নগর প্রতিবেদক।।
নারী-শিশু নির্যাতনকারী ও ধর্ষকের কোন রাজনৈতিক, সামাজিক কিংবা পারিবারিক পরিচয় নেই। পরিবার ও সমাজ থেকে ধর্ষণকারীদের বর্জন করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে চিরতরে বহিষ্কার করতে হবে। সিলেট এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের ঘটনায় নির্যাতনকারী ও ধর্ষকদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের নামে মামলা হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন সম্পূর্ণরূপে রোধ করতে সরকার বদ্ধপরিকর। দ্রুত বিচারের মাধ্যমে এদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। নারী শিশু নির্যাতনকারী ও ধর্ষকদের শাস্তি পেতেই হবে। সরকারের পাশাপাশি সকলের সন্মিলিত প্রচেষ্টায় সমাজ থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দূর করা হবে ।প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা আজ ৬ অক্টোবর (মঙ্গলবার) ঢাকায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যম জাতীয় কন্যা শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, কন্যা শিশুর জীবনের শুরু ভাল হলে পরিবার সমাজ ও দেশ উপকৃত হয়। শিশুদের উন্নয়নের মাধ্যমে সমাজ থেকে বৈষম্য দুর করা যায়। কন্যা শিশুর নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানী প্রতিরোধ কমিটি করা হয়েছে। ঝরেপড়া রোধ ও উপস্থিতির হার বৃদ্ধির জন্য কন্যা শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে মেয়ে শিক্ষার্থীদের হার ছেলেদের তুলনায় বেশি। স্কুল কলেজ সমূহে স্বাস্থ্য সন্মত ওয়াশ ব্লক নির্মাণ করা হয়েছে। যে কোনে বিপদে তাৎক্ষণিক সহয়তার জন্য ন্যাশনাল হেল্প লাইন ১০৯ চব্বিশ ঘন্ট চালু রয়েছে।
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও জাতীয় কন্যা শিশু এডভোকেসি ফোরামের যৌথভাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পারভিন আক্তার। আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান চেমন আরা তৈয়ব, অতিরিক্ত সচিব ফরিদা পারভীন, শিশু একাডেমির মহাপরিচালক জ্যোতি লাল কুরী ও জাতীয় কন্যা শিশু এডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক নাসিমা আক্তার জলি।
জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ ৫০ শতাংশ করার অঙ্গীকার করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন আজকের কন্যা শিশুরাই ২০৪১ সালে নারীর ৫০-৫০ কর্মসংস্থান নিশ্চিত করবে। প্রধানমন্ত্রীর এই অঙ্গীকার বিশ্বব্যাপী নারীর সমতা, ক্ষমতায়ন ও অগ্রগতি অর্জনে মুক্তির সনদ হিসেবে বিবেচিত হবে।
উল্লেখ্য যে, জাতির পিতা ১৯৭৪ সালে শিশু আইন প্রণয়ন করেন। যার ১৫ বছর পরে ১৯৮৯ সালে জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ প্রণয়ন করেন। বাংলাদেশ ২০০০ সালে কন্যা শিশু দিবসের সূচনা করেন। জাতিসংঘ ২০১১ সালে কন্যা শিশু দিবস পালন করে। শিশুর উন্নয়ন, সুরক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সবসময় অগ্রগামী। আজকের আলোচনা সভায় দেশের ৩৯ টি সংগঠন ও ১২ টা জেলা থেকে প্রতিনিধিরা সংযুক্ত ছিলেন। এছাড়া একশত জনেরও বেশি আলোচক, প্রিন্ট ও ইলেট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধি আজকের আলোচনা সভায় যোগদান করে। এবছর ‘আমরা সবাই সোচ্চার, বিশ্ব হবে সমতার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে জাতীয় কন্যা শিশু দিবস উদযাপন করা হচ্ছে।