জামালউদ্দিনকে সরিয়ে জনতা ব্যাংকে নতুন চেয়ারম্যান এস এম মাহফুজুর রহমান

IMG_20190821_090217_253.jpg

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

বৃহত্তর নোয়াখালীর কৃতিসন্তান দেশ সেরা অর্থনীতিবিদ জামালউদ্দিন আহমেদকে সরিয়ে তার স্থলে এস এম মাহফুজুর রহমানকে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। খেলাপি ঋণের ভারে নাজুক জনতা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানকে মেয়াদ শেষের আগেই হঠাৎ পরিবর্তন ব্যাংক পাড়া ও অর্থনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় করেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ মঙ্গলবার জানিয়েছে, ‘জনস্বার্থে’ জামালউদ্দিনকে অব্যাহতি দিয়ে মাহফুজুর রহমানকে তিন বছরের জন্য জনতা ব্যাংকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে।

ঋণ জালিয়াতির কারণে সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় আছে জনতা ব্যাংক। ব্যাংকটিকে উদ্ধারে সরকার চেয়ারম্যান বদলে এলেও কোনো উন্নতি ঘটছে না। এর আগের চেয়ারম্যানরা মেয়াদ শেষ করতে পারলেও জামালউদ্দিনকে ১১ মাসের মাথায় সরিয়ে দেওয়া হল।

গত মার্চ শেষে জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ১১৭ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ২৭ শতাংশ। রাষ্টায়ত্ত চার বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে খেলাপি ঋণের হার তাদেরই বেশি।

নতুন চেয়ারম্যান মাহফুজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের সাবেক অধ্যাপক। তিনি বর্তমানে বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির উপাচার্য। মাহফুজ ২০১১ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সরকারি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) চেয়ারম্যান ছিলেন।

নতুন চেয়ারম্যান এস এম মাহফুজুর রহমান ও বিদায়ী চেয়ারম্যান জামালউদ্দিন আহমেদ

তার নিয়োগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, “জনতা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক ও চেয়ারম্যান হিসেবে মাহফুজুর রহমানকে তার যোগদানের দিন থেকে তিন বছর মেয়াদে নিয়োগের উদ্দেশ্যে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এ বিধান মোতাবেক বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন গ্রহণসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রমের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হল।”

গত বছরের ২৮ অগাস্ট তিন বছরের জন্য জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান করা হয়েছিল জামালউদ্দিনকে। পেশায় তিনি হিসাববিদ। পাশাপাশি অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক। একটি বিদ্যুৎ প্রকল্পের ঋণ প্রস্তাবে জামালউদ্দিন নিজেই পরিচালক হিসেবে ছিলেন। এ নিয়ে আপত্তি উঠলে তিনি পরিচালক পদ থেকে সরে আসেন।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা মিডিয়াকে বলেন, “প্রভাবশালী একটি ব্যবসায়ী গ্রুপের কথামতো কাজ না করায় সরে যেতে হয়েছে জামালউদ্দিনকে।”

সরকারের আদেশের পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কথা বলতে জামালউদ্দিন আহমেদের মোবাইলে ফোন দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি। জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে আসার আগে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top