পিঠে ব্যথা ও তার চিকিৎসা

Back-Pain-02.jpg

স্বাস্থ্য কথা ডেস্ক ।।

চল্লিশের কোঠা পার করেছেন কী করেননি, পিঠে-কোমরে ব্যথা এসে থাবা বসাতে শুরু করেছে তো? বিশেষ করে যাঁদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে বসে কিংবা দাঁড়িয়ে কাজ করতে হয়, তাঁদের জীবনে শোয়া-বসা-চলার মতো ব্যথাকাতরতাও যেন প্রাত্যহিক একটা ব্যাপার। এবং সেটাকে অবহেলা করা। ব্যথা যখন অল্পসল্প ট্রাবল দিচ্ছে, তখন পেনকিলার খেয়ে সামাল দেওয়া। একেবারে কন্ট্রোলের বাইরে চলে গেলে, ডাক্তারের দ্বারস্থ হওয়া। আর অবহেলার এই সময়টুকুতে ব্যাকপেন রীতিমত গুরুগম্ভীর জায়গায় পৌঁছে যায়।

পিঠে ব্যথার কারণ
এ ধরনের ব্যথার কয়েকটি কারণ আছে। একটি কারণ হল, পড়ে যাওয়া বা ফ্র্যাকচার হওয়া। স্পাইন ও ব্যাকের কাছাকাছি মাসলে সমস্যা থাকলে ব্যথা হতে পারে। আবার ইনফেকশন বা টিউমারও কিন্তু কখনও-কখনও ব্যাকপেনের কারণ। বয়স হয়ে গেলে, ভিটামিন ডি-র ঘাটতির কারণে অস্টিওপোরোসিস হয়। তার থেকেও পিঠে ব্যথা হতে পারে। আবার নার্ভ ও স্পাইনাল বোনে সমস্যা থাকলেও ব্যথা হয়।

একটানা অনেকটা সময় বসে বা দাঁড়িয়ে কাজ করলেও কিন্তু এক ধরনের মেকানিক্যাল পেন শুরু হয়। আসলে, আমাদের পিঠ হল একটি মাল্টি জয়েন্টেড সেগমেন্ট। তাই বসে থাকা কিংবা দাঁড়ানো যদি বেশিক্ষণ হয় এবং আপনার বডিওয়েট বেশি হয় কিংবা নাও হয়, মাসলে স্ট্রেন পড়ে। চাপ যত বাড়তে থাকে, মাসলও কিন্তু প্রোটেস্ট করে ব্যথার মাধ্যমে, তা জানান দিয়ে। যিনি একটানা দাঁড়িয়ে বা বসে কাজ করছেন, বয়সকালে কিন্তু তাঁর একটু-একটু করে হাড় বাড়তে থাকে। তাকেই বলা হয় স্পন্ডিলোসিস। তারপর এটাই যখন আশপাশের নার্ভের উপর চাপ ফেলে, তখন তা হয়ে দাঁড়ায় নিউরোজেনিক পেন। আরথ্রাইটিস বা ট্রমার কারণে, যা মেকানিক্যাল ব্যাকপেন হিসেবে শুরু হয়, ক্রমশ নিউরাল পেনের দিকে এগোয়।

অনেকেই প্রশ্ন করেন, পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের এই ধরনের ব্যথা বেশি কি না? না, ব্যথা এরকম মহিলা ও পুরুষ ভাগ করে না। তবে মহিলাদের মেনোপজ হওয়ার আগে কিংবা মেনোপজ হওয়ার পর (৪৫ বছর বয়স হয়ে গেলে), ব্যাকপেন ছেলেদের তুলনায় বেশি হয়। এর কারণ হাড়ের ভঙ্গুরতা। অস্টিওপোরোসিসে মহিলারা বেশি আক্রান্ত হন এবং হাড়ের নমনীয়তার কারণে, একই বয়সে ছেলেদের তুলনায় তাঁদের এই ব্যথার প্রবণতাও আরও বেশি।

চিকিৎসা
প্রথমেই আমরা চেষ্টা করি, তাঁদের জন্মগতভাবে কোনও গঠনগত সমস্যা আছে কি না, সেটা বোঝার। এক্সারসাইজ বা সার্জারির মাধ্যমে সেটা যাতে ঠিক করা যায়, সেই চেষ্টা করি। তারপর দেখি ইনফেকশনের কারণে সমস্যাটা হচ্ছে কি না। মডিফায়েবেল কারণ পেলে, তার চিকিৎসা করি। মেকানিক্যাল সমস্যার কারণে ব্যথা হলে, পুষ্টির ঘাটতি মিটিয়ে সমস্যার সমাধান করা হয়। খুব ভারী শরীর হলে, হাড়ের উপর চাপ আরও বেশি পড়ে। তাই নিয়মিত এক্সারসাইজ করুন। মাসল যত টোনড থাকবে, পরবর্তীকালে ব্যথা তত কম হবে। অস্টিওপোরোসিসকে রোধ করার জন্য পুষ্টিকর ব্যালান্সড ডায়েট জরুরি। সুষম আহার গ্রহণ এবং এক্সারসাইজ না করলে, একজন ৪৫ বছরের মানুষও কিন্তু শারীরিকভাবে অনেক বেশি বয়স্ক হতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top