৮ম বছরে পদার্পণ করলো কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কল্যাণ সমিতি-ঢাকা

01.jpg

পিকনিক ইফতার সমিতির সাথে আমি নাই। আমি সবাইকে এটা জানিয়ে দিয়েছি : পাকবীর

নগর প্রতিবেদক ।।

১০ অক্টোবর মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় মতিঝিলস্থ ডেইলি অবজারভার সেমিনার হলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কল্যাণ সমিতি ঢাকার ৭ম প্রতিষ্ঠাবার্ষকী এবং ৮ম জন্মদিন পালিত হলো। সংগঠনের সভাপতি সাংবাদিক মোহাম্মদ মকছুদের রহমান মানিক এর সভাপতিত্বে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কল্যাণ সমিতি ঢাকার প্রধান পৃষ্ঠপোষক কোম্পানীগঞ্জের কৃতি সন্তান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ডেইলি অবজারভার পত্রিকার উদ্যোক্তা পরিচালক মোহাম্মদী গ্রুপ অব কোম্পানীজ এর চেয়ারম্যান জনাব মোশাররফ হোসেন পাকবীর।
জন্মদিন উপলক্ষে কেক কেটে সমিতির প্রধান পৃষ্ঠপোষক মীর মোশাররফ হোসেন পাকবীর আনুষ্ঠানিকভাবে জন্মদিনের অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন।
এসময় অনুষ্ঠানের সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কল্যাণ সমিতির সেক্রেটারী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রবিউল হক মিলাদ। এছাড়াও সংক্ষি্প্ত আলোচনায় করেন সমিতির অর্থ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রানা, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াছ,কার্য়নির্বাহী সদস্য শিবলু, সবুজ, নিজাম উদ্দিন প্রমুখ।

কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ মকছুদের রহমান মানিক তার সূচনা বক্তব্যে বলেন,আজ এই সামাজিক সংগঠনটি তার ৭ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও অষ্টম জন্মদিন উদযাপন করলো একান্ত ঘরোয়াভাবে। এই দিনে আমাদের সমিতির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ঢাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদী গ্রুপ অব কোম্পানিজ এর চেয়ারম্যান জনাব মীর মোশাররফ হোসেন পাকবীর ভাই আবারো আমাদের পথ চলায় উৎসাহ যোগালেন।

আমরা সমিতির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী করতে পাকবীর ভাইকে দাওয়াত দিতে গিয়ে জানলাম কাকতালীয় ভাবে ১০ অক্টোবর উনারও জন্মদিন। ফলে ১০ অক্টোবর সারাদিনই বিভিন্ন ব্যবসায়ীক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সাংবাদিকরা পাকবীর ভাইয়ের জন্মদিনের আনুষ্ঠানিকতা করবেন। ১০ অক্টোবর অফিস ছাড়া উনার জন্য অনেকটা অসম্ভব। ফলে আমরাও সিদ্ধান্ত নিলাম উনার মিডিয়া অফিস ডেইলি অবজারভার পত্রিকার সেমিনার হলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কল্যাণ সমিতি-ঢাকার ৮ম জন্মদিনের অনুষ্ঠানিকতা করবো। আমরা সিডিউল পেলাম অফিস সময়ে পরে বাদ মাগরিব।

সমিতির ৮ম জন্মদিনের অনুষ্ঠানিকতায় ছিলো ৮ বছরের জন্য ৮ ফাউন্ডের কক কেটে প্রধান পৃষ্ঠপোষক সমিতির সভাপতি ও সেক্রটারির মুখে তুলে দেন। একইভাবে সভাপতি ও সেক্রটারিও প্রধান পৃষ্ঠপোষককে কেকে মুখে তুলে দেন। এরপর প্রধান পৃষ্ঠপোষক সমিতির সকল সদস্যকে  মিষ্টিমুখ করান।

প্রধান পৃষ্ঠপোষক পাকবীর ভাই তার বক্তব্যে কোম্পানীগঞ্জ নিয়ে, কোম্পানীগঞ্জের মানুষদের নিয়ে উনার দীর্ঘ দিনের চিন্তা চেতনা আজ ঢাকাস্থ কোম্পানীগঞ্জবাসী সামনে তুলে ধরলেন। তিনি বললেন, ঢাকায় কোম্পানীগঞ্জের বেশ কয়েকটি সমিতি আছে। এই গুলো ঘুরে ফিরে পিকনিক ও ইফতার আয়োজন সমিতি। এদের দিয়ে কোম্পানীগঞ্জের মানুষের কোন কল্যাণ হচ্ছে না। আমি গত দুই যুগ ধরে সবাইকে বলে আসছি মানুষের কল্যাণে কিছু করতে। ঢাকায় দেশের প্রায় সব উপজেলার নিজস্ব ভবন/অফিস আছে। অথচ কোম্পানীগঞ্জের সবসময়েই মন্ত্রী, সিআইপি, ভিআইপি, সরকারের বড় বড় আমলা থাকলেও কোম্পানীগঞ্জের মানুষের ঢাকায় নিজস্ব কোনো ঠিকানা নাই।

