হরতাল-অবরোধ কার বিরুদ্ধে সরকার জনগণের! ধাক্কা লাগছে দ্রব্যমূল্যে, তিনদিনে পুড়েছে ৩৪ যানবাহন

p-haspital.jpg

মিরাজ মৃত্তিক ।।

বিএনপি জামায়াতের হরতাল-অবরোধ কার বিরুদ্ধে, সরকার জনগণের! এমনটা বলছেন সমাজের সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষ বলছে হরতাল-অবরোধ যদি ক্ষমতা পরিবর্তনের মাধ্যম হয় তবে বিএনপি জামায়াত হরতাল-অবরোধ করুক। কিন্তু সেটা কতদিন? ২০১৫ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খলেদা জিয়ার প্রদত্ত অবরোধ আজও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহার হয়নি। তারমধ্যে গত ২৮ অক্টোবর আবারো হরতাল-অবরোধের ডাক দিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল। ইতোমধ্যে দুইদফায় ৫দিন  ঘোষণা হয়েছে।

এভাবে হরতাল-অবরোধ ডেকে সরকারকে কোনভাব আটকাতে পারছে না বিএনপি। বরং মাঝে মাঝে টোকাই ভাড়া করে টাকার বিনিময়ে গাড়ি পুড়িয়ে জনমনে আতংক সৃষ্টি করছে। আর হরতাল-অবরোধের ধাক্কা লাগছে দ্রব্যমূল্যে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ জনগণ।

অবরোধ দ্রব্যমূল্য আরো বাড়াচ্ছে। জনদূর্ভোগ চরমে নিচ্ছে। দেশের আমজনতা চরম অর্থনৈতিক সংকটের পথে এগিয়ে চলছে। ‘এই রকম রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে মুক্তি চায় বাংলাদেশের জনগণ।

রাজনৈতিক দলগুলো রাজনীতির নামে সাধারণ মানুষের কষ্ট বাড়ানোর কর্মসূচি দেখতে চাই না। নতুন প্রজন্ম ক্ষমতায় আসবার আর থাকবার রাজনৈতিক কালো কর্মসূচি চায় না। তারা চায় আমূল পরির্বতন আসুক দেশ-মানুষ-সমাজ-সংস্কৃতি এবং অর্থনীতির।

জনগণ দেখেছি- যখন যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে, তখন সে সরকার জনতার কথা ভুলে কেবল নিজেদের দলীয় নেতাকর্মী-পুলিশ-প্রশাসনের রাঘব- বোয়ালদেরকে কোটি কোটি টাকা কামাই করার রাস্তা তৈরি করে দিয়েছে। জনগণের কথা ভাবেনি। সবসময় গণিরোধী কর্মসূচি দিয়ে জনদূর্ভোগ বাড়িয়েছে।

অবরোধ: তিনদিনে পুড়েছে ৩৪ যানবাহন
বিএনপির ডাকা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মোট ৩৪টি যানবাহনে আগুন দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের দেয়া তথ্য মতে, সর্বশেষ ১৮ ঘণ্টায় রাজধানীসহ সারা দেশে আটটি যানবাহনে আগুন দেয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এসব যানবাহনে আগুন দেয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানায়, ঢাকা সিটিতে ১২টি, ঢাকা বিভাগে (গাজীপুর, কালিয়াকৈর, সাভার, নারায়ণগঞ্জ) ৭টি, চট্টগ্রাম বিভাগে (সীতাকুণ্ড, কর্ণফুলি, রাঙ্গুনিয়া, ফেনী, চাঁদপুর, বায়েজিদ) ৮টি, রাজশাহী বিভাগে (বগুড়া, রায়গঞ্জ) ৪টি, রংপুর বিভাগে (পার্বতিপুর) ১টি, বরিশাল বিভাগে (চরফ্যাশন) ১টি, ময়মনসিংহ বিভাগ (কেন্দুয়া) ১টি ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১৮টি বাস, ৪টি কাভার্ড ভ্যান, ৫টি ট্রাক, ১টি প্রাইভেটকার, ৩টি মোটরসাইকেল, ২টি বাণিজ্যিক পণ্যের শো রুম, ১টি পুলিশ বক্স পুড়ে যায়।

পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করা দেখা যায়, দিনের বেলা থেকে রাতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বেশি ঘটেছে। এই ৩ দিনে মোট ৩৪টি আগুনের মধ্যে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৫টা পর্যন্ত ১৯টি আগুনের ঘটনা ঘটে এবং বাকি ১৫টি দিনের অন্যান্য সময় সংঘটিত হয়েছে।

পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, দিনের বেলা সংঘটিত আগুনের মধ্যে দিনের শুরুতে অগ্নিকাণ্ড বেশি সংঘটিত হয়েছে। দিনের ১৫টি আগুনের ঘটনার মধ্যে সকাল ৬ থেকে সকাল ১১ টার মধ্যে ৯টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

এদিকে ১ নভেম্বর রাত ১২টা থেকে ২ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৮টি আগুনের সংবাদ পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এর মধ্যে ঢাকা সিটিতে ৪টি, ময়মনসিংহ বিভাগে (কেন্দুয়া) ১টি, চট্টগ্রাম বিভাগে (রাঙ্গুনিয়া, ফেনী) ২টি, ঢাকা বিভাগে (নারায়ণগঞ্জ) ১টি আগুনের ঘটনা ঘটে। এঘটনায় ৫টি বাস, ১টি প্রাইভেটকার, ১টি ট্রাক পুড়ে যায়।

অপরদিকে ২৮ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত (৫ দিন) উচ্ছৃঙ্খল জনতা কর্তৃক মোট ৮২টি আগুনের সংবাদ পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এরমধ্যে ২৮ অক্টোবর ২৯টি, ২৯ অক্টোবর ১৯টি, ৩০ অক্টোবর ১টি, ৩১ অক্টোবর ১১টি, ১ নভেম্বর ১৪টি, ২ নভেম্বর ৮টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top