নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ফেনীতে আর্ন্তজাতিক দিবসে মানববন্ধন ও সমাবেশ

Feni-Nari-Nerhaton-Manobondon-Picture-1-25-11-22.jpg

ফেনী প্রতিনিধি ।।

নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আর্ন্তজাতিক দিবসে ফেনীতে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৫ নভেম্বর শুক্রবার সকালে শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কে মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সিনিয়র সাংবাদিক আরটিভির জেলা প্রতিনিধি এম এইচ আজাদ মালদার। গুম হওয়া ব্যক্তির স্বজনদের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’ ও ‘হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস নেটওয়ার্ক’র যৌথ আয়োজনে দিবসের মুল প্রবন্ধ পাঠ করেন গুমের শিকার হওয়া যুবদল নেতা মাবুবুর রহমান রিপনের মা রৌশন আরা বেগম।

মায়ের ডাক ও হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস নেটওয়ার্ক’র কো-অর্ডিনেটর, অধিকার ফেনীর ফোকাল পার্সন সাংবাদিক নাজমুল হক শামীমের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সাংবাদিক সৌরভ পাটোয়ারী, ইয়ুথ জার্নালিস্টস ফোরাম বাংলাদেশ’র ফেনী জেলা সভাপতি শাহজালাল ভূইয়া, বাংলাদেশ ফটোজানালিষ্ট এসোসিয়েন এর ফেনী জেলার সাবেক সভাপতি মোস্তফা কামাল বুলবুল,  সাংবাদিক সাহিদা সাম্য লিনা, আলাপন আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্রের যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম ফরায়েজী, মানবাধিকার সংগঠক ও শিক্ষক এমডি মোশাররফ, বিজয় নাথ, গুমের শিকার হওয়া যুবদল নেতা মাবুবুর রহমান রিপনের বড় ভাই মাহফুজুর রহমান, মেঝ ভাই মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।

মানববন্ধন ও সমাবেশে গুমের শিকার রিপনের চাচা ওহিদুর রহমান, সাংস্কৃতিক সংগঠক ও মানবাধিকার কর্মী কাজি ইকবাল আহমেদ পরান, ফেনী গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ আলী নসুসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ গ্রহণ করেন।

দিবসের মুল প্রবন্ধে বলা হয়, ১৯৬০ সালের ২৫ নভেম্বর ডোমেনিকান রিপাবলিকের তিনজন নারী রাজনৈতিক কর্মীকে সেই দেশের শাসক হত্যা করে। এর প্রতিবাদে ১৯৮১ সাল থেকে ২৫ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে নারী অধিকার কর্মীরা নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে এই দিনটিকে আন্তর্জাতিকদিবস হিসেবে পালন করে আসছেন।

২০০০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারী জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এ দিনটি পালনের জন্য রেজুলেশন গ্রহণ করে। আইনের সুষ্ঠুপ্রয়োগ না হওয়া, অকার্যকর বিচার ব্যবস্থা, পুলিশ প্রশাসনের দুর্নীতি, সামাজিক মুল্যবোধের অবক্ষয় এবং রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় অপরাধীরা ক্রমাগত দায়মুক্তি পেয়ে যাওয়ার কারনে বর্তমানে বাংলাদেশে নারীদেরপ্রতি সহিংসতা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। নারীরা পারিবারিক সহিংসতা, যৌতুক সহিংসতা, এসিড নিক্ষেপ,ধর্ষণ, যৌন হয়রানিসহ বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা এবং বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এছাড়া বাল্য বিবাহের কারণেঅনেক মেয়ে শিশুর মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। বাংলাদেশে নারীদের প্রতি সহিংসতার পাশাপাশি গুমের শিকারব্যক্তিদের পরিবারের নারী সদস্যদের ওপর বিভিন্ন ধরনের নিপীড়ন চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধের লক্ষ্যে মায়ের ডাক ও হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারর্স নেটওয়ার্কের সুপারিশ সমুহ হলো ; ১) গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের নারী সদস্যদের ওপর নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে, ২) বিচার বিভাগকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে ও নারীর প্রতি সহিংসতার মামলা গুলোর দ্রুত বিচারেরব্যবস্থা করতে হবে; ৩) নারীর প্রতি সহিংসতার মামলাগুলো রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করা যাবে না; ৪) প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক মাধ্যম, পাঠ্যবইসহ সর্বস্তরে দীর্ঘকালীন সচেতনতামুলক কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে; ৫). সহিংসতার শিকার নারী ও সাক্ষীর নিরাপত্তার জন্য আইন করে তার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top