মালয়েশিয়া প্রবাসীদের কাছে ভয়াবহ আতঙ্কের নাম রতান

109249108_321315152363349_7563982089094205963_n.jpg

নোয়াখালী মেইল ডেস্ক ।।

আজ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নেই বলে বাঙালী জাতিকে অসম্মান বিদেশের মাটিতে । ছবিগুলো দেখুন। অসহায় প্রবাসীর চোখে মুখে আতঙ্ক আর দুশ্চিন্তা. কুয়ালালমপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের। হাতে শিকল বেঁধে আমার চোখের সামনে গরু-ছাগল বন্য পশুর মতো টেনে নেওয়া হচ্ছিল এই বাংলাদেশিদের ঢাকায় পাঠানোর জন্য।আমার নিজের তোলা এসব ছবি ও ভিডিও প্রথমবারের মতো দিলাম ফেসবুকে। দেওয়ার কারণ আল জাজিরা টেলিভিশনে প্রচারিত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন নিয়ে নিয়ে তোলপাড় চলছে মালয়েশিয়ায়।

লকড আপ ইন মালয়েশিয়ান লকডাউন-১০১ ইস্ট-শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত অভিবাসীদের প্রতি লকডাউন চলাকালে দেশটির সরকারের নিপীড়নমূলক আচরণ উঠে এসেছে। রায়হান কবির নামের এক প্রবাসী বাংলাদেশি এই নিপীড়নের বিরুদে প্রতিবাদ করে সাক্ষাতকার দেন। এখন তাকেও খুঁজছে পুলিশ। অথচ রায়হান কোন অপরাধ করেনি।

আল জাজিরার এই প্রতিবেদনে অভিবাসীদের প্রতি মালয়েশিয়ার নিপীড়েনের যে ছবি উঠে এসেছে সেটা তো কোন সভ্যতার ছবি নয়। সেখানে দেখা হয়েছে কর্মহীন ও খাদ্য সংকটে থাকা অভিবাসী শ্রমিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করে তাদের বসতঘর থেকে গরু-ছাগলের মতো টেনে ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

সাংবাদিক হিসেবে মালয়েশিয়া প্রবাসীদের দুরবস্থার নিয়ে গতে একযুগে অনেক কাজ করতে হয়েছে। এশিয়ার অন্যতম সমৃদ্ধ দেশ মালয়েশিয়া। রাস্তার দুই পাশে আকাশছোঁয়া সব অট্টালিকা, অসংখ্য ফ্লাইওভার, প্রশস্ত সব সড়ক দেখে মুগ্ধ হতে হয়। কিন্তু এমন একটি দেশে অধিকাংশ বাংলাদেশি শ্রমিকদের দাসের মতো জীবন কাটাতে হয়। যতোবার মালয়েশিয়ায় কাজ করতে গিয়েছে সবসময় শুনতে হয়েছে বিপুল পরিমান লোকের কাগেজপত্র ঠিক নেই। এর একটা বড় কারণ নিয়োগকর্তারা সেগুলো যথাসময়ে করেন না। আবার অনেকে মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে থাকেন। ফলে এই বাংলাদেশিদের সবসময় পুলিশের ভয়ে থাকতে হয়। ভয়ে বাড়ি থেকে লাফ দিয়ে অনেকের হাত-পাও ভেঙেছে।

মালয়েশিয়া প্রবাসীদের কাছে ভয়াবহ আতঙ্কের নাম রতান (বেত মারা)। ভয়ে গা শিউরে ওঠে রতানের বর্ণনা শুনে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ‘এ ব্লো টু হিউম্যানিটি: টর্চার বাই জুডিশিয়াল ক্যানিং ইন মালয়েশিয়া’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদনে বলেছে, ক্যাম্প বা কারাগারে ৫০ থেকে ৬০ জনকে একসঙ্গে রেখে মধ্যযুগীয় কায়দার বেত মারা হয়। চার ফুট লম্বা ও এক ইঞ্চি মোটা এই বেতের প্রচণ্ড এক আঘাতেই অধিকাংশ মানুষ অজ্ঞান হয়ে যান। শরীরের চামড়া কেটে যায়, রক্ত জমাট বেঁধে যায়। জ্ঞান ফেরে ১২ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর। অসংখ্য বাংলাদেশি এই নির্যাতনের শিকার।

অভিবাসীদের কীভাবে অসম্মান করা হয়েছে। অবশ্যই সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত ।

(নিউজ ছবি কোম্পানীগঞ্জ প্রবাসী ফাউন্ডেশনের সিনিয়র সহসভাপতি শওকত হায়াত বিপ্লবের ফেইসবুক ওয়াল থেকে নেয়া)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top