বিশেষ প্রতিবেদক ।।
আর মাত্র কয়েকদিন পরেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নোয়াখালীর ভিআইপি উপজেলা খ্যাত কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদরে নির্বাচন। এবারের এক দলীয় উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগই আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বি। অন্য কোন দলের প্রার্থী না থাকায় সরকার দলের নেতাকর্মীদের আস্থা-অনাস্থার দৃষ্টি প্রখর হচ্ছে। কেই কাউকে বিশ্বাস করতে পারছেনা।
আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী তিনজন চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচনী এলাকার মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। এবার দলের সরাসরি প্রার্থী না থাকলেও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জার পছন্দের প্রার্থী হচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য ও বিশিষ্ট শিল্পপতি ব্যবসায়ী গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুল (প্রতীক-আনারস), দলের বর্তমান উপজেলা সেক্রেটারি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল (প্রতীক-দোয়াত কলম) এবং ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সদস্য শাহাদাত হোসেন (প্রতীক-টেলিফোন)।
এছাড়াও আরো একজন আছে আমেরিকা প্রবাসী ওমর আলী রাজ (প্রতীক-মোটর সাইকেল)।
কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের প্রায় বেশিরভাগ নেতাকর্মীই সরাসরি ভোট করছে মেয়রের পছন্দের প্রার্থী গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুলের পক্ষে। প্রচার প্রচারণায় পিপুল চৌধুরী অনেকটা এগিয়ে থাকলেও মিজানুর রহমান বাদল ও শাহাদাত হোসেনেরও প্রচারণা এখন সরব উপস্থিতি। তারাও দিন রাত প্রচার-প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
তবে মিজানুর রহমান বাদল আগেও উপজেলা চেয়ারম্যান থাকায় এবং পরবর্তীতে ব্যবসায়ী চেয়ারম্যানের ব্যর্থতায় ভোটারদের কাছে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন বাদল। আবার মেয়রের সরাসরি সমর্থনে বিশাল কর্মী বাহিনী নিয়ে অনেকটাই ভালো অবস্থানে আছেন পিপুল চৌধুরীও। এদিকে মন্ত্রী পরিবারের লোক হিসেবে এবং বিগত সময়ে মানুষের পাশে থাকায় বেশ আলোচনায় আছেন মন্ত্রীর ছোটভাই ও উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সদস্য শাহাদাত হোসেন। সরকার দলীয় প্রভাবশালী এই তিন নেতার লড়াই হবে ত্রিমুখী এমনটাই বলছেন এলাকার ভোটার ও জনগণ।
প্রচার প্রচারণা যার যেমনই হোক সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ভোটের হিসাব নিকাশ অনেকটাই পাল্টে যেতে পারে। আপনার চিন্তাই ঠিক হতে পারে।
প্রার্থীর বিরুদ্ধে আক্রমনাত্মক আচরণ, চরিত্র হনন, ভোটের মাঠে বেপোরোয়া আচরণ, অনিয়ন্ত্রিত প্রচার প্রচারণা, জামায়াত বিএনপির প্রতি বিরূপ আচরণ ভোটে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।
বিগত দশ বছরের অভিজ্ঞতায় এলাকার জনগণ চায়, যাকে সবসময় কাছে পাওয়া যাবে, সুখে-দুঃখে বিপদে আপদে সবসময় পাশে পাবে এমন মানুষকে নির্বাচিত করতে। কোম্পানীগঞ্জের মানুষ এমপিকে কাছে পায় না। তাই উপজেলা চেয়ারম্যানকে সার্বক্ষণিকভাবে কাছে পেতে চায়।
কিাশের গ্যাং ও মাদক কারবারীদের অত্যাচার এবং নিরাপদ ও নির্ভয় জীবনযাপনসহ সকল প্রকার সন্ত্রাসী চাঁদাবাজী বন্ধ রাখতে পারবে এমন একজনকে নির্বাচিত করতে চাই কোম্পানীগঞ্জবাসী।
কারণ কোম্পনীগঞ্জের মানুষ এখন এলাকার উন্নয়নের চেয়ে যানমালের নিরাপত্তা, শান্তি শৃঙ্খলা ও সামাজিক নিরাপত্তা বেশি প্রয়োজন মনে করে। তাই সামাজিক অস্থিরতা ও শান্তি শৃঙ্খলা নিয়ে জনগণ বেশি উৎবিগ্ন।
তাই আগামী কয়েকদিনে ভোটের মাঠে প্রার্থীদের কাছে এলাকার আম জনতার এই চাওয়াগুলোর নিশ্চয়তা নিশ্চত করতে পারলেই তিনিই বিজয়ের পথে এগিয়ে যাবেন।
আসলে ভোট মানুষের অন্তরে। তাই প্রচার প্রচারণায় নয়, মিষ্টি ভায়ায় ভোটারদের পাল্স বুঝে মানুষের অন্তরে দাগ কাটতে পারলেই জয় সম্ভব। জামাইকে কী তরকারীতে আপ্যায়ন করবেন এটা মনে মনে আছে। সেই মনের উপরই প্রার্থীকে দাগ কাটতে হবে।
সবমিলিয়ে এখনই বলা মুশকিল কে হচ্ছেন কোম্পানীগঞ্জের আগামী উপজেলা চেয়ারম্যান। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সবার প্রত্যাশা একটি সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যেমে সর্বাধিক জনপ্রিয় ব্যক্তি নির্বাচিত হোক।
উল্লেখ্য ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে আগামী ২৯ মে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হব।