আবারো বেড়েছে তেল, চাল ও পেঁয়াজ, সবজির দাম! অস্থির নিত্যপণ্য, হতাশ নিন্মআয়েরে মানুষ

fn.jpg

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

বাজারে সরু চালের দাম আগের চেয়েও অনেকটাই বেড়েছে। বেড়েছে সয়াবিন তেল, পেঁয়াজ ও সকল প্রকার সবজির দামও।
অন্যদিকে ঈদের আগের তুলনায় ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কমেছে।

বিক্রেতারা জানান, বেশ কিছুদিন ধরে বাজারে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সরু তথা মিনিকেট চাল। সরু চালের দাস প্রায় এক’শ ছুই ছুই। গত মাসে মিনিকেট চালের দাম কেজিতে পাঁচ থেকে আট টাকা বেড়েছিল। সেই দাম কমেনি; বরং দুই সপ্তাহের ব্যবধানে আরও দুই থেকে তিন টাকা করে বেড়েছে। গত বছরের জুলাই-আগস্টে যে চাল ছিলো ৫০./৬০ সে চাল এখন ৭০/৭৫। আর সরু চাল ছিলো ৭০/৮০ সে সেু চাল এখন ৯০/৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সম্প্রতি রাজধানীর রামপুরা, শান্তিনগর, কাঁঠালবাগান বাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

মানভেদে নাজিরশাইল চাল ৮৫ থেকে ৯৫ টাকা, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ চাল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা আর মোটা জাতের স্বর্ণা চাল ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বর্তমানে খুচরা দোকানে রশিদ, ডায়মন্ড, সাগর ইত্যাদি ব্র্যান্ডের প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৮৮ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহ দুই আগে এসব চাল ৮৫ থেকে ৮৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মোজাম্মেল ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের দাম আরও বেশি। প্রতি কেজি মোজাম্মেল চালের দাম এখন ৯৬ থেকে ৯৮ টাকা। এ ছাড়া মানভেদে নাজিরশাইল চাল ৮৫ থেকে ৯৫ টাকা, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ চাল ৬০ থেকে ৬২ টাকা আর মোটা জাতের স্বর্ণা চাল ৫৫ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে বাজারে বোরো ধানের চাল আসার কথা। তখন চালের দাম কমবে।

এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম হয়েছে ১৮৯ টাকা, যা এত দিন ছিল ১৭৫ টাকা। অন্যদিকে খোলা সয়াবিন ও সয়াবিনের বিকল্প খোলা পাম তেলের দামও বেড়েছে লিটারে ১৪ টাকা।

দাম বেড়েছে দেশি পেঁয়াজেরও। বড় বাজারগুলোতে গতকাল এক কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দরে। পাড়া–মহল্লায় দাম নেওয়া হয়েছে ৬০ টাকা করে। বিক্রেতারা জানান, গত সপ্তাহের শুরুতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাজারে কোন সবজির দাম ৮০ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু টমেটোর দাম কম।

দুই থেকে তিন মাস ধরে প্রতি কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি দামে মিনিকেট চাল কিনছি। এখন হঠাৎ বেড়েছে সয়াবিন তেল ও পেঁয়াজের দাম। সব মিলিয়ে মাসের খরচ বেশ খানিকটা বেড়ে গেল। আবারো হতাশায় বাজারগামী মানুষরা।

শীত মৌসুম শেষ হয়েছে আরও আগেই। বাজারে আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন ধরনের গ্রীষ্মের সবজি। তবে এসব সবজির দাম তুলনামূলক বেশি। যেমন প্রতি কেজি পটোল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ থেকে ৯০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বড় বাজারগুলোতে গতকাল এক কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দরে। পাড়া–মহল্লায় দাম নেওয়া হয়েছে ৬০ টাকা করে। বিক্রেতারা জানান, গত সপ্তাহের শুরুতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

তবে কিছুটা কমেছে মুরগির দাম। বাজারে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কমেছে। গতকাল প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় এবং সোনালি মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ঈদের আগে অর্থাৎ গত মাসের শেষে বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল প্রতি কেজি ২২০ থেকে ২৩০ টাকা। ওই সময় সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকায়। কেজিতে দাম কমেছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা।

প্রতি কেজি পটোল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৮০ টাকা, বরবটি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং লাউ ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে মঙ্গলবার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম একলাফে লিটারে ১৪ টাকা বাড়িয়েছে ভোজ্যতেল কোম্পানিগুলো। এতে এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম হয়েছে ১৮৯ টাকা, যা এত দিন ছিল ১৭৫ টাকা। অন্যদিকে খোলা সয়াবিন ও সয়াবিনের বিকল্প খোলা পাম তেলের দামও বেড়েছে লিটারে ১২ টাকা।

সয়াবিন ও পাম তেলের হঠাৎ মূল্যবৃদ্ধিতে সাধারণ ক্রেতাদের অস্বস্তি বেড়েছে। রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা আতাবুল ইসলাম বলেন, ‘দুই থেকে তিন মাস ধরে প্রতি কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি দামে মিনিকেট চাল কিনছি। এখন হঠাৎ বেড়েছে সয়াবিন তেল ও পেঁয়াজের দাম। সব মিলিয়ে মাসের খরচ বেশ খানিকটা বেড়ে গেল।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top