এর মুল কারন সামাজিক সংগঠনের নেতাদের প্রতি মানুষের আস্তার সংকট রয়েছে। এছাড়াও এর আগে কোম্পানীগঞ্জ ট্রেড এসোসিয়েট করে বাস কিনে মানুষের অর্থ নষ্ট করা হয়েছে। আপনারা যদি কোম্পানীগঞ্জের মানুষের জন্য ভালো কিছু করতে চান আমাকে সাথে পাবেন।

ঢাকার মাটির সাথে আপনাদের সম্পর্ক হতে হবে। অন্যের ভাড়া করা স্পটে কেন পিকনিক হবে? নিজেরাই ঢাকার অদূরে পিকনিক স্পট করেন। সেখানে ডরমেটরি করেন। আবাসিক রিসোর্ট করেন। স্বল্প আয়ের মানুষের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করেন।

এইগুলো যারা করবেন তাদের সাথে আমিও মানসিক ও অর্থনৈতিকভাবে থাকবো। আসুন আপনাদের আগামী জন্মদিনের আগেই আমরা এই রকম কিছু করার উদ্যোগ শুরু করি। পিকনিক ইফতার সমিতির সাথে আমি নাই। আমি সবাইকে এটা জানিয়ে দিয়েছি।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কল্যাণ সমিতির অনুষ্ঠানে সবাই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে পাকবীর ভাইয়ের আলোচনা শুনলেন। সমিতির সদস্যরা সম্মতি দিলেন ঢাকাস্থ কোম্পানীগঞ্জবাসী আগামী দিনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে পাকবীর ভাইয়ের পাশে থাকবে।

এসময় সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটি ও আজীবন সদস্যের উপস্থিতিতে পাকবীর ভাইয়ের জন্মদিন ও সমিতির জন্মদিন অবজারভারের সেমিনার হলেই শেষ করলাম। সমিতির ৮ম জন্মদিনের অনুষ্ঠানের মূল আলোচকই ছিলেন পাকবীর ভাই।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কল্যাণ সমিতি ঢাকার জন্মদিনে পিছনে ফিরে দেখা : মোহাম্মদ মকছুদের রহমান মানিক
আগামী ১০ অক্টোবর ২০২৩ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কল্যাণ সমিতি-ঢাকা ‘র ৮ম জন্মদিন। ঠিক ৮ বছর আগে এ দিনে আমি (মোহাম্মদ মকছুদের রহমান মানিক) আমার কিছু অনুসারীদের নিয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কল্যাণ সমিতি-ঢাকা নামে ঢাকাস্থ কোম্পানীগঞ্জবাসীদের জন্য একটি অদলীয় সামাজিক সংগঠনের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করি । সেদিনের কথা আমার আজো স্মৃতিতে ভাসে। সে সময়ে আমাকে বিরাট একটা চ্যালেঞ্জ নিতে হয়েছে।
মূলত সেই সময়ে ঢাকায় কোম্পানীগঞ্জবাসীদের কোন অদলীয় মঞ্চ ছিলো না। ফখরুল ভাই কোম্পানীগঞ্জ ফোরাম নামের একটি দলীয় সংগঠন চালাতেন। অন্যদিকে শাহাবুদ্দিন ভাই মাঝে মাঝে নিজের প্রয়োজনে ভোটবাটে উনার পছন্দের লোকদের ডাকতেন। যাকে বলে প্রয়োজনে প্রিয়জন আরকি। শাহাবুদ্দিন ভাই মুলত চাইতেন না ঢাকায় কোম্পানীগঞ্জের সর্বদলীয় বা অদলীয় কোন মঞ্চ / সমিতি হোক।
কাকরাইলের বিপাশা হোটেলেরর মালিক মরহুম মোহাম্মদ আলীর শোকসভায় আমি যখন ঘোষণা দিলাম আমাদের অগ্রজরা যদি আগামী এক মাসের মধ্যে কোম্পানীগঞ্জের সর্বদলীয় কোনো সমিতি করতে না পারে তবে আমি উদ্যোগ নিয়ে একমাস পরে সর্বদলীয় একটি সমিতির ঘোষণা দিবো।
আমার এমন ঘোষণায় অনেকেই মজা পেলেন। আমি তখন বুঝলাম শাহাবুদ্দিন ভাই কোম্পানীগঞ্জের মানুষের কাছে কতটা অপচন্দের মানুষ।
ঢাকাস্থ কোম্পানীগঞ্জবাসীরা আমাকে উৎসাহ দিতে লাগলেন। আমিও তখন অনেকেরই মতামত নিলাম। বিশেষ করে বেলায়েত হোসেন স্বপন আমাকে সাহস দিতেন বেশি। উনিই আমার সাথে কোম্পানীগঞ্জের অনেকের সমন্বয় করে দিলেন।
২০১৬ সালের ৩ অক্টোবর আমার নোয়াখালী মেইল পত্রিকার পল্টনস্থ অফিসে আমরা আলী ভাইয়ের শোকসভার মূল্যায়ন সভায় বসি। সেদিনও আমার ঘোষণার বিষয়ে আলোচনা হয়। সেই সভায় সিদ্ধান্ত হয় ১০ অক্টোবর সমিতি করার বিষয়ে আমরা আমার অফিসে আবার বসবো ।যথারীতি ১০ অক্টোবর আমরা বসি।
সেই দিনের বৈঠকে ছিলেন মোহাম্মদ মকছুদের রহমান মানিক,, ফরহাদ হোসেন ভূঁইয়া মুকুল, সানাউল্লাহ বাহার, জাফর উল্লাহ, কাদের হাজারীসহ ১৬ জন। ১০ অক্টোবরই সমিতির একটি আহ্বায়ক কমিটি হয়। মোহাম্মদ মকছুদের রহমান মানিক কে আহ্বায়ক ও মরহুম আবদুল কাদের হাজারীকে সদস্য সচিব করে ৭ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা হলো।
সেই দিন মুকুল ভাই, মোহাম্মদ মকছুদের রহমান মানিক (আমি) ও চর হাজারীর জাফর ভাই ১০০০ করে মোট ৩ হাজার টাকা জমা দিলাম। সমিতির সদস্য ফরম ও রশিদ বই, রেজুলেশন খাতা ও রেজিস্টার খাতা কিনতে। এর দুইদিন পরেই শুনি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী জানালেন শাহাবুদ্দিন ভাই আমাদের সমিতির সদস্য সচিব কাদের হাজারীকে পাঁচ হাজার টাকায় কিনেছেন। হাজারী আমাদের সাথে থাকবে না। অথচ এই হাজারীকে আমি সংবাদপত্রের লোক হিসেবে সারাটা জীবনই টেনেছি।
২০১৬ সালের ১৬ অক্টোবর আমরা আবার বসলাম সেদিন কাদের হাজারী আসলেন না। প্রায় ২৫/২৬ জন ছিলাম। উপস্থিত সকলের মতামতের ভিত্তিতে ফরহাদ হোসেন মকুল সভাপতি ও আমি ( মোহাম্মদ মকছুদের রহমান মানিক) সাধারণ সম্পাদক করে মোট ৪১ সদস্যের পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হলো।
 
আমাদের কমিটি ঘোষণার পর যেন ঢাকাস্থ কোম্পানীগঞ্জবাসী আমাদের দিকে পঙ্কপালের মতো আসতে লাগলো। সবাই বড় একটা জমায়েত করার অনুরোধ নির্দেশ ও মতামত দিতে লাগলেন। ইতোমধ্যেই আমাদের সদস্য হয়ে গেলো পাঁচ শতাধিক। অভিষেক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মুরব্বিরা বললো অভিষেক হোক বনভোজনের মাধ্যমে। বাধ্য হয়ে ২০১৬ সালের ৩০ জানুয়ারি পিকনিকের ঘোষণা দিলাম।
পিকনিকে এতো লোক সমাগম ও এতো আয়োজন ঢাকাস্থ কোম্পানীগঞ্জবাসীর জীবনে প্রথম। প্রায় দশ লক্ষ টাকা খরচ হলো। আমার এখনো আচার্য লাগে আমার মতো মানুষ কে মানুষ এতোটা আস্থায় নিলো। অনেকের মতে আমি ভালো সংগঠক এটা আমি বরাবরই শুনে আসতাম। কিন্তু পাহাড়কে প্রতিপক্ষ রেখে আমার সফলতায় আমার আস্থা বেড়ে গেলো। মাত্র এক বছরেই আমরা ঢাকাস্থ কোম্পানীগঞ্জবাসীর মনে প্রাণে সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়েছি। পাহাড় সমান প্রতিরোধও আমাদের অগ্রগতি আটকাতে পারেনি। যেমন বালুর বাঁধ কখনো সমুদ্রের উচ্ছাসকে আটকাতে পারে না। কিন্তু কল্যাণ সমিতিকে প্রতিরোধের চেষ্টা চলেছে প্রতিদিনই।
২০১৬ সাল থেকে আজ পর্যন্ত আমাকে একান্ত ভাবে সহযোগিতা করেছেন মুকুল ভাই, খোকন ভাই, বাহার ভাই, নাসের মাস্টার, মোশাররফ ভাই, হোসেন ভাই, আফছার, লিটন, রুবেল, কাজী রহিম, কাজী হামিদ, জাহেদ, রফিক, হিমেল, হালিম, ফয়সাল, ফয়েজসহ অনেকে।
আজ সমিতির ৮ম জন্মদিনে কোম্পানীগঞ্জবাসীদেরকে জন্ম দিনের শুভেচ্ছা। আশা করি অতিতের মত আগামীতেও আমরা আপনাদের পাশ পাবো। সর্বশেষ আমার শত্রুরা কিছুটা সফল হয়েছে কল্যাণ সমিতিকে ভাগ করেছে। কিন্তু আমি চাইলে ঝড় সবসময়ই তুলতে পারি। দেখেছেন ২০২২ এর পিকনিকে দেখবেন ২০২৩ এর পিকনিকেও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top