বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে এখন মরিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

Loo.jpg

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু আবার বাংলাদেশ সফরে আসছেন। নানা কারণে ডোনাল্ড লু বাংলাদেশে অত্যন্ত আলোচিত একটি নাম। বিশেষ করে নির্বাচনের আগে তার তৎপরতা বাংলাদেশে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছিল। ভিসা নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেওয়ার পর তিনি একাধিক গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন এবং বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে তার সরাসরি হস্তক্ষেপ এবং বেশ কিছু কথাবার্তা রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল।

জাতীয় নির্বাচনের পরে শেখ হাছিনা সরকারের শক্ত অবস্থান এবং চীন রাশিয়া ব্লক থেকে বাংলাদেশকে আমেরিকামুখি করতে মরিয়া এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে কোন মূল্যে এখন বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিশেষ করে তেল গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য সরকার যে দরপত্র আহ্বান করেছে সেখানে যেন মার্কিন কোম্পানিগুলো সুবিধা করতে পারে সে সব বিষয় নিয়ে কথা বলতে আগ্রহী। বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে এখন মরিয়া হয়ে উঠেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

তবে এর পাশাপাশি বাংলাদেশের মানবাধিকার, বিরোধী দলের মত প্রকাশের স্বাধীনতা সহ বিভিন্ন বিষয় আলোচনায় আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড লু’র সফর নিয়ে যত মাতামাতি হতো বা যে আতঙ্ক তৈরি হতো এবারে সেই পরিস্থিতি হচ্ছে না বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

ডোনাল্ড লু নির্বাচনের আগে একাধিকবার বাংলাদেশে এসেছিলেন এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য তিনি বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছিলেন। যখন ২৮ অক্টোবর বিএনপি সারা ঢাকা শহরে তাণ্ডব চালায়, এরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম স্তিমিত হয়ে গেলেও ডোনাল্ড লু’র একটি চিঠি নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে ধর্না দিয়েছিলেন। অবশ্য ডোনাল্ড লু’র এই চিঠিকে আমলে নেননি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

তখন ডোনাল্ড লু’র রাজনৈতিক সংলাপের বার্তাকে উড়িয়ে দিয়ে দেশে জাতীয় নির্বাচন সম্পূর্ণ করে আওয়ামী লীগ।বাংলাদেশের নির্বাচনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ নিয়ে একটি পরিবর্তিত নীতি এবং অবস্থান গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশের নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ এই বক্তব্য রেখেই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

জানা গেছে, ১৪ থেকে ১৬ পর্যন্ত দুই দিনে ডোনাল্ড লু বাংলাদেশে সরকারি এবং বিরোধী দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করবেন। এছাড়াও তিনি সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপ সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। আর এবার ডোনাল্ড লু’র বাংলাদেশ সফর কী বার্তা দেবে তা নিয়ে তেমন জল্পনা কল্পনা না থাকলেও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সাথে ব্যবসা বাড়াতে মরিয়া।

একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে ডোনাল্ড লু’র বাংলাদেশ সফর। সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ঝালিয়ে নেওয়া এবং বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক অবস্থানকে সম্প্রসারণ করাই ডোনাল্ড লু এর অন্যতম প্রধান লক্ষ্য বলেই একাধিক কূটনৈতিক সূত্র দাবি করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top