বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির নোয়াখালী থেকে ।।
নোয়াখালীতে প্রবাদ আছে, বাপে হাননা করোলা ভাজি হোলায় টোকায় গোস্ত ভাজি প্রসঙ্গ : ভাসানচর পরিদর্শনে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদল
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ থেকে রোহিঙ্গাদের একটি প্রতিনিধিদল শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। সেখানে তৈরি করা আবাসন ব্যবস্থা বসবাসের উপযোগী কিনা, তা দেখতে আসছে।
বাংলাদেশ সরকারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. শামসুদ্দোজা জানান, শনিবার ভোরে দুটি বাসে করে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলটি উখিয়ার ট্রানজিট ক্যাম্প থেকে চট্টগ্রামের পথে যাত্রা শুরু করেন। সেখান থেকে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর তত্ত্বাবধানে জলযানে করে তারা যাত্রা শুরু করবেন ভাসানচরে। প্রতিনিধি দলে ২ জন নারী সদস্যও রয়েছেন।
ভাসানচরে কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা গড়ে তোলা হয়েছে এবং দ্বীপটি বসবাসের জন্য কেমন, তা নিজেদের চোখে দেখবেন প্রতিনিধি দলটির রোহিঙ্গা নেতারা। কমিশনার শামসুদ্দোজা বলেন, প্রতিটি ক্যাম্প থেকে নির্বাচিত প্রায় ৪০ জন রোহিঙ্গা নেতা রয়েছেন প্রতিনিধি দলে।
আগামী ৮ সেপ্টেম্বর ভাসানচর থেকে তাদের কক্সবাজার শরণার্থী ক্যাম্পে ফিরে যাবে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন জানান, ভাসানচর সম্পর্কে রোহিঙ্গাদের ধারণা দিতে এই ‘গো অ্যান্ড সি’ ভিজিট। তিনি বলেন, সফরকারী রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলটি ওইসব রোহিঙ্গাদের সঙ্গেও কথা বলবেন এবং তাদের জীবনমান পর্যবেক্ষণ করবেন। ভাসানচর থেকে ফিরে কক্সবাজারের ক্যাম্পে আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের ভাসানচর আশ্রয়ন প্রকল্প সম্পর্কে ধারণা দেবেন প্রতিনিধি দলের রোহিঙ্গা নেতারা।
কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির ও তার বাইরে অবস্থান নিয়ে থাকা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে নিয়ে নানা সামাজিক সমস্যা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে তাদের একটি অংশকে হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার বিরান দ্বীপ ভাসান চরে স্থানান্তরের এই পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে মোটামুটি ১০ হাজার একর আয়তনের ওই চরে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করে এক লাখের বেশি মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা তিন শতাধিক রোহিঙ্গাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে ইতোমধ্যে ভাসানচরে নিয়ে আশ্রয় দিয়েছে সরকার।
সরকার বলছে, রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য সব ব্যবস্থাই ভাসান চড়ে গড়ে তোলা হচ্ছে। সেখানে গেলে কক্সবাজারের ঘনবসতিপূর্ণ ক্যাম্প জীবনের চেয়ে ভালো থাকবে তারা। তবে সাগরের ভেতরে জনমানবহীন ওই চরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার মধ্যে।