পরিবার পরিকল্পনা মিডিয়া ফেলোশিপ এবার পেলেন সুবর্ণচরের সন্তান জাহিদ

Jahid-noakhalimail.jpg

জাহিদুর রহমান (ছবি ফেইসবুক)

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উদযাপন ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মিডিয়া ফেলোশিপ প্রদান অনুষ্ঠানে এবার পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মিডিয়া ফেলোশিপ পেয়েছেন নোয়াখালীর সূবর্ণচরের সন্তান দৈনিক সমকালের সহ-সম্পাদক জাহিদুর রহমান।

১১ জুলাই শনিবার অধিদফতরের আইইএম ইউনিটের এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে জাহিদসহ নির্বাচিত ৪০ জন গণমাধ্যমকর্মীকে প্রতীকী ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

এ বছর পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের যুগ্ম সচিব ও পরিচালক (আইইএম) ড. আশরাফুন্নেছা নির্বাচিত সাংবাদিকদের তালিকা প্রকাশ করেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের আইইএম ইউনিটের আইইসি অপারেশনাল প্ল্যানের ২০২০ সালের পরিবার পরিকল্পনা, মা, শিশু ও নবজাতক স্বাস্থ্য এবং জনসংখ্যা ইস্যু নিয়ে লেখালেখির জন্য সাংবাদিকদের মধ্যে মিডিয়া ফেলোশিপ (৩ মাসের) প্রদান করা হলো। নির্বাচিত প্রত্যেকে নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা করে পাবেন।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নূরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান।

অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ পরিবার পরিকল্পনা কর্মী ও শ্রেষ্ঠ সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেয়া হয়। ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে নির্বাচিত সাংবাদিকদের নাম ঘোষণা করা হয়

এরআগে ২০১৪ সালে জাহিদুর রহমান ইউনিসেফ মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড প্রিন্ট ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কার পান। ২০১৮ সালে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির দুর্নীতি বিরোধী অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার পান তিনি।

এ ছাড়া একশন এইড বাংলাদেশের গ্রামীণ নারী উদ্যোক্তা; ব্যবসা ও মানবাধিকার; আইন ও শালিশ কেন্দ্রের জেন্ডার ইস্যু; বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও অ্যান্ড কমিউনিকেশন (বিএনএনআরসি) থেকে সংবেদনশীল সাংবাদিকতায় ফেলোশিপ পেয়েছেন। তিনি ২০০৯ সালে ফিচার প্রতিযোগিতায় ‘আলোকিত ফেনী’ পুরস্কার এবং ২০০৪ সালে ম্যাসলাইন মিডিয়া সেন্টার (এমএমসি) প্রবর্তিত ‘প্রাকৃতজন’ পুরস্কার লাভ করেন।

২০১৯ সালে কিশোর-কিশোরীদের বয়ঃসন্ধিকালীন সমস্যা নিয়ে নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের অর্থায়নে রেড অরেঞ্জ মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশনের ঋতু প্রকল্প থেকে গ্রহন করেন ফেলোশিপ এবং অ্যাওয়ার্ড। সংবাদের সামাজিক প্রভাবের কারণে নরওয়ের রাষ্ট্রদূতের কাছ থেকে ইয়ুথ স্কুল ফর সোশ্যাল এন্টারপ্রেনারস (ওয়াইএসএসই) প্রবর্তিত পুরস্কার লাভ করেন। খাদ্য অধিকারবিষয়ক রিপোর্টিংয়ের জন্য ২০১৮ সালে জাহিদকে ফেলোশিপ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে ‘খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক-(খানি)’। চলতি বছরে তিনি একশন এইড বাংলাদেশে প্রবর্তিত ‘ইয়ং জার্নালিস্ট ফেলোশিপ’ এবং ‘ইয়ং জার্নালিস্ট অ্যাওয়ার্ড’ পুরস্কার অর্জন করেন। ২০১৭ সালে রিয়্যাল এস্টেট বিষয়ক বিশেষ প্রতিবেদনের জন্য ‘আবাসন নিউজ’ বর্ষসেরা সাংবাদিকতা পুরস্কার অর্জন করেন। পাশাপাশি দৈনিক সমকালের দুইবার ‘সেরা রিপোর্টারে’র পুরস্কার পান জাহিদ।

জাহিদুর রহমান ১৯৮৬ সালের ২৮ নভেম্বর নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার পূর্বচরবাটা গ্রামে ঐতিহ্যবাহী মাওলানা হাবিবুর রহমানের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। এটিএম লূৎফুর রহমান ও আনোয়ারা বেগম দম্পতির ৭ সন্তানের মধ্যে তিনি পঞ্চম। তার বাবা ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষকতা করেন। তিনি অবসর নিলেও এখনও এলাকায় শিক্ষাসহ সমাজ সেবামূলক নানা কাজে যুক্ত রয়েছেন। জাহিদের দাদা মরহুম মাওলানা হাবিবুর রহমান নোয়াখালীর দক্ষিণের প্রখ্যাত আলেম ছিলেন। তিনিও এলাকার উপকূলীয় এলাকার শিক্ষা বিস্তারে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন। জাহিদুর রহমানের চাচা সাবেক সচিব এটিএম আতাউর রহমান গ্রামে স্কুল, কলেজ, পাঠাগার, ক্লিনিক, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ নানা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাদের পুরো পরিবার মানুষকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার প্রয়াস চালাচ্ছেন।

জাহিদ বেগমগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল এ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি, নোয়াখালী পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এইচএসসি ও স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

জাহিদুর রহমান নোয়াখালীর স্থানীয় ‘লোকসংবাদ’ পত্রিকায় ২০০২ সালে ‘তৃণমূল সংবাদকর্মী’ হিসেবে যোগদানের মধ্য দিয়ে সাংবাদিকতা শুরু করেন। কাজের ধারাবাহিকতায় ২০০৫ থেকে ২০০৬ সালে ‘চলমান নোয়াখালী’তে স্টাফ রিপোর্টার এবং ২০০৬ থেকে ২০০৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত দৈনিক ‘জাতীয় নিশানে’ বার্তা সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এরপর জাহিদ ২০০৯ সালে ঢাকায় চলে যান। তিনি ২০০৯ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত নিউজ এজেন্সি ‘ফোকাস বাংলা’য় সহ-সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। ২০১০ সালে তিনি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘শীর্ষ নিউজ ডটকমে’ একই পদে যোগদান করেন। এরপর তিনি ২০১১ সালের শেষের দিকে ‘দৈনিক স্টক বাংলাদেশ’, ‘স্বাধীন মত’ ও ‘বাংলামেইল’-এ সহ-সম্পাদক পদে কাজ করেন। সর্বশেষ তিনি ২০১৩ সালের মার্চে সহ-সম্পাদক পদে ‘সমকালে’ যোগদান করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top