আওয়ামী লীগে দল প্রেমিক ও দেশ প্রেমিক নেতা কর্মীদের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে

al-lll.jpg

মিয়া মাকসুদ ।।

ঐতিহাসিক রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। যে দলটি বাঙালিকে একটি স্বাধীন দেশ ও নতুন একটি মানচিত্র বিশ্বমানচিত্রে সংযোজন করেছে। যে দলটির নেতৃত্ব দিয়েছেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পৃথিবীতে কোন বাঙালি বঙ্গবন্ধুর মতো এতটা উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে নি। যিনি বিশ্ব বাঙালির অনুপ্রেরণা। বাংলাদেশী বাঙালি জাতির জনক।

সেই মহান মানুষটির হাতে গড়া দলটির আজকেও নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিশ্বমানের নেতৃত্ব বঙ্গকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। যিনি বিশ্ববাসীর কাছে উন্নয়নের মডেল হয়ে উঠেছেন। বঙ্গবন্ধুর পরে যে বাঙালি নেতার প্রশংসা পঞ্চমুখ বিশ্বনেতারা। যিনি আপ্রাণ চেষ্টা করছেন বিশ্বদরবারে বাঙালি জাতিকে নিয়ে মাথা তুলে দাঁড়াতে। নিজ দেশের মানুষের জীবনমান বিশ্বমানের করতে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত এক যুগে বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ বাঙালির আত্মসামাজিক উন্নয়নে যে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন তা বিশ্ববাসীকে অবাক করেছে। বিশ্বনেতারা নিজের দেশের উন্নয়নে শেখ হাসিনার কাছে আজকে পরামর্শ নিচ্ছেন।
অথচ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সেই দলটিতে বর্তমান সময়ে দল প্রেমিক ও দেশ প্রেমিক নেতাকর্মীর সঙ্কট এখন চরমে। আগাছায় ভরে গেছে দলটির নেতৃত্বে। জাহাঙ্গীরের মতো বহু হাইব্রিড নেতা ভর করছে দলটিতে। এসব নেতারা দল বা দেশকে নয় নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এক যুগ বা অর্ধযুগ আগেও যাদেরকে দেখেছি মানুষের কাছে হাত পেতে টাকা নিতে বা খুঁজে খেতে মাত্র কিছুদিনের ব্যবধানে তারা বাড়ি গাড়ি করে আলীশান জীবনে যাপন করছে। এমনটা বিএনপি সরকারে থাকতেও দেখা গেছে। যার ফলে জনগণ বিএনপিকে ছুড়ে পেলে দিয়েছে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে আওয়ামী লীগের মত দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলটির মাঠ পর্যায়ের অবস্থা একই রকম দিকে পা বাড়িয়ে দিয়েছে।

সারাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আগাছা মাথাছাড়া দিয়ে উঠেছে। ফসলের আগাছা যখন মূল ফসলের গাছ থেকে বড় হয়ে যায় সেই ফসলের ফলন ভালো হয় না। আওয়ামী লীগের অবস্থাও এখন অনেকটাই সেই রকম।
আমি আওয়ামী লীগ করি না। আওয়ামী লীগের ভালো মন্দে আমার কিছু যায় আসেনা। কিন্তু আওয়ামী লীগ পরাজিত হলে স্বাধীনতার চেতনা, দেশের মানচিত্র ও ভূখণ্ড হুমকির মুখে পড়ে। আওয়ামী লীগ যখন উঠে একা উঠে যখন ডুবে পুরো জাতিকে নিয়ে ডুবে।

শেখ হাসিনা দেশ ও জাতির প্রতি যতটা আন্তরিক, তার দলের মাঠ নেতারা দেশ ও জাতিকে লুটেপুটে খেতে ততটাই বেপরোয়া। ফলে শেখ হাসিনার এত উন্নয়ন মাঠে মার খাচ্ছে মাঠের নেতাকর্মীদের দলবাজী ও ক্ষমতাবাজীতে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে দিনরাত কাজ করছেন। এত উন্নয়ন আমজনতার কাছে পৌঁছাতে দলের মাঠ কর্মীরা কোন ভূমিকা রাখছে না। অন্যদিকে জামায়াত বিএনপি সরকারের উন্নয়নকে লুটপাট প্রমাণে শতভাগ সফল হয়েছে।

অনেক সময় আমাদের আড্ডায় অনেকেই বলতে শুনি শেখ হাসিনার উন্নয়নের কথা। এরা সমাজের সচেতন সমাজ বলে খবর রাখেন। অনেক সুশীলদের বলতে শুনেছি এদেশে যেটুকু উন্নয়ন হয়েছে তার কিছুটা করেছে এরশাদ আর বাকীটা শেখ হাসিনার আমলেই হয়েছে। এমনকি মরহুম মওদুদ আহমদ ও মির্জা ফখরুল পর্যন্ত কুড়িল বিশ্বরোড ও ৩০০ ফিট রাস্তা নিয়ে প্রশংশা করেছেন। কিন্তু আমজনতার সাথে কথা বললে তারা ক্ষোভের সাথে সরকারী দলে নেতাদের লুটপাটকে সামনে নিয়ে আসেন। নিত্যপণ্যের বাজার নিয়েও সরকারকে দোষারোপ করেন।
অথচ বাজার নিয়ন্ত্রন করেন আমদানিকারক ও উৎপাদনকারীরা। এখানে সরকারের ভূমিকা খুবই নগন্য।

কিন্তু কখনো কোন আওয়ামী লীগের কর্মীকে বলতে শুনিনি দিনের পাশে রাত থাকে, ভালোর সাথে মন্দ থাকে, উন্নয়নের সাথে দুর্নীতি থাকে। উন্নয়ন আর দুর্নীতি এরা একে অপরের সহধর ভাই।

যে কাজ করে না তার ভুল থাকে না। আর যে কাজ করে তার ভুল হবেই। এটাই নিয়ম। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের মন্ত্রী এমপিরাও সরকারের উন্নয়ন নিয়ে যতটা না কথা বলেন, তার ছেয়ে বেশি বলেন বিএনপিকে নিয়ে। আমারতো মাঝে মাঝে মনে হয় খোদ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরই বিএনপিকে মিডিয়াতে বাঁচিয়ে রেখেছেন। না হলে জাতি এতদিনে বিএনপির চল্লিশা খেতে পারতো!

পরিশেষে বলতে চাই শেখ হাসিনার এত উন্নয়ন আমজনতার কাছে আওয়ামী লীগের মাঠের নেতা কর্মীরা পৌছাতে ব্যর্থ হলে আওয়ামী লীগকে ডুবতে হবে। আজ আওয়ামী লীগের বড় প্রয়োজন দল ও দেশ প্রেমী নেতাকর্মীর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top