ঈদ যাত্রার প্রস্তুতি! একটা ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে

Kader-2.jpg

সড়কমন্ত্রীর বক্তব্যকেই চূড়ান্ত মনে করছেন পরিবহন মালিকরা

বিশেষ প্রতিবেদক ।।

ঈদের পাঁচ দিন আগে থেকে ঈদের তিন দিন পর পর্যন্ত মোট ৯ দিন গণপরিবহন বন্ধ রাখার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে চিঠি দিয়েছিল। করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিস্তার রোধে কভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সুপারিশের আলোকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। পরামর্শক কমিটি ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রাম থেকে অন্যান্য স্থানে যাতায়াত বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়। তবে গত বৃহস্পতিবার সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেছেন, ঈদের সময় গণপরিবহন চালু থাকবে। আগের দিন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীও একই কথা বলেছেন। বিষয়টি এখন এ পর্যায়ে আছে।

ঈদুল আজহার সময় ৯ দিন গণপরিবহন বন্ধ রাখার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনার পর সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গণপরিবহন চলবে। তবে পণ্যবাহী যানবাহন বন্ধ থাকবে। এরপর গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত আর কোনো নির্দেশনা কোনো তরফ থেকে আসেনি।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি মিডিয়াকে বলেছেন, রবিবারের আগে এ বিষয়ে তিনি স্পষ্ট কিছু বলতে পারবেন না। তিনি আরো বলেন, ‘সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী যেটা বলেছেন সেটাকেই এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হিসেবে ধরে নিচ্ছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘পোশাকশিল্পে কর্মরত কেউ ঈদে বাড়ি যেতে পারবে না।’ আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, এটা সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের বিষয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঈদের ছুটিতে কর্মস্থল ত্যাগ না করার নির্দেশনা দিয়েছে।

এমন অবস্থায় পরিবহন মালিকরাও বলছেন, তাঁরা সড়ক পরিবহন মন্ত্রীর বক্তব্যকেই চূড়ান্ত ধরে নিয়ে ঈদ যাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। রেলওয়ে বলছে, এখন যেভাবে ট্রেন চলছে, ঈদের সময়ও সেভাবে চলবে। তবে সরকার নতুন করে কোনো নির্দেশনা দিলে সেটা কার্যকর করতে প্রস্তুত তারা।

বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটির সদস্য শাকিল পরিবহনের মালিক কাজী ফরিদুল হক হ্যাপী বলেন, ‘মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কোনো নির্দেশনা বা কোন চার জেলা থেকে লোক যাতায়াত বন্ধ থাকবে এমন কোনো নির্দেশনা না পাওয়ায় আমরা ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যকেই চূড়ান্ত ধরে নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছি।’ যদিও তিনি মনে করছেন, একটা ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে।

বাস মালিকরা বলছেন, সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হলে শেষ পর্যন্ত তাঁরা ও যাত্রী উভয়ে বিপাকে পড়বে। এখন থেকেই বিষয়টি পরিকল্পিত না হলে শেষ বেলায় এসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অসম্ভব হয়ে উঠতে পারে। ‘ঈদের যাত্রীরা বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট থাকলে তারা আগেই ছুটি নেবে, টিকিট নেবে। অন্যদিকে তারা ধোঁয়াশার মধ্যে থাকলে শেষের দিকে এসে একসঙ্গে যাত্রীর চাপ বাড়বে। সে সময় স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়তো কারো পক্ষেই সম্ভব হবে না।’

করোনা সংক্রমণ মোকাবেলায় সরকারঘোষিত সাধারণ ছুটির সময় গণপরিবহন বন্ধ রাখা হয়। সে সময় শেষ সময়ে এসে ব্যক্তিগত গাড়িতে ঈদের ছুটিতে লোকজন বাড়ি যেতে পারবে বলে ঘোষণা আসে। এতে ব্যাপক বিশৃঙ্খলার ঘটনাও ঘটে। বিষয়টি মাথায় রেখে সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতেই ঈদুল আজহার সময় চার জেলা থেকে অন্যান্য স্থানে যাতায়াত বন্ধ রাখার পরামর্শ আসে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির কাছ থেকে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top