সামাজিক মিডিয়ায় কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাটবাসীর প্রতি বিএনপি ফখরুল ইসলামের খোলা চিঠি

FI-K.jpg

নোয়াখালী মেইল ডেস্ক।।

কোম্পানীগঞ্জ তথা নোয়াখালী-৫ আসনের পরিচিত মুখ বিশিষ্ট সমাজসেবক বিএনপি নেতা ফখরুল ইসলামের বাড়ি ভাঙচুর এবং মওদুদপন্থীদের রোষানলের শিকার বিশিষ্ট শিল্পপতি এই ব্যবসায়ী নেতা কোম্পানীগঞ্জের রাজনীতিতে এখন আলোচনার তুঙ্গ। আলোচনা ও  সমালোচনা দুটোই চলছে চায়ের আড্ডা থেকে ড্রয়িং রুম পর্যন্ত। শুধু আলোচনাই নয়, বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। মাপ-সাফ পর্বতো রয়েছেই।

এসব কিছুর পরও নিজের অবস্থান ও আবেদন কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাটবাসী তথা নোয়াখালী-৫ আসনের জনগণের সামনে সামাজিক মিডিয়ার মাধ্যমে নিয়ে এসেছেন এই সমাজসেবক বিএনপি ও  নোয়াখালী-৫ আসনের জনগণের প্রিয় নেতা ফখরুল ইসলাম। সামাজিক মিডিয়ায় প্রদত্ত খোলা চিঠিটি হুবহু তুলে ধরলাম আমাদের পাঠকদের জন্য।

প্রিয় কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাটবাসী
আসসালামু আলাইকুম,
আমি আপনাদেরই ফখরুল ইসলাম বলছি। আপনারা সবই জানেন যে, আমি সেই নব্বই’র দশক থেকে আজ পর্যন্ত নিজের ব্যবসার পাশাপাশি একজন সমাজকর্মী হিসেবে এলাকায় নানাবিধ সামাজিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছি। এসব কর্মকাণ্ড করতে গিয়ে যেহেতু রাজনৈতিক আবহের প্রয়োজন হয়, তাই আমি দীর্ঘদিন থেকে আপনাদের সঙ্গে রাজনীতিতেও যুক্ত হয়েছি।
২০০১ সালে নোয়াখালী-৫ আসনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট প্রার্থী জনাব ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের পক্ষে নির্বাচন করতে গিয়ে উনার প্রতিপক্ষের দ্বারা আক্রান্ত হই এবং আমার গাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করে। সেদিন আমি ও আমার পরিবারের জীবন বিপন্ন করে নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাই। সেদিন বিএনপি নেতা জিয়াউল হক জিয়া ও জাহাঙ্গীর আলমসহ আমরা একই গাড়িতে হামলার শিকার হই।
২০০৮ সালেও উনার ভোটে সক্রিয় অংশগ্রহন করি এবং এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৯ সালের জানুযারীতে শত প্রতিকূলতার মাঝেও জোটের প্রার্থী হিসেবে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে পদপ্রার্থী হই। এছাড়া বগুড়াতে উপ-নির্বাচনে জনাব ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের পক্ষে সশরীরে গিয়ে শাররীক এবং আর্থিকভাবে জোরালো ভুমিকা রাখি। এরপরও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নিরবিচ্ছিন্নভাবে আমি জনাব ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের পাশাপাশি আপনাদের পাশে থেকেও কাজ করেছি।
অতঃপর ২০১৬ সালে আমি বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা, স্বাধীনতার ঘোষক, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের যোগ্য উত্তরসূরী এবং দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আলোকবর্তিকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করার পর থেকে কিছু কুচক্রী মহল রাজনৈতিক অস্বস্তিতে ভোগে এবং আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত শুরু করে। বিএনপির রাজনীতিতে ওরা সংখ্যায় নগন্য হলেও তারা জনাব ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে ভুলবুঝিয়ে এ বিষয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টায় লিপ্ত। জাতীয়তাবাদী দলের জন্য নোয়াখালী-৫ আসনে কাজ করাই চক্রটির গত্রদাহের কারণ হয়ে উঠে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে আমার কর্মকাণ্ডে বিচলিত হয়ে সেই চক্রান্তকারীরা তথাকথিত সংবাদ সম্মেলনের নামে আমার বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য রাখেন।
এদিকে গত ১৫ দিন থেকে আমি ব্যবসায়িক কাজে বিদেশে অবস্থানকালে সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বিষয়টি অবহিত হই। এমনকি ওই সভায় ‘আমাকে দলের কেউ না’ বলা ব্যক্তিরাই আমার বিরুদ্ধে “চরম ব্যবস্থা” নেয়ার অসাংগঠনিক সিদ্ধান্তও গ্রহণ করেন। কিন্তু তা গঠনতন্ত্রের কোন ধারায় পড়ে তা আমার বোধগম্য নয়। ওই বিদ্বেষমূলক বক্তব্য যে এতো হিংসাত্মক হবে তা একজন সমাজকর্মী ও রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমার মোটেও ধারণা ছিল না।
ওই ২৪ সেপ্টেম্বর শনিবারের উস্কানিমূলক বক্তব্যের মাত্র একদিন পরেই (গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে) কুচক্রীদের লেলিয়ে দেয়া দূর্বৃত্তরা আমার বসুরহাটস্থ বাসভবনে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। শুধু তাই নয় ভাংচুরের পাশাপাশি বাসা থেকে বিভিন্ন মূল্যবান সামগ্রীর সাথে বাসায় রক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্র এবং ব্যবসায়িক কাগজপত্রসহ ব্যক্তিগত ডকুমেন্টস লুট করে নিয়ে যায়। ওইসব হামলাকারীদের সাথে তথাকথিত সংবাদ সম্মেলনকারীদের যোগসাজেশ থাকায় আমার আর বুঝতে বাকি নেই এটি কে বা কাদের ইশারায় এমন ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটেছে।
কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হামলাকারী দূর্বৃত্তদেরকে রাজনৈতিক কর্মী আখ্যা দিতে ব্যস্ত। কিন্তু আমি মনে করি কোন সন্ত্রাসীর পরিচয় রাজনৈতিক কর্মী হতে পারে না। আমি এ হামলার বিষয়ে যে বা যারাই জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও কঠোর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
একজন সমাজকর্মী এবং রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে দলমত নির্বিশেষে সবার সাথে কাজ করে যাচ্ছি। আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, ব্যবসার বাহিরে যেটুকু সময় পেয়েছি এবং সামর্থ্য অনুযায়ী সামাজিক কর্মকাণ্ড অতীতের মতো বর্তমানেও চালাচ্ছি ভবিষ্যতেও চালিয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ। এতে কেউ ঈর্ষান্বিত হলে তা আমার ভাববার বিষয় নয়।
আমি আমার কর্মী সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের বলবো, সন্ত্রাসের জবাব সন্ত্রাস দিয়ে নয়, বরং জনগণের কল্যাণে সমাজসেবার ব্রত নিয়ে রাজনৈতিক ময়দানে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করুন। আজ যাদেরকে আপনার কাছে শত্রু মনে হচ্ছে আল্লাহ চাহে তো কাল তারাই হতে পারে আপনার রাজপথের সহযোদ্ধা। আল্লাহ সকলকে জানার ও সঠিকভাবে বুঝার তওফিক দান করুন। আমীন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top