পদ্মা-মেঘনা নামেই বিভাগ হচ্ছে ফরিদপুর ও কুমিল্লা

NP-DV-Logo.jpg

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

ঢাকা থেকে আলাদা হয়ে বৃহত্তর ফরিদপুরের পাঁচ জেলা নিয়ে পদ্মা নদীর নামানুসারে ‘পদ্মা’ এবং একইভাবে চট্টগ্রাম থেকে আলাদা হয়ে বৃহত্তর নোয়াখালী ও কুমিল্লার  ছয় জেলা নিয়ে মেঘনা নদীর নামানুসারে ‘মেঘনা’ নামে অন্য একটি নতুন বিভাগ করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত পদ্মা বিভাগের সদর দফতর হবে ফরিদপুরে এবং মেঘনা বিভাগের সদর দফতর হবে কুমিল্লায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তাঁর কার্যালয়ে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি (নিকার) বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে এ বিভাগ দুটির অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করার কথা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, ঢাকা বিভাগ ভেঙে প্রস্তাবিত বৃহত্তর ফরিদপুরের পাঁচ জেলা ফরিদপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুর নিয়ে পদ্মা নদীর নামানুসারে এ বিভাগ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর এর সদর দফতর হবে ফরিদপুরে। ফরিদপুর জেলার আয়তন ২ হাজার ৭৩ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা ১৯ লাখ ৮৮ হাজার ৬৯৭। গোপালগঞ্জ জেলার আয়তন ১ হাজার ৪৬৮ দশমিক ৭৪ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা ১১ লাখ ৭২ হাজার ৪১৫। রাজবাড়ীর আয়তন ১ হাজার ১১৮ দশমিক ৮০ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা ১০ লাখ ১৫ হাজার ৫১৯। শরীয়তপুরের আয়তন ১ হাজার ৩৬৩ দশমিক ৭৬ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা ১১ লাখ ৫৫ হাজার ৮২৪। মাদারীপুরের আয়তন ১ হাজার ১২৫ দশমিক ৬৯ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা ১২ লাখ ১২ হাজার ১৯৮। ফলে পদ্মা বিভাগের মোট আয়তন হবে ৭ হাজার ১৪৯ দশমিক ৯৯ বর্গকিলোমিটার। মোট জনসংখ্যা ৬৫ লাখ ৪৪ হাজার ৬৫৩। সাক্ষরতার হার ৪৮ দশমিক ৯ ভাগ।

জানা গেছে, বর্তমানে বৃহত্তর কুমিল্লা ও বৃহত্তর নোয়াখালীর ছয়টি জেলায় প্রায় ২ কোটি জনসংখ্যা রয়েছে। এই ছয় জেলার আয়তন প্রায় ১৩ হাজার বর্গকিলোমিটার, যা ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠিত সিলেট, বরিশাল ও রংপুর বিভাগের চেয়ে জনসংখ্যা ও আয়তনের প্রায় দ্বিগুণ। কুমিল্লায় সরকারের প্রায় সব ধরনের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে কুমিল্লায় বিভাগ হলে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ওপর জনগণের চাপ কমবে। ঢাকা শহরে বাড়তি লোকের চাপ হবে না। সেখানে যানজটও কমে আসবে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে কুমিল্লার অবস্থান। রাজধানী ও বন্দরনগরের ওপর চাপ কমাতে এ শহর বেশ ভূমিকা রাখবে।

বৃহত্তর কুমিল্লা ও নোয়াখালীর ছয় জেলার মধ্যবর্তী স্থানেও কুমিল্লার অবস্থান। ভৌগোলিক ও উন্নত যোগাযোগব্যবস্থার কারণে কুমিল্লাকে সমৃদ্ধ জনপদ মনে করা হচ্ছে। এ ছয় জেলার মানুষের সঙ্গে সড়ক, রেল ও নদীপথে যোগাযোগ অত্যন্ত মসৃণ। দাফতরিক বেশির ভাগ কাজেই ছয় জেলার মানুষ কুমিল্লায় জড়ো হন। এখানে দিনে এসে দিনে কাজ করে বাড়ি ফিরে যাওয়া সম্ভব। ছয় জেলার মানুষের আঞ্চলিক ভাষাও কাছাকাছি।

তবে বৃহত্তর নোয়াখালীর মানুষ ছেয়েছিলো ঐতিহাসিক ঐতিহ্যবাহী জেলা হিসেবে নোয়াখালীকে আলেদা বিভাগ করা হোক। প্রচীন জনপথ হিসেবে একটি পরিপূর্ণ আবাসিক জেলা হিসেবে নোয়াখালীরর সুনাম রয়েছে। ২০০ বছরের ঐতিহাসিক জনপথ নোয়াখালীকে বিভাগ করা হলে আগামীর বাংলাদেশের জন্য নতুন সম্ভবনা তৈরী হতো। তাছাড়া কুমিল্লা থেকে দক্ষিণ জনপথ নোয়াখালীর দূরত্ব হবে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার। এছাড়া কুমিল্লায় নোয়াখালীর মানুষের কোন শিল্পকারখানা বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও নাই। বৃহত্তর নোয়াখালীর মানুষের কুমিল্লা যাতায়তও নাই। যতটা চট্টগ্রামে ছিলো। যদি নোয়াখালীকে আলেদা বিভাগ করে বেগমগঞ্জ চৌরাস্তাকে বিভাগ সদর দপ্তর করা যেতো তাহলে বাংলাদেশের দক্ষিণ চরাঞ্চলের নতুন জাগ্রত ভূমি নিয়ে প্রশাসনিক বিভাগের আগামীর পথ সুগম হতো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি ভেবে দেখবেন। নোয়াখালীর গর্ব জাতীয় নেতা ওবায়দুল কাদের নোয়াখালীকে আলেদা বিভাগ বাস্তবায়নে এবারতো আপনি মুখ খুলবেন। আপনার এমন নিরবতা নোয়াখালীকে ২০০ বছর পিছিয়ে দিতে পারে!

জনাব ওবায়দুল কাদের আপনিতো জানেন নোয়াখালীর দক্ষিণে বঙ্গপোসাগরের বুক চিরে হাতিয়া সংলগ্ন বাংলাদেশের মূল ভূমি সম আরেক নতুন বাংলাদেশ জাগছে। আগামীতে আয়তনের দিক থেকে নোয়াখালী হবে দেশের সবছেয়ে বড় জেলা। বর্তমানেও নোয়াখালীর শুধু হাতিয়া উপজেলাও ফেনী জেলা থেকে আয়তনে অনেক বড়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top