করোনা বিষয়ে জনসচেতনার অভাব, উদাসীনতার ফলে হুমকের মুখে দেশ

01-2.jpg

বিশেষ প্রতিবেদক।।

ঘরে মিডিয়ার সামনে থাকলে নিউজ-ভিউজ দেখে মনে হয় করোনার অবস্থা ভয়াবহ, রাস্তায় বা বাজারে গেলে করোনার কোন অস্তিত্ব আছে সেটাই মনে হয় না। এমনটাই মন্তব্য লিখেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একজন ফেইসবুক ব্যবহারকারী। আসলেই তাই। রাস্তায় মানুষের চালাচল দেখলে এমনটাই মনে হবে। অনেককে দেখি ছোট বাচ্চা নিয়ে বাজারে। আবার স্বামী স্ত্রী সাথে ২/৩ টা ছেলে মেয়ে নিয়ে রিস্কায় গুরছে মহা উল্লাসে। মনে হয় এরা কোনো দিন করোনায় নামও শুনে নাই।

দেশে যে ভয়াবহ করোনার ছোবল আছে এরা মানতেই রাজি নয়। দেশের অল্প শিক্ষিত মোল্লাদের ঐয়াজ বা বয়ানের সুবাধে এদের ধারণা করোনা নয় আল্লাহকে ভয় কর। মৃত্যু নির্ধারিত। যেদিন হবার সেই দিনেই হবে। এসব অল্প শিক্ষিত মোল্লাদের কারনে সাধারণ মানুষের নিজেকে রক্ষা করার কোন উদ্যোগই পরিলক্ষিত নয়।

করোনাভাইরাস একটি অমানবিক মৃত্যু। সেটা দেখেও ন্যুনতম সচেতনতায় বালায় নেই বেশিরভাগ মানুষের। পারবারিক প্রয়োজনে কেনাকাটা করতে গেলে দেখা যায় ৭/৮ জন ভিক্ষুক ঘিরে ধরে সাহায্যের জন্য। এদের প্রতি রাগ হওয়ারও সুযোগ নেই, আবার এদের থেকে শারিরিক দূরত্ব ববজায় রাখাও সম্ভব হচ্ছে না।

ভয়, আতঙ্ক ও মৃত্যুর আরেক নাম করোনা ভাইরাস। করোনা। সার্স গ্রুপের নতুন একটি ভাইরাস এটি। গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে এই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়। বর্তমানে পুরো বিশ্বে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে করোনা। আমাদেশে  ৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যু ঘটে। করোনা সংক্রমণ রোধে দেশে ২৬ মার্চ থেকে সারাদেশে ৩০ মে পর্যন্ত ৭ দফা সাধারণ ছুটি বর্ধিত করা হয়। আগামী ৩ আগস্ট পর্যনত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করছে সরকার।  এই সময়টাতে স্কুল-কলেজ, অফিস, গণপরিবহন ও কারখানা সব বন্ধ রাখা হয়। ৩১ মে থেকে সীমিত পরিসরে স্কুল-কলেজ ছাড়া সব কিছু খুলে দেওয়া হয়। তবে এই সময়টাতে সবাইতে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য কঠোরভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে সবার মাঝে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানার যে প্রবণতা দেখা গিয়েছিল, বর্তমানে সে প্রবণতা বাড়ার চেয়ে হ্রাসই পাচ্ছে। প্রথমদিকে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কম থাকলেও নমুনা সংগ্রহের সংখ্যা বাড়ার পর থেকে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

জুনের প্রথম দিক থেকেই মানুষ ব্যাপক হারে রাস্তায় নামে। ভিঢ়করে চলছে গণপরিবহনে। সরকারী আদেশ উপেক্ষা করে টিউশন ফি কালেকশনের লক্ষে পরীক্ষা নিচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ফলে  জুনের মাঝামাঝি থেকে প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩ থেকে ৪ হাজারের মধ্যে উঠেছে।  পরীক্ষা ব্যাপক হলে এ সংখ্যা চোখ কপালে ওঠার পর্যায়ে যেতে পারতো। তবে আশার কথা হলো আক্রান্তদের মধ্য থেকে প্রায় অর্ধেকই সুস্থ হয়ে গেছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত বুলেটিনে এতথ্য জানা গেছে।

আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও মানুষের মাঝে করোনা নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা আছে বলে মনে হয় না। তারা মনে করছেন দেশে করোনা বলে কিছু নেই। মসজিদ ছাড়া কোথাও মানা হয় না স্বাস্থবিধি ও সামাজিক দূরত্ব। রাস্তাঘাট, হাট-বাজার, গণপরিবহনে সেই পূর্বের মত চলাচল করছে মানুষ। কারো মুখে মাস্ক নেই, থাকলেও তা মুখ থেকে নামানো, জীবাণুনাশকের ব্যবহারের প্রয়োজন আছে বলে তারা মনে করেন না। এমনকি ব্যবহৃত মাস্ক ও গ্লাভসও নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে না ফেলে রাস্তাঘাটসহ যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে। যত্রতত্র পড়ে থাকা পরিত্যক্ত মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস থেকে ছড়াতে পারে সংক্রমণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top