পাগলা মসজিদের দানবাক্সে ৯৮ দিনে মিলেছে ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা

Pagla-masjid.jpg

ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে রেকর্ড পরিমাণ টাকা।

মেইল অনলাইন ডেস্ক ।।

প্রায় পাঁচশত বছর পূর্বে বাংলার বারো ভুঁইয়া অন্যতম ঈশা খাঁর আমলে দেওয়ান জিলকদর খান ওরফে জিল কদর পাগলা নামক একজন ব্যক্তি নদীর তীরে বসে নামাজ পড়তেন। পরবর্তীতে ওই স্থানটিতে মসজিদটি নির্মিত হয়। জিল কদর পাগলার নামানুসারেই মসজিদটি ‘পাগলা মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি পায়। এ মসজিদে মানত করলে মানুষের মনোবাসনা পূর্ণ হয় বলে জনশ্রুতি রয়েছে। তাই সকল ধর্মের মানুষ সেখানে দান করে থাকেন বলে জানা গেছে।

প্রতি তিন মাস পরপর দানবাক্স খোলা হলেও এবার ৯৮ দিন পর দান বাক্স খোলা হয়। দান বাক্সগুলো থেকে রেকর্ড ২০ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। মাত্র ৯৮ দিনের মাথায় কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলেছে সর্বোচ্চ ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা। এছাড়া বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গেছে।

শনিবার (৭ জানুয়ারি) সারাদিন গণনার পর সন্ধ্যায় দানের টাকার এই হিসাব পাওয়া যায় বলে জানা গেছে। এর আগে সর্বশেষ গত বছরের ১ অক্টোবর পাগলা মসজিদের দানবাক্স খোলার সময় ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার ৮৮২ টাকা পাওয়া গিয়েছিল।

জানা গেছে, সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণের উপস্থিতিতে পাগলা মসজিদের ৮টি দান বাক্স খোলা হয়। দান বাক্সের টাকাগুলো ২০টি বস্তায় ভরে সারাদিন গণনা চলে। রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারী, মসজিদ মাদরাসার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও মসজিদ মাদরাসার ছাত্ররা গণনায় অংশ নেন।

কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট এটিএম ফরহাদ চৌধুরীসহ প্রশাসন ও মসজিদ কমিটির কর্মকর্তারা টাকা গণনার কাজ তদারকি করেন। পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালামসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা গণনার কাজ পরিদর্শন করেন।

পাগলা মসজিদ কমিটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শওকত উদ্দীন ভূঞা বলেন, পাগলা মসজিদের দান সিন্দুক খুলে পাওয়া টাকাগুলো রূপালী ব্যাংকে জমা করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, পাগলা মসজিদের বিপুল পরিমাণের টাকা পাগলা মসজিদ এবং এই মসজিদ কমপ্লেক্সের অন্তর্ভুক্ত মাদ্রাসা, এতিমখানা ও গোরস্থানের ব্যয় নির্বাহ করাসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানায় সহায়তার পাশাপাশি গরিব ছাত্র ও দুঃস্থদের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক কাজেও টাকা প্রদান করা হয়ে আসছে বলে তিনি জানান।

জানা যায়, জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে হারুয়া এলাকায় অবস্থিত পাগলা মসজিদাট প্রায় চার একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত। সুউচ্চ মিনার ও তিন গম্বুজ বিশিষ্ট তিনতলা বিশাল পাগলা মসজিদ কিশোরগঞ্জে অন্যতম ঐতিহাসিক স্থাপনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top