কোম্পানীগঞ্জে বিএনপির রাজনীতিতে অস্থিরতা, নেতৃত্বের গুনগত পরিবর্তন চায় মাঠের নেতাকর্মীরা

BNP-Flag-Logo.jpg

কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি ।।

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে বিএনপির রাজনীতিতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। নেতৃত্বের গুনগত পরিবর্তন চায় মাঠের নেতাকর্মীরা। দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ঘুরে দাঁড়িয়েছে কোম্পানীগঞ্জের বিএনপি ও বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দলের ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সুবিধা আদায় করে নিচ্ছেন কয়েকজন নেতা।ইতোমধ্যে অনেকের বিরুদ্ধে দখল চাঁদাবাজীর আঙ্গুল তুলছেন মাঠের নেতারা।

দখল রাজনীতির যাতাকলে পড়ে ইতোমধ্যেই প্রাণ দিয়েছেন দলের উপজেলা যুগ্ম আহ্বায়ক ও চর এলাহী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মতিন তোতা। এই হত্যার ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ও মূল হত্যাকারীদের আড়ালে রাখতে রাতের আধারে বিএনপির দুঃসময়ের দলের আশির্বাদ হিসেবে দলের হাল ধরা সাহসী নেতা ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির অভিভাবক মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামের নামে গায়েবি পোস্টারিংও করানো হয়।

এ ঘটনায় গত ২ সেপ্টেম্বর সোমবার নিহত তোতার ছেলে ইসমাইল বাদি হয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ৩১জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে চরএলাহী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাককে প্রধান আসামি করা হয়েছে।

এই সময়ে দলের উপজেলা আহ্বায়ক নূরুল আলমের সাজাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটি পোস্ট তুমুল বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এমনকি দলকে দুই মেরুতে বিভক্ত করেছে।

আবার মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামের নামে গায়েবি পোস্টারিং এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে কোম্পানীগঞ্জের বিএনপি ও বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। প্রতিবাদ মিছিলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি, বসুর হাট পৌরসভা বিএনপি ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ও পৌরসভা যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ সব অঙ্গ সংগঠন অংশগ্রহণ করে।

জানা যায়, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এর মৃত্যুর পরথেকে কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট বিএনপির অভিভাবক হিসেবে মামলা হামলায় জর্জরিত বিএনপির নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ফখরুল ইসলাম। মূলত ফখরুল ইসলাম কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট বিএনপি সুসময়ে নয় বরং বিএনপির দুঃসময়ে তারেক রহমানের নির্দেশে অনেকটা দেবদূতের মতো বিএনপি ও বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের আশ্রয় হয়ে অভিভাবকের ভূমিকায় পালন করেছেন।

যে সময়ে আওয়ামী সরকারের রাজনৈতিক নির্যাতনের ভয়ে বিএনপির অনেক নেতাই মাঠের রাজনীতি থেকে দূরে ছিলেন সেই সময়ে প্রতিকুল পরিবেশে মামলা হামলার তোয়াক্কা না করেই কোম্পানীগঞ্জ তথা নোয়াখালী বিএনপির পাশে দাঁড়ান স্বশরীরে।

এরপর থেকে দীর্ঘদিন নোয়াখালী-৫ আসনের কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।

সমসাময়িক সময়ে দলের বিভাজনে আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলে আধিপত্য নিশ্চিত করতে বেশ কয়েকটা গ্রুপে বিভক্ত মেয়াদ উত্তীর্ণ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির দুই প্রভাবশালী সদস্য মওদুদ পত্নী হাসনা মওদুদ ও ফখরুল ইসলাম।

এছাড়াও নোয়াখালীর  বেগমগঞ্জ উপজেলা নিবাসী বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-পল্লীউন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ।

কোম্পানীগঞ্জের বিএনপিতে বর্তমানে বসুরহাট পৌরসভা বিএনপি ও উপজেলা যুবদল ছাড়া বিএনপি ও বিএনপির সকল অঙ্গসংগঠনের কোন কমিটিরই মেয়াদ নাই। উপজেলার প্রায় সকল কমিটিই উত্তীর্ণ। এই কারনে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ছাত্রদল উপজেলার ছাত্রদলের সকল কমিটি বিলুপ্ত করেছে।

ইদানিং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও কোম্পানীগঞ্জের মাঠের রাজনীতিতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির নেতৃত্ব পরিবর্তনে দাবি উঠেছে জোরালোভাবে।

অনেকেই সাবেক সভাপতি ও সেক্রেটারী সেলিম এবং জিয়াকেই আবারো দলের নেতৃত্বে চান। আবার অনেকে চান বর্তমান মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির আহ্বায়ক সিকদার ও সদস্য সচিব রিপনকে বাদ দিয়েই নতুন যে কোন নেতৃত্ব।

দলের এক নেতা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শর্তে জানান, গত দুইমাসে কোম্পানীগঞ্জ বিএনপি যা করেছে, আগামী নির্বাচনে এলাকার মানুষের কাছে ভোট চাওয়ার কোন রাস্তা রাখে নাই। মানুষ মুখের উপর বলবে ক্ষমতায় আসার আগেই যা দেখালেন বা করলেন তো ক্ষমতায় আসার পরে না জানি কী দেখাবেন।

তাই দলের বেশিরভাগ নেতাকর্মীই চান যত দ্রুত সম্ভব দলের নেতৃত্ব পরিবর্তন করে নতুন গ্রহণযোগ্য নেতৃত্বের হাতে দলকে তুলে দিতে। এমন কী উপজেলা আহ্বায়ক কমিটির বেশিরভাগ নেতৃত্বই বর্তমান মেয়াদ উত্তীর্ণ নেতূত্বের পরিবতূন চান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top