আসম রবের এমন নির্জলা মিথ্যাচারে স্বাধীনতা বিরোধীদের মুখে তৃপ্তির হাসি তুলে দেন

Pir-Habib.jpg

পীর হাবিবুর রহমান

আসম রব ২৬ মার্চ কেরানিগঞ্জ থেকে মেজর জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষনা শুনেন! আর নিউক্লিয়াস ছাড়া কোন বাঙ্গালি স্বাধীনতার কথা চিন্তা করেননি বলেছেন! বাহ! ইতিহাসের সন্তানরা নিজেদের বড় করতে গিয়ে ইতিহাসই বিকৃত করেননা, পিতার কথা স্বীকার না করে নিজেরাও দেউলিয়া হন। এমন নির্জলা মিথ্যাচারে স্বাধীনতা বিরোধীদের মুখে তৃপ্তির হাসি তুলে দেন।

৬২ সালেই আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধু তার স্বাধীন বাংলাদেশের লড়াইয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত নেহেরুকে চিঠি দেন সমর্থন চেয়ে। আগরতলা যান, ৬দফা দেন এবং রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিব বা আগরতলা মামলার প্রধান আসামী হন। তিনিই তার স্বাধীনতার স্বপ্নে, নেতৃত্বে, সংগ্রামে, দল কে শক্তিশালী করেন। ৭০’র নির্বাচনে জয়লাভ করে একক নেতায় পরিনত হন। বঙ্গবন্ধুই আমাদের মহান স্বাধীনতার স্বপ্ন দ্রষ্টা তিনিই নেতা ও মহানায়ক। ছাত্রলীগ ষাটের দশকে স্বাধীকার স্বাধীনতা সংগ্রামে অনন্য স্বাধারণ ভূমিকা রেখেছে। ছাত্রলীগ বা ডাকসুর নেতৃত্বে থাকার সুবাদে অনেকে নায়ক হয়েছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ছায়া থেকে সরে গিয়ে একেকজন রাজনীতিতে কতটা এতিম দেউলিয়া সে হিসেবও রাখেননা। আসলে তারা সবাই ছিলেন বঙ্গবন্ধুর কর্মি। বঙ্গবন্ধুর ইচ্ছে বা নির্দেশের বাইরে তাদের কিছুই করার ছিলোনা। এমনকি বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষনা ও ভারতে গিয়ে আশ্রয় এবং ইন্দিরা গান্ধীর সমর্থন সবই ছিলো বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পনায়। মুজিবনগর সরকার, মুজিববাহিনী সব।

সেদিন সিরাজুল আলম খান থেকে আসম রবরা অনেক কিছুই যে জানতেন না এটাই তারা জানেন না। তাদের আমিত্ব তাদের বীরত্বকেও ধুলোয় মিশিয়ে দেয়। চিত্ত রন্জন সুতারের ঠিকানাইতো বঙ্গবন্ধু মার্চ একাত্তরে জানান যা তারা আগে কেউ জানতেন না। শশাঙ্ক শেখর ব্যানার্জি থেকে ফনীন্দ্রনাথ ব্যানার্জি যিনি নাথ বাবু নামে পরিচিত ছিলেন, ইন্দিরার দুই প্রতিনিধির সাথে বঙ্গবন্ধুই সকল পরিকল্পনা চুড়ান্ত করেন।

ছাত্রলীগের সিরাজুল আলম খানের অনুসারীরা ৭০’র নির্বাচনে অংশগ্রহনের বিরোধীতা করে স্বাধীন সমাজতান্ত্রীক বাংলাদেশের প্রস্তাব এনে সংখ্যাগরিষ্ট হলেও তা কার্যকর করতে পারেননি। মুলতবী সভা আর হয়নি। তারা নির্বাচন নয় সশস্ত্র স্বাধীনতার পথ চেয়েছিলেন।বঙ্গবন্ধুর নির্বাচনই স্বাধীনতার সংগ্রামকে মুক্তিযুদ্ধে টেনে নেয়। তার অনুসারী তার নির্দেশ পালনকারী সেদিনের ছাত্রনেতারা যখন বড় বড় কথা বলেন তখন বামুন লাগে। নিজেরাই নিজেদের ছোট করেন। আর দুনিয়াজুড়ে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষনা, আটক,ও গণহত্যার খবর প্রকাশিত হয়।

মেজর জিয়া অনেকের মতোন ২৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষনা পাঠ করেন। বেলা ২টায় ভুল করে সন্ধা ৭টায় বঙ্গবন্ধুর পক্ষে।২৬মার্চ বেলা ১২টায় করেছিলেন আওয়ামীলীগ নেতা এম এ হান্নান। অথচ আসম রব ২৬ মার্চ কেরানিগঞ্জ বসে জিয়ার ঘোষনা শুনেন! তাজ্জব লাগে।

বঙ্গবন্ধু কোন হঠকারি পথ নেননি। পাকিস্তানী সামরিক শক্তির চাপের কাছেও নতি স্বীকার করেননি,দলের অতিবিপ্লবী তরুনদের হঠকারিতাও প্রশ্রয় দেননি। তিনি যতটুকু চেয়েছেন ততটুকুই করতে দিয়েছেন।জাতির নেতা হিসেবে যা বলতে পারেননি তা তরুন নেতাদের দিয়ে বলিয়েছেন, করিয়েছেন। তার বাইরে যাবার সামর্থ কারও ছিলোনা। তিনিই সশস্ত্র স্বাধীনতার প্রস্তুতিও নেন লন্ডন সফরে গিয়ে। ব্যবস্হা করেন ট্রেনিংয়ের।

৭০ নির্বাচন আসায় সে চ্যালেন্জ নেন। ট্রেনিং স্হগিত হয়। তিনি জানতেন জনগন তার, তিনি ইয়াহিয়ার অধীনে এক ব্যক্তির এক ভোটের নির্বাচনে জিতবেন। তিনি নেতা। তার দূরদর্শীতা ও সিদ্ধান্ত অতুলনীয়। আর তিনি দুর্ধর্ষ এক সাহসী নেতা, জাতি তাকেই বিশ্বাস করেছিলো।

বঙ্গবন্ধুর সহচর চার জাতীয় নেতাসহ আওয়ামী লীগের অনেক নেতা, ষাটের ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ এবং শেখ ফজলুল হক মনি, সিরাজুল আলম খান, আব্দুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ, মুজিব বাহিনীর এই চার প্রধানের সাথে স্বাধীন বাংলা ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের নেতা নুরে আলম সিদ্দিকী, শাজাহান সিরাজ, আ স ম আব্দুর রব, আব্দুল কুদ্দুস মাখনদের অবদান তো অবিস্নরনীয়। তাদের কেউ কেউ যখন ইতিহাসকে আমিত্বের দম্ভে বিকৃত করেন তখন নতুন প্রজন্ম যাবে কই? সূত্র: পীর হাববিিবুর রহমানের ফেইজবুক।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top