১০ ডিসেম্বরই সমাবেশ করতে চায় বিএনপি, সড়কে করলে কঠোর ব্যবস্থা ডিএমপি কমিশনার

bnp101222.jpg

সীমান্ত চৌধুরী ।।

স্থান নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা কাটেনি তারপরও ১০ ডিসেম্বরই সমাবেশ করতে চায় বিএনপি। জোট ও সমমনাদের সঙ্গে পরামর্শের পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত  বলেছে বিএনপি। তবে ডিএমপি কমিশনার বলেছে সড়কে করলে কঠোর ব্যবস্থা। অন্যদিকে গতকাল থেকে চলছে রাজধানীর প্রবেশপথ গুলোতে পুলিশের তল্লাশি।

বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশের আর মাত্র একদিন পর শনিবার । কিন্তু গণসমাবেশের স্থান নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনো কাটেনি। এরই মধ্যে গতকাল বুধবার নয়াপল্টনে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে একজন নিহত হন। সমাবেশ সফলে দায়িত্বপ্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের করা হয় আটক।

এমন পরিস্থিতিতে গণসমাবেশ করবে কিনা সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে বুধবার রাতে জরুরি বৈঠকে বসেন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। সূত্র জানায়, বৈঠকে শনিবার ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে শত বাধা এলেও ঢাকায় গণসমাবেশ হবে বলে নেতারা একমত পোষণ করেন। এ সময় নেতারা বলেন, এ গণসমাবেশ বিএনপির এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শান্তিপূর্ণ এ কর্মসূচি যে কোনো মূল্যে সফল করা হবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়। নয়াপল্টনে হামলা, নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও গণসমাবেশসহ সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ২০ দলীয় জোটের শরিক ও সমমনা দলগুলোর মতামত নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ ব্যাপারে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সবার সঙ্গে পরামর্শের পর আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

সমাবেশের স্থান নিয়ে বিএনপি ও পুলিশ মুখোমুখি অবস্থানে। বিকল্প ভেন্যু না দিলে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণসমাবেশ করার বিষয়ে এখনো অনড় বিএনপি।

অপরদিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বা এর মতো কোনো খোলা মাঠে সমাবেশ করতে হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সেক্ষেত্রে ইজতেমা মাঠ ও পূর্বাচলে বাণিজ্য মেলার মাঠের প্রস্তাবও দিয়েছে পুলিশ।

এদিকে স্থান নিয়ে বিএনপির প্রতিনিধি হিসাবে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা দলের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিকেও আটক করা হয়েছে।

সমাবেশে যোগ দিতে বিভাগীয় জেলার নেতাকর্মীরা নানা বাধার মুখে পড়ছেন বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির দাবি, রাজধানীর প্রবেশমুখগুলোতে, এমনকি কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে বের হওয়ার পর পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।

যেখানে তারা তল্লাশি চালাচ্ছে। বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে গণসমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, সরকার যদি পছন্দ অনুযায়ী বিকল্প ভেন্যু না দেয় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেই ১০ ডিসেম্বর গণসমাবেশ হবে।

তিনি বলেন, বিএনপি সড়কে সমাবেশ করলে জনদুর্ভোগ হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়ক ২০ বছর ধরে বন্ধ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কও বন্ধ। এতে কী জনদুর্ভোগ হয় না?

মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারানোর আতঙ্কে রয়েছে। আমাদের গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে। গ্রেফতার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের কর্মসূচি হবে শান্তিপূর্ণ। আমরা নয়াপল্টনে সমাবেশের কথা বলেছি। এখন বিকল্প প্রস্তাব দিতে হলে সরকারকে দিতে হবে।

সরকারকে গ্রহণযোগ্য বিকল্প প্রস্তাব দিতে হবে। নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি পুলিশ না দিলে কি হবে-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, পুলিশ পুলিশের কাজ করবে, আমরা আমাদের কাজ করব। নয়াপল্টনেই সমাবেশ করব। তবে আমরা চাই, পুলিশ যেন দলীয় ভূমিকা পালন না করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top