কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে শেষ হাসিটা কে হাসবেন! জনজরিপে বাদল এগিয়ে

UP-Final.png

নিজস্ব প্রতিবেদক, নোয়াখালী থেকে ।।

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলাতে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল ২৯ মে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান ৪ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ২ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ২ জনসহ মোট তিন পদে ৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ইতোমধ্যেই প্রার্থীরা হাটে ঘাটে মাঠে যেখানেই ভোটারদের দেখা পাচ্ছেন সেখানেই ভোট প্রার্থনা করেছেন। বিপদ আপদে ভোটারদের পাশে থাকার পাশাপাশি দিচ্ছেন উন্নয়নের নানান প্রতিশ্রুতি। গত কয়েকদিনের প্রচার প্রচারণা ও প্রভাকান্ড দেখে সবমিলিয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ত্রিমুখী লড়াই আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ৮টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় মোট ভোটার ২,২৬,২২৩ জন। এর পুরুষ ১,১৭,৫২২জন এবং মহিলা ভোটার ১,০৮,৭০১ জন। সর্বমোট ২,২৬,২২৩ ভোটারের বিপরীতে চেয়ারম্যান পদে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ৪ জন ভোটের মাঠে লড়াই করছেন।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান কেউই এবার নির্বাচন করছেন না। বর্তমান চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানরা তিন জনই বিগত সময়ে বিনা ভোটের চেয়ারম্যান ছিলেন।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে এবারের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী মিজানুর রহমান বাদল (দোয়াত কলম), মেয়র সমর্থিত প্রার্থী গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুল (আনারস), সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর ছোট ভাই শাহাদাত হোসেন (টেলিফোন) মার্কায় লড়ছেন।

এছাড়াও এক আমেরিকা প্রবাসী ওমর আলী রাজ নামের আরেকজন মোটরসাইকেল মার্কায় ভোট করছেন।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল ছাড়া অন্য সবাই উপজেলা নির্বাচনে নবাগত প্রার্থী। নির্বাচনের মাঠে নতুন মুখ ব্যবসায়ী গোলাম শরফি চৌধুরী পিপুল (আনারস) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি এলাকায় আম জনতার কাছে অপরিচিত। অন্যদিকে মন্ত্রীর ছোট ভাই শাহাদাত হোসেন নবাগত হলেও এলাকায় বেশ পরিচিত। আর মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ওমর আলী রাজ-এর প্রচারণা তেমন চোখে পড়েনি। ফলে ভোট যুদ্ধে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

জনপ্রিয়তার দিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে আছেন স্থানীয় আওয়ামী সেক্রেটারী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল। তবে মেয়রের সমর্থনের কারণে এবং আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারেন গোলম শরীফ চৌধুরী পিপুল।

অন্যদিকে মনোনয়ন বাতিল হওয়া ও পরে দেশের সব কোর্টে লড়াই করে মনোনয়ন ফিরে পাওয়া মন্ত্রীর ছোট ভাই শাহাদাত প্রচারণায় দেরীতে নেমেও চমক সৃষ্টি করেছেন।

নির্বাচনে ভোটারের রায় প্রতিফলিত হলে মিজানুর রহমান বাদল চেয়ারম্যান হচ্ছেন এটা আম জনতারাও চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারবেন। তবে মিজানুর রহমানের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি কে হচ্ছেন, এটা এখনো অনিশ্চিত। সেখানে শাহাদাতের নাম আসলে আশ্চার্য হওয়ার কারন নেই। তবে ভোটের মাঠে একবারে নতুন প্রার্থী গোলাম শরীফ চৌধুরী প্রচার প্রচারণায় চমক সৃষ্টি করেছেন। প্রচারণায় তিনিই এগিয়ে ছিলেন।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন দুজন প্রার্থী। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জহির উদ্দিন বাবর চশমা প্রতীকে লড়ছেন এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মামুন হোসেন তালা প্রতীকে নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ পদে চশমা প্রতীক নিয়ে বাবর অনেকটই এগিয়ে আছেন। তবে আওয়ামী লীগের কর্মীরা সুর পাল্টালে মামুনও চমক দেখাতে পারেন।

এছাড়াও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রার্থী রয়েছেন। মেয়র সমর্থিত প্রার্থী পারভীন আক্তার মুরাদ ভাবী ফুটবল প্রতীক নিয়ে ভোটের মাঠ চষে বেড়িয়েছেন। পারভীন ভাবীর সাথে প্রজাপতি প্রতীক নিয়ে লড়ছেন সাবেক পৌর কাউন্সিলর পারুল আক্তার। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান অনেক বেশি ব্যবধানে পারভীন ভাবীর জয়ের সম্ভাবনা আছে।

তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ত্রীর ছোট ভাই পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জার সমর্থনের সুযোগে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের তিন প্রার্থী পিপুল, বাবর, মুরাদ ভাবী সকাল থেকে রাত অবধি উঠান বৈঠক, পথসভা করার পাশাপাশি ভোটাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে গণসংযোগ করছেন, ভোট ভিক্ষা করেছেন। এই তিনজন প্যানেল করেই নির্বাচন করেছেন। এরা এক সাথেই তিন ভোট চেয়েছেন।

এতকিছুর পরেও অনেকটা ডিপেন্ডিং কায়দায় প্রচারণায নম্র ভদ্র নমনীয় আচরণে ভোট করে নিজেকে নির্বাচনী মাঠে ধরে রেখেছেন মিজানুর রহমান বাদল। তার একটাই দাবি আমার বিগত সময়ের কাজ ও আমাকে যোগ্য মনে করলে দোয়াত কলম মার্কায় ভোট দিবেন। আপনাদের দৃৃষ্টিতে আমি অযোগ্য হলে আমাকে ভোট দিতে হবে না।

গত ১৩ মে প্রতীক বরাদ্দের সাথে সাথেই প্রার্থীরা ছোটাছুটি শুরু করেন ভোটের মাঠে। ভোটের মাঠে প্রতিপক্ষকে পরাজিত করে বিজয়ের মালা পরে ঘরে ফিরতে তিন প্রার্থীই আশাবাদি।

কিন্ত শেষ হাসিটা কে হাসবেন সেটা দেখার জন্য আরো অপেক্ষা করতে হবে ২৪/২৫ ঘন্টা। অর্থাৎ ২৯ মে রাত ৮টা/৯টা পর্যন্ত।

তবে আমরা কোম্পানীগঞ্জের চৌধুরীহাট থেকে থানার হাট হয়ে বাংলাবাজার। ছোটধলি হয়ে পুরাতন বেড়িবাঁধ যা এখন সোনাপুর জোরালগঞ্জ সড়ক নামে পরিচিত এই সড়কের ১৩ চোরার মাথা পর্যন্ত এবং পাটওয়ারী হাট হয়ে আবার বসুরহাট এই সড়কে জরিপ চালিয়ে ১১৭৮ জনের মতামত নিয়েছি।

এর মধ্যে কমবেশি ৬১৩ জন অর্থাৎ ৫২% মিজানুর রহমান বাদলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। কমবেশি ৩৩০ জন ভোট দিয়েছেন গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুলের পক্ষে এবং কমবেশি ২৩৫ জন ভোট দিয়েছেন শাহাদাত হোসেন পক্ষে। আমরা ওমর আলী রাজকে জরিপে আনি নাই।

তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে সর্বশেষ আজ তিনটি উপজেলার নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর আগে ২৭ মে ১৯ উপজেলার নির্বাচন স্থগিত করা হয়। ফলে এই ধাপে কাল ২৯মে বুধবার ৮৭টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হবে। এবার দেশে চার ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হচ্ছে। কাল তৃতীয় ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তৃতীয় ধাপে বৃহত্তর নোয়াখালীর নোয়াখালী সদর, বেগমগঞ্জ ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা। ফেনী জেলার ফেনী সদর, সোনাগাজী ও দাগনভূঞা এবং লক্ষ্মীপুর জেলার লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

বি. দ্র. আমাদের জরিপ শতভাগ সমর্থিত কোন জরিপ বলা যাবে না। শুধুমাত্র জাতীয় পাক্ষিক নোয়াখালী মেইল পত্রিকার জরিপ মাত্র। আপনাকে এই জরিপ বিশ্বাস করতে বলছি না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top