বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিকল্প দেখছেন না বিশ্বনেতারা

NM24PM.jpg

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সীমান্ত চৌধুরী ।।

বিগত বছর গুলোতে বাংলাদেশে যে উন্নয়ন হয়নি গত একযুগে শেখ হাসিনা নেতৃত্বে বাংলাদেশে শতগুনের বেশি উন্নয়ন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা, আন্তর্জাতিক মেরুকরণ, রোহিঙ্গা ইস্যু, বিরোধী নেতার অভাবসহ নানা কারনে বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিকল্প দেখছেন না বিশ্বনেতারা।

মুলত উল্লেখিত এই পাঁচ কারণেই বিশ্বনেতৃবৃন্দ শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প দেখছেন না। আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ক্ষমতায় থাকার প্রেক্ষিতে নানা সমালোচনার পরও শেখ হাসিনা এখনও বিশ্বনেতাদের প্রথম পছন্দ।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে অবস্থান করছেন। নিউ ইয়র্কে তিনি ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। বিভিন্ন রাষ্ট্র এবং সরকারপ্রধানরা তার সঙ্গে বৈঠক করছেন এবং বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করছেন। বুধবার রাতে জো বাইডেনের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। সেখানে বাইডেনের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। বাংলাদেশ নিয়ে যখন বিভিন্ন পশ্চিমা দেশগুলোতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশে বাংলাদেশের মানবাধিকার ইস্যু নিয়ে তোলপাড় চলছে ঠিক সেইসময় শেখ হাসিনা জাতিসংঘ যেন আলো ছড়ালেন। শেখ হাসিনাকে বিশ্ব নেতারা অকুণ্ঠ প্রশংসা ভাসিয়েছেন। বিশ্বনেতৃবৃন্দ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রারও প্রশংসা করেছেন। বাংলাদেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এখন আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য আন্তর্জাতিক মহলের দ্বারস্থ হচ্ছে। তারা বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুম, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, অবাধ সুষ্ঠ নিরপেক্ষ নির্বাচন ইত্যাদি ইস্যুতে দেশে-বিদেশে কূটনৈতিকদের কাছে নানা রকম অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। ঠিক সেইসময় শেখ হাসিনার প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানাচ্ছেন বিশ্বনেতৃবৃন্দ। কি কারণে শেখ হাসিনার এই সমর্থন? এটা স্পষ্ট যে বিরোধী দলগুলো বিশেষ করে জামায়াত-বিএনপিগোষ্ঠী আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম অভিযোগ উত্থাপন করলেও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তা এখন পর্যন্ত ইতিবাচকভাবে সাড়া দেয়নি। বরং নানা কারণেই তারা মনে করছে যে, বাংলাদেশের মানবাধিকার, সুশাসন, গণতন্ত্র ইত্যাদি নিয়ে নানা দুর্বলতা এবং ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। কেন শেখ হাসিনার বিকল্প দেখছেন না বিশ্বনেতারা? এই প্রশ্নের উত্তরে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা পাঁচটি কারণ খুঁজে পেয়েছেন।

১. বাংলাদেশের উন্নয়ন: শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছে এবং গত ১৩ বছরের বেশি সময় ধরে টানা ক্ষমতায় থাকার ফলে বাংলাদেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে আত্মপ্রকাশ করেছে। এটি বিশ্বনেতৃবৃন্দের চোখ এড়ায়নি। বিশ্বনেতৃবৃন্দ এটিও মনে করেন যে, এর পিছনে শেখ হাসিনার একক কৃতিত্ব, নেতৃত্ব এবং রাজনৈতিক দূরদর্শিতা রয়েছে।

২. সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা: শেখ হাসিনা তাঁর দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রীত্বের পর থেকেই সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি গ্রহণ করে চলেছেন এবং এ ব্যাপারে তিনি কোনো রকম আপোষ করেননি। এটা বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে প্রশংসিত হয়েছে। বিশেষ করে বিশ্ব যখন জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদের বড় ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, আফগানিস্তানে বিপর্যয় ঘটেছে তখন শেখ হাসিনার এই অবস্থান সারা বিশ্বে তাকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।

৩. আন্তর্জাতিক মেরুকরণ: শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক মেরুকরণে একটি ভারসাম্যের অবস্থানে রয়েছেন। বাংলাদেশ একটি মুসলিম প্রধান দেশ হওয়া সত্ত্বেও এখানে অসাম্প্রদায়িকতার পক্ষে তিনি অবস্থান নিয়েছেন, আন্তর্জাতিক বিভক্ত বিশ্বে তিনি এখনও একটি ভারসাম্যের প্রতীক হিসেবে অবস্থান করছেন। এ কারণেই বিশ্বনেতৃবৃন্দ তাকে অন্যরকম একটি মর্যাদা দিচ্ছে।

৪. রোহিঙ্গা ইস্যু: রোহিঙ্গা ইস্যুতে শেখ হাসিনা বিশ্বে নিজেকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় দেওয়া এবং বছরের পর বছর তাদেরকে ভরন-পোষণ করার মধ্য দিয়ে তিনি একজন বিশ্বনেতায় উদ্ভাসিত হয়েছেন। বিশ্বনেতৃবৃন্দ জানেন যে, শেখ হাসিনার কারণে এই রোহিঙ্গারা আশ্রয় পেয়েছে এবং একটি মানবিক বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে।

৫. বিরোধী নেতার অভাব: বিশ্বনেতৃবৃন্দ শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প দেখছেন না, তার একটি বড় কারণ হলো বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই মুহূর্তে কোনো বিকল্প নেই। শেখ হাসিনার বিকল্প কোনো নেতৃবৃন্দকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেখা যাচ্ছে না।

সব মিলিয়ে বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলো বিশেষ করে জামায়াত-বিএনপিগোষ্ঠী আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে অসত্য ও বায়োবীয় বিভিন্ন রকম অভিযোগ আনলেও আন্তর্জাতিক নেতৃত্ব এখন পর্যন্ত কোন রকম ইতিবাচকভাবে সাড়া দেয়নি। বরং নানা কারণেই তারা মনে করছে যে, বাংলাদেশের মানবাধিকার, সুশাসন, গণতন্ত্র ইত্যাদি নিয়ে নানা দুর্বলতা এবং ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top