দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় জাতিসংঘ পদক পেল বাংলাদেশ

dd.jpg

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় নারীর ক্ষমতায়নের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘জাতিসংঘ জনসেবা পদক ২০২১’ পেয়েছে বাংলাদেশ। সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ‘ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) নারীর ক্ষমতায়ন’ উদ্যোগের স্বীকৃতি হিসেবে ‘এসডিজি অর্জনে জেন্ডার-রেসপন্সিভ সেবা’ ক্যাটাগরিতে এ পুরস্কার দিয়েছে জাতিসংঘ।

১৩ ডিসেম্বর সোমবার জাতিসংঘ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান পুরস্কারটি গ্রহণ করেন। পদক গ্রহণ অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণসচিব মো. মোহসীন উপস্থিত ছিলেন।

জনসেবায় শ্রেষ্ঠত্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি জাতিসংঘের জনসেবা পদক। এই পুরস্কার জনসেবা প্রতিষ্ঠানের সৃজনশীল সাফল্য ও অবদানের স্বীকৃতি দেয়। এটি বিশ্বের দেশগুলোকে আরও কার্যকর ও সেবামূলক জনপ্রশাসনের দিকে পরিচালিত করতে উদ্বুদ্ধ করে। পাশাপাশি জনসেবার ভূমিকা ও পেশাদারি প্রচার করে।
বিজ্ঞাপন

১৯৭০ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের প্রেক্ষাপটে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশে একসময় নারীরা যেকোনো দুর্যোগে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হতো। কিন্তু এ চিত্র অভাবনীয়ভাবে পাল্টে গেছে। সিপিপির স্বেচ্ছাসেবক কাঠামোয় নারী স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যা পুরুষের এক-তৃতীয়াংশ ছিল।

সক্ষমতা, অংশগ্রহণ ও নেতৃত্বেও পিছিয়ে ছিল নারীরা। এ অসমতা দূর করার লক্ষ্যে ২০২০ সালে ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন’ দিবসে সিপিপিতে ১৮ হাজার ৫০৫ জন ‘নতুন নারী স্বেচ্ছাসেবক অন্তর্ভুক্তি’ করা হয়।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এরপর ধারাবাহিকভাবে নারী স্বেচ্ছাসেবকদের গুণগত মান ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নিবিড় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন দুর্যোগে সাড়াদানে তাঁদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির জন্যও নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন উদ্যোগ। স্বেচ্ছাসেবায় নারী নেতৃত্ব সৃষ্টির জন্য ‘সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক নির্দেশিকা ২০২১’-এ বিশেষ বিