্রামের ১৫ হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। মো.আজিজুল হক বলেন, নির্বাচন এলেই এলাকার জনপ্রতিনিধিরা এখানে সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। ভোটে পাস করার পর আর প্রতিশ্রুতির কথা মনে থাকে না। এলাকাবাসী সূত্র জানায়, প্রায় ৩০ বছর ধরে এলাকাবাসীর চাঁদায় নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে ওই নদী পারাপার হয় পথচারীরা। প্রতিদিন এ পথ দিয়ে বটতলী,বাদামতলি,জুগিগো সমাজ,ভুলুয়া বাজার কেরামতিয়া বাজার, জমিদারহাট,আলেকজান্ডার, রামগতি থানা,পার্শ্ববর্তী কমলনগর থানা,ফজুমিয়ারহাট ও হাজিরহাটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের একমাত্র পথ এই সাঁকো। গ্রামের মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। সাঁকোটির পাশেই হাজীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,ও চরজগবন্দু সফিগন্জ দাখিল মাদ্রাসা। প্রতি সাপ্তাহের হাট বাজারে আশা যাওয়া করতে দুর্ভোগের শিকার হন এলাকাবাসী। দূরদূরান্ত থেকে বিভিন্ন ধরনের কৃষি পণ্য ধান গম ও সবজি নিয়ে এসে কৃষকরা সাঁকো পার হতে ভোগান্তির শিকার হন। সঙ্গে গুনতে হয় অতিরিক্ত টাকা। শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে নদীর এপার-ওপারে যেতে হয়। যান চলাচলের ব্যবস্থা না থাকায় অসুস্থ মানুষকে জেলা শহরে নিয়ে আসতে দুর্ভোগের শিকার হতে হয়।

রহিমা খাতুন (৬০) বলেন,আমি কোনো সময় এই সাঁকো দিয়ে হেঁটে যেতে পারি নাই। ভয়ে সব সময় বসে বসে পার হই। একদিন সাঁকো থেকে নিচে পড়ে গিয়েছিলাম। সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় ২শ ফুট দৈর্ঘ্যের বাঁসের সাঁকোটি উঁচু-নিচু অবস্থায় আছে। চলার সময় সেটি দোলে। শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান বলেন, সাঁকো পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়। অনেক সময় আশা যাওয়ার সময় পানিতে পড়ে যায়। স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস শহীদ বলেন এই নদীর উপর একটি ব্রীজ খুব জরুরি।বিষয়টি নিয়ে অনেকবার সংশ্লিষ্টদের নিকট ধরনা দিয়েও কোন লাভ হয়নি। এ বিষয়ে লেখালেখি করতে সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন তিনি।

চরবাদাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাখাওয়াত হোসেন জসিম বলেন, ওই স্থানে সেতু না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে (এলজিইডি) আবেদন করা হয়েছে। আশাকরি দ্রুতই এর একটা ফল পাওয়া যাবে। রামগতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল মোমিন বলেন বিষয়টির ব্যাপারে খোজ নিয়ে ঐ স্থানে ব্রীজ নির্মাণের ব্যাপারে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top