আজ থেকে মার্কিন পাল্টা শুল্ক কার্যকর হচ্ছে, সব মিলিয়ে বাংলাদেশের পণ্যে শুল্ক দাঁড়াবে ৩৫ শতাংশের বেশি

CTG-B-nm24.jpg

শেষ দিনে চট্টগ্রাম বন্দরে চাপ। ফাইল ছবি

বিশেষ প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ব্যুরো ।।

আজ ৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিতে ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কার্যকর হচ্ছে । আজ সকাল ১০টার পর থেকে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জাহাজে তোলা পণ্যে পাল্টা শুল্কভার কার্যকর হচ্ছে। এ সময়ের আগ পর্যন্ত বন্দর থেকে জাহাজীকরণ পণ্যে ২০ শতাংশ নতুন শুল্ক এড়ানোর সুযোগ রয়েছে। এ সুবিধা নিতে কয়েকদিন ধরে পণ্য আগাম পৌঁছানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছে বিভিন্ন কারখানা। যুক্তরাষ্ট্র অভিমুখী পণ্যবোঝাই ট্রাক-লরিকে বন্দরে প্রবেশ এবং পণ্যছাড়ে বিশেষ অগ্রাধিকার দিচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এতে প্রতিদিন ৮০০ কনটেইনার পরিমাণ অতিরিক্ত পণ্য রপ্তানি হচ্ছে।

রপ্তানিকারকরা জানিয়েছেন, উৎপাদনের শেষ পর্যায়ে থাকা পণ্যের বড় একটি অংশ ১ আগস্টের আগেই বন্দর থেকে জাহাজীকরণ হয়েছে। কারণ, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগের ঘোষণা অনুযায়ী, বাড়তি শুল্কহার ৩৭ থেকে কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয়, যা ১ আগস্ট কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।

এদিকে গতকাল ৬ আগস্ট এক অনুষ্ঠানে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির আগে দরকষাকষির আরও সুযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তার আলাপ হয়েছে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ এবং মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে তৃতীয় দফা বৈঠক শেষে গত ৩১ জুলাই চুক্তির জন্য সমঝোতা হয়। এতে পাল্টা শুল্কভার কমে দাঁড়ায় ২০ শতাংশ। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের পণ্যে শুল্ক দাঁড়াবে ৩৫ শতাংশের বেশি। কেননা, আগে থেকে গড়ে ১৫ শতাংশের বেশি শুল্ক ছিল। তৈরি পোশাকে ছিল সাড়ে ১৬ শতাংশ।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশ্লেষক বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের সাবেক সদস্য মোস্তফা আবিদ খান গতকাল মিডিয়াকে বলেন, কাস্টমসে শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের চর্চা হচ্ছে, আমদানিকারক দেশের অভিমুখে রপ্তানিকারক দেশের বন্দর থেকে পণ্য ছাড় কাল থেকেই সময় গণনা হয়ে থাকে। তিনি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২ এপ্রিলের ঘোষণায় বাংলাদেশসহ প্রায় সব দেশের জন্য ১০ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপ করেন, যা ৫ এপ্রিল থেকে কার্যকর হয়। তখনও একইভাবে শুল্ক আদায় করা হয়।

মোস্তফা আবিদ মনে করেন, নতুন শুল্ক কাঠামোয় মার্কিন ন্যূনতম ২০ শতাংশ কাঁচামাল ব্যবহারে উৎপাদিত পণ্যে পাল্টা শুল্ক ছাড় না থাকার সুবিধা প্রতিযোগীদের তুলনায় বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখবে। কারণ, বাংলাদেশের পোশাক তুলানির্ভর। তুলা পুরোটাই আমদানিনির্ভর। যার বড় একটি অংশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করে এ সুযোগ কাজে লাগানো যায়।

জানতে চাইলে তৈরি পোশাকের নিট ক্যাটেগরির পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ৭ আগস্টের সময়সীমার মধ্যে বন্দরে পণ্য পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন রপ্তানিকারকদের কেউ কেউ। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাদের পণ্য যারা আগাম উৎপাদন করেছেন, তাদের অনেকই গত ১ আগস্টের আগেই জাহাজে তুলেছেন। এ কারণে সমাপ্ত জুলাই মাসে রপ্তানিতে ২৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে।

চট্টগ্রামের এশিয়ান-ডাফ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুস সালাম জানান, জুলাই মাসে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৩৯৬ কোটি মার্কিন ডলারের। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রগামী পোশাকের রপ্তানি মূল্য ছিল প্রায় ৮২ কোটি ডলার, যার ৬০ শতাংশই গেছে চট্টগ্রাম থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top