নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে মসলাজাতীয় দুই পণ্য আদা আর পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। সঙ্গে বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য মসুর ডাল, ডিম আর সবজির দাম। রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ, শান্তনগর, মহাখালী এবং সাততলা কাঁচাবাজার ঘুরে এসব পণ্যের দামের এমন চিত্র দেখা গেছে।
বিক্রেতারা বলছেন, এখন মূলত মজুদদারদের পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করেছে। যে কারণে সরবরাহ আগের থেকে কমেছে। তাই দাম বেড়ে গেছে। পেঁয়াজের মৌসুম শেষ হয়ে এসেছে, তাই বাজারে সরবরাহ কমে গেছে। আর, আদার সরবরাহও কিছুটা কমেছে। এ কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই দুই পণ্যের দাম বেড়েছে। অন্যদিকে, ‘বৃষ্টির কারণে’ বাজারে সরবরাহ কমে সবজির দাম বেড়েছে বলে বিক্রেতাদের ভাষ্য।
কাঁচাবাজারে ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে আদা ও দেশি পেঁয়াজের দাম। আমদানি করা আদা কেজিতে ১০০ থেকে ১১০ টাকা, দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা বেড়েছে। দিন দশেক আগেও বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ টাকা বিক্রি হয়েছে। তবে, দাম বেড়ে গতকাল ৯ আগস্ট শনিবার এ পণ্যটি ৮০ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল। দেশি আদা (মূলত কেরালার) ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা বিক্রি হলেও দাম বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৩০ টাকায়। আর, চায়না আদা ১৬০ টাকা থেকে বেড়ে ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) শুক্রবারের তথ্য বলছে, এক মাসের ব্যবধানে মশলাজাতীয় এই পণ্য দুটির মধ্যে পেঁয়াজের দাম ৩৯ দশমিক ১৩ শতাংশ এবং আদার দাম ৪৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেড়েছে।
বাজারে পেঁয়াজ-আদার সঙ্গে বেড়েছে মসুর ডাল আর ডিমের দামও। কাঁচাবাজারের বিক্রেতাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ভারতীয় মসুর ডালের দাম না বাড়লেও দাম বেড়েছে দেশি মসুর ডালের। সপ্তাহের ব্যবধানে ১৩০ টাকা কেজির দেশি মসুর ডালের দাম ২০ টাকা বেড়ে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে, ভারতীয় মসুর ডাল (মোটা দানা) আগের মতোই ১০৫ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মসুর ডালের পাশাপাশি বাজারে সব ধরনের ডিমের দামও বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে খামারের মুরগির লাল ডিম ডজন প্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, হাঁসের ডিমের দামও ডজন প্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বাজারে ২০০ থেকে ২১০ টাকা ডজন হাঁসের ডিম এখন ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, কাঁচাবাজারে সবজিও চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। গত কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে সরবরাহ কমে বাজারে সবজির দাম কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে বলে বিক্রেতাদের ভাষ্য। বাজারে বেগুন প্রকারভেদে কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, বরবটি কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ১০০ টাকা, পটল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, কচুরমুখী ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া, ঝিঙা ৬০ টাকা, কাঁচামরিচ প্রকারভেদে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা ও পেঁপে ২৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। করলা কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি লাউ আকৃতিভেদ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, টমেটো কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ১৪০ টাকা, গাজর ১৪০ টাকা, দেশি শসা ১০০ টাকা ও হাইব্রিড শসা ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
এছাড়া, লেবুর হালি ১০ থেকে ২০ টাকা, ধনেপাতা ৪০০ টাকা কেজি, কাঁচা কলা হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা, চাল কুমড়া প্রতিটি ৫০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, মুলা ৬০ ও মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর, আলু বিক্রি হচ্ছে আগের মতোই ২০ থেকে ২৫ টাকা।
বাজারে লাল শাক আঁটিতে ১০ টাকা বেড়ে ২৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি আঁটি লাউ শাক ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কলমি শাক ১০ থেকে ১৫ টাকা, পুঁই শাক ৪০ টাকা ও ডাটা শাক ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বাজারে সোনালি কক মুরগি কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে ৩৭০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। তবে, সোনালি হাইব্রিড মুরগি আগের মতোই ৩২০ টাকা, লাল লেয়ার মুরগি ৩১০ টাকা, সাদা লেয়ার ৩০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকা ও দেশি মুরগি ৬৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।