নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডে মৃতদের দাফন ও সৎকার এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হবে। রোববার (৫ জুন) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়।
এছাড়াও অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যার্থে মানবিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে এক হাজার প্যাকেট শুকনো খাবারে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে । দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে রোববার এ বরাদ্দ দেয়া হয়।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃত বেড়ে ৩৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে সাতজন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী। অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়েছেন চার শতাধিক।
শনিবার (৪ জুন) রাত ৮টার দিকে বিএম কন্টেইনার ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভেতরে আগুনের সূত্রপাত হয়। কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথমে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। রাত পৌনে ১১টার দিকে এক কন্টেইনার থেকে অন্য কন্টেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। রাসায়নিক থাকায় একটি কন্টেইনারে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, স্থানীয় শ্রমিকসহ অনেকে হতাহত হন। পুড়ে যায় ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়িও।
এদিকে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনাটি দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা, তা খতিয়ে দেখা হবে। তিনি রবিবার (৫ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্র্যাব) নব-নির্বাচিত কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় ও সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি।
সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুনে ছাই হয়ে গেছে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার পণ্য। তাৎক্ষনিক সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও খাত সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও অনেক বেশি। অন্যদিকে অধিকাংশ রপ্তানি পণ্যের লিড টাইম (সরবরাহের সময়) চলায় নির্ধারিত সময়ে সরবরাহ সম্ভব নয়। সঙ্গে রয়েছে রানা প্লাজা, তাজরিনসহ পুরোনো অনেক কলঙ্ক। ঘটেছে প্রাণহানির বড় ঘটনা। সবমিলে বিদেশি ক্রেতার মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিজিএমইএ নেতারা। এর ফরে বড় ধাক্কা লাগতে পারে রপ্তানি আয়ে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে দেশের রপ্তানি আয়ে। সদ্য সমাপ্ত মে মাসে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে ৩৮৩ কোটি (৩.৮৩ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ। এই আয় গত ৯ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম ১ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আগের মাস এপ্রিলের চেয়ে কম এসেছে ১৯ দশমিক ১৭ শতাংশ। আগুনের ঘটনায় রপ্তানি আয়ে আরো একটি ধাক্কা লাগল।