বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের উচিত গণরেশনিং ব্যবস্থা চালু করা

Rashon.jpg

নোয়াখালী মেইল ডেস্ক রির্পোট ।।

দেশের জনগণের মৌলিক চাহিদা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য। এই সুবিধা গুলো দেশের নাগরিকদের সরকারকে যোগান দিতেই হবে। এটা নাগরিকদের অধিকার। দেশের নাগরিকদের এই অধিকারগুলো নিশ্চিত করা যে কোন গণতান্ত্রিক সরকারের মৌলিক দায়িত্ব।

জনগণের গণতান্ত্রিক এই অধিকারগুলো নিশ্চিত করতে দেশ স্বাধীনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু দেশব্যাপী ন্যায্যমূল্যের দোকান চালু করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর দেশবিরোধী সামরিক সরকারগুলো নিজের ক্ষমতা প্রয়োজনে লুটপাটের রাজনৈতিক ব্যবস্থার মদদ দিয়ে নিজেদের ক্ষমতা নিশ্চিত করে।

সামরিক জান্তা জিয়াকে বলতে শুনেছি সব সম্ভবের দেশ বাংলাদেশ। মানি ইজ নো প্রবলেম। ছাত্রনেতাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে জিয়া। স্বাধীন বাংলাদেশ বিরোধী নেতাদের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করছে। আর অগণিত স্বাধীনতার স্বপক্ষের নেতৃত্ব ও সামরিক কর্মকর্তাদের হত্যা করেছে। মুলত জিয়া দেশের প্রগতির চাকাকে পিছনের দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছে।

এই ধারায় দেশ চলেছে লম্বা সময়। জিয়া-এরশাদ-খালেদা একই পথের চালিকাশক্তি ছিলো।
এই ধারার লাগাম টানে ১/১১র অস্থায়ী সরকার। কিন্তু এক সময় তারা চলমান ধারায় গা ভাসিয়ে দিয়েছে। ফলে অনেকটা জনরোষের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়। তবে কিছু ভালো কাজও করে দিয়ে গেছেন।

এরপর ক্ষমতায় আসেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। গত একযুগে শেখ হাসিনা দেশেকে একশো বছর এগিয়ে নিয়ে গেছেন। বিশ্বে এখন আলোচনায় শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ। কিন্তু বাজার নিয়ন্ত্রণে অনেকটাই ব্যর্থ শেখ হাসিনার সরকার। মূলতঃ বাজার নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে আমদানিকারক ও উৎপাদনকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।

বর্তমানে দেশের আমদানি ও উৎপাদন দুটোই এখন কর্পোরেট গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে। এমনকি দেশের কৃষিখাতও নিয়ন্ত্রণ করছে এই কর্পোরেট গ্রুপগুলো। চাল ডাল হলুদ মরিচ সবাই এখন কর্পোরেট গ্রুপের প্যাকেটে আপনাকে কিনতে হচ্ছে। ফলে নিত্যপণ্যের দাম নির্ভর করে কর্পোরেট গ্রুপের উপর। এখানে চলমান পদ্ধতিতে সরকারের কিছুই করার থাকেনা। এমনকি রাজনৈতিক দল বা নেতাদেরও কিছুই করার সুযোগ নাই। কারন রাজনৈতিক নেতাদের দল ও পেট চলে এসব কর্পোরেট গ্রুপের আর্থিক সহযোগিতায়।
তবে সরকার পারে, যদি সরকার আন্তরিক ও জনবান্ধব চিন্তা করে। বাজার নিয়ন্ত্রণ ও দ্রব্যমূল্যের দাম ক্রমাগত বৃদ্ধির লাগাম টানতে। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারকেও প্রতিযোগিতায় নাম লেখাতে হবে। এটা সব সরকারের পক্ষেই সম্ভব নয়। শুধু মাত্র শেখ হাসিনার সরকারের দ্বারাই সম্ভব। শীর ও মেরুদন্ড শক্ত ও দৃঢ়চেতা মানসিক শক্তি ছাড়া এতটা সাহস সকলের হবে না। চালু করতে হবে গণরেশনিং ব্যবস্থা।

এতে সরকারের প্রতিপক্ষ হয়ে বড় বাধা হবে কর্পোরেট গ্রুপের মালিকরা। আর কর্পোরেট মালিকরা সরকারের বিরুদ্ধে গেলে দেশের রাজনীতিতে অস্থিরতা বাড়বে নিশ্চিত। তবে গণরেশনিং ব্যবস্থা চালু হলে জনগণ সরকারের পাশে দাঁড়াবে। ভোটের রাজনীতিতে টিকে যাবে শেখ হাসিনার সরকার।

প্রিয় দেশরত্ন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আপনাকে বলছি, দেশের মানুষ আজ কর্পোরেট গ্রুপ আর আমদানিকারকদের সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি। আল্লার পরে আপনি ছাড়া তাদের কাছে অন্য কোনো অপশন নেই।

সাধারণ মানুষ আজ বড় অসহায়। আপনি জাতির পিতার কন্যা। দেশের মানুষ আপনাকে ধারণ করেছে। মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে আপনার হাত ধরেই বাংলাদেশ দাঁড়াবে, এগিয়ে যাবে।

কিন্তু কর্পোরেট গ্রুপের অত্যাচারে দেশের কৃষক ও সাধারণ মানুষ যখন সরকারকে দোষে এবং রাস্তায় গাল-মন্দ করে তখন স্বাধীনতার চেতনা লালনকারী হিসেবে আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়।

আমরা ভেবে পায় না দেশের এতো দৃশ্যমান উন্নয়নের পরও কেন বিদ্যুৎ, গ্যস ও ওয়াসার অ-ব্যবস্থা চলবে। প্রচন্ড তাপদাহ চলছে। এরমধ্যে কোনো এত বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক জীবন নাকাল হচ্ছে। এসব জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠানে কি সাবোটাইজ নাকি অব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখা দরকার।

প্রত্যেকটা সেক্টরে যদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কে দেখতে হয় তাহলে এতো বড় মন্ত্রীর বহর কি কাজ করে। বিভিন্ন সংস্থা গুলোতে পলিটিক্যাল কোটায় এমন কিছু লোক নিয়োগ দিয়েছেন, তারা শুধু বছরের পর বছর কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে, কাজের কাজ কিছু’ই হচ্ছে না।
দিনের শেষে বদনাম আওয়ামী লীগেরই হচ্ছে, সরকার কি এসব অনুধাবন করতে পারছেন না ?

সব শেষে বলবো জরুরিভাবে গণরেশনিং ব্যবস্থা চালু করুন। সরকারের সকল ভূর্তুকী গণরেশনিং এ নিয়ে আসেন। সরকার আমদানি করবে আবার কৃষক থেকে সরাসরি পন্য কিনে ভূর্তুকী দিয়েই বিক্রি করবে। জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুকূলে দেশের যেকোন নাগরিক গণরেশনিং সুবিধা পাবে। বিষয়টি বিবেচনায় আনতে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করতে চাই ?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top