সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে নোয়াখালীতে আ.লীগের বিদ্রোহীসহ দুই প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন

sann.jpg

নোয়াখালী প্রতিনিধি ।।

সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে নোয়াখালীতে আ.লীগের বিদ্রোহীসহ দুই প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন করেছেন। নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে প্রচারণায় বাধা, কর্মী-সমর্থকদের মারধর ও প্রার্থীকে হুমকি-ধমকি দেওয়ার প্রতিবাদে পৃথক সংবাদ সম্মেলন করেছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীসহ দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী।  সোমবার দুপুরে উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউপির স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কামাল উদ্দিন মিয়াজী ও  রোববার রাতে কেশারপাড় ইউপির স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু বকর ভূঁইয়া এই সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে দুই প্রার্থী নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তা ও প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যথায় নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসবে, এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির তত অবনতি ঘটবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাঁরা। সংবাদ সম্মেলনকারী দুই প্রার্থীর মধ্যে কেশারপাড়ের আবু বকর ভূঁইয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কামাল উদ্দিন মিয়াজী। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পর থেকে স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাঁকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছেন। প্রচারণা শুরুর পর তাঁর একাধিক কর্মীকে মারধর করা হয়েছে এবং প্রচারণায় বাধা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভাঙচুর করা হয়েছে দুটি প্রচারণার মাইক। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তিনি নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন জানিয়েছেন।

এরআগে রোববার রাত ৯টায় নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন কেশারপাড় ইউপির আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও সাবেক চেয়ারম্যান আবু বকর ভূঁইয়া। তিনি অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর গত তিন দিনে তাঁর কর্মী-সমর্থকদের ওপর সাত-আট জায়গায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের অব্যাহত হামলা ও হুমকি-ধমকিতে অনেকে বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। বাড়ি বাড়ি গিয়ে দুর্বৃত্তরা কর্মীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আবু বকর উল্লেখ করেন, হামলা ও প্রচার-প্রচারণায় বাধা দেওয়ার ঘটনায় তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে একাধিকবার অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

দুইটি সংবাদ সম্মেলনে দুই প্রার্থী শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের স্বার্থে এখন থেকে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল জোরদার, অভিযান চালিয়ে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও নির্বাচনের দিন প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েনের দাবি জানান।

অভিযোগের বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মোহাম্মদপুরের স্বতন্ত্র প্রার্থী কামাল হোসেন মিয়াজীর লিখিত অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। এ ছাড়া কেশারপাড়ের প্রার্থী আবু বকর ভূঁইয়া মৌখিকভাবে তাঁকে অভিযোগ জানিয়ে গেছেন। তিনি দুই প্রার্থীর অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।

আগামী ১৫ জুন সেনবাগ উপজেলার তিনটি ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচনে কেশারপাড় ইউপিতে বেলাল ভূঞা, অর্জুনতলায় আবদুল ওহাব ও মোহাম্মদপুরে ফিরোজ আলম ভূঁইয়া ওরফে রিগান চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। তিন ইউপিতে আওয়ামী লীগের আটজন বিদ্রোহী প্রার্থীসহ বিএনপির সমর্থক স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মাঠে আছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top