নোয়াখালী প্রতিনিধি ।।
নোয়াখালী জেলার কবিরাট উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার লাভলী ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় সমূহের শিক্ষকদের বিভিন্ন লিখিত অভিযোগ করেছে। অভিযোগকারীদের মতে তিনি বিভিন্ন স্কুল পরিদর্শনের সময় শিক্ষকদের সাথে নানান কটুক্তি, ব্যঙ্গাত্মক উক্তি, অশালীন ভাষা ব্যবহার করে থাকেন।
বেশ কয়েকজন প্রধান শিক্ষক তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট লাভলী ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এছাড়া উপজেলা ভিত্তিক বিভিন্ন প্রোগ্রামে সরকারি বরাদ্দ থাকার পরেও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট হারে চাঁদা সংগ্রহের অভিযোগ রয়েছে লাভলী ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে। শিক্ষকদের সাথে অসদাচরণ, বিভিন্ন ভাবে হয়রানি ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে এরই মধ্যে উপজেলার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকগণ সম্মিলিতভাবে লাভলী ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও উপ-পরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা চট্টগ্রাম বিভাগ এর নিকট একাধিক লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এসব অভিযোগের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে একজন জেলা সরকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কর্তৃক এই অভিযোগ গুলো তদন্ত করা হয় যাতে তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের তার পক্ষে সাফাই গাওয়ার জন্য বল প্রয়োগের অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, লাভলি ইয়াসমিন জেলা শিক্ষা অফিসার মনসুর আলী চৌধুরীর আস্থাভাজন ও অনুগত হিসেবে পরিচিত বলে সকল অভিযোগ বা অনিয়মকে তুড়ি মেরে ফেলা দেওয়ার হুমকি দিয়ে থাকেন বলে শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এলে গত ১৬ অক্টোবর লাভলী ইয়াসমিনকে নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলায় বদলি করা হয়।
শিক্ষকদের এসব অভিযোগের বিষয়ে লাভলী ইয়াসমিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগগুলোর মধ্যে অসদাচরণের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তবে আর্থিক অনিয়মের বিষয়ে তিনি জানান উপজেলাভিত্তিক বিভিন্ন প্রোগ্রামের সরকারি বরাদ্দ পর্যাপ্ত পরিমাণে না থাকায় প্রধান শিক্ষকদের সাথে সমন্বয় করে কিছু চাঁদা কালেকশন করে সেই প্রোগ্রামগুলোকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য অর্থ ব্যয় করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, উক্ত অর্থ বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকগণ সমন্বয় করে সংগ্রহ ও ব্যয় করেছেন। বিষয়টি তার একক বা ব্যক্তিগত নয় বলেও জানান। সরাসরি তার সম্পৃক্ততা নেই বলে জোর দাবি করেন।
তবে এভাবে চাঁদা সংগ্রহ করে কোন অনুষ্ঠানে ব্যয়ের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি অথবা আইনগত বৈধতা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।
বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষার অফিসার মনসুর আলী চৌধুরীর মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি লাভলী ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের দায়ের করা লিখিত অভিযোগ এবং তদন্ত পরবর্তী বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তাছাড়া প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর উক্ত শিক্ষা অফিসারকে বদলির করার বিষয়টি তিনি অবগত আছেন বলে জানান।