লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি ।।
শনিবার সকালে জেলা সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শিশু রোগীর চাপ অনেক বেশি। ভর্তি রয়েছে ৪৫ জন রোগী। পৌষের কনকনে ঠান্ডা বাতাস আর শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় লক্ষ্মীপুরে সদর হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগী ভর্তির সংখ্যা বেড়েছে। বেশিরভাগ রোগী ছিলো ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত। এদের মধ্যে অধিকাংশই নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। শিশু ওয়ার্ডগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি বেডে তিন থেকে চার জন রোগী অবস্থান করছে। পাশাপাশি অনেক রোগী ও স্বজনরা মেঝেতে রেখেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এতে করে ভোগান্তির যেন শেষ নেই হাসপাতালে। রোগীর স্বজনরা জানান, ঠান্ডা বাড়ার সাথে সাথে শীতজনিত রোগের প্রকোপ বেড়ে গেছে। গেলো ৫-৬দিন ধরে হাসপাতালে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
গত ৬ দিনে শুধুমাত্র সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হয়েছেন প্রায় ৫৫০ জন রোগী। এদের মধ্যে ১ মাস বয়সী থেকে ৬ বছর বয়সী শিশুর সংখ্যাই বেশি। গত ১ জানুয়ারি থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত এসব শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এতে করে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সরা।
অপরদিকে বেড সংকট থাকায় অনেক রোগী হাসপাতালের মেঝেতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, রোগীকে সুস্থ করে তুলতে তারা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। ঠান্ডাজনিত রোগ থেকে শিশুদের রক্ষা করতে হলে অভিভাবকদের সচেতন থাকার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। এছাড়া জেলার রায়পুর, রামগঞ্জ, রামগতি ও কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতেও নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী প্রতিদিন ভর্তি হচ্ছে।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১ জানুয়ারি থেকে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত হাসপাতালে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত ৫৪১ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে বেড সংকট হওয়া নতুন রোগীদের বেডে দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। বেড শেয়ার করতে হয়েছে অধিকাংশ রোগীকে। আবার অনেককেই মেঝেতে বিছানা করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বেড শেয়ার করে চিকিৎসা নিতে গিয়ে অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে অনেক রোগীর স্বজনদের।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ার হোসেন নোয়াখালী মেইলক জানান, ঠান্ডার কারণে রোগীর চাপ বেড়েছে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত ঔষধ সরবরাহ রয়েছে। শিশুদের গরম কাপড় পরিদান করানো, অভিভাবকদের সচেতন ও ঠান্ডা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন এ চিকিৎসক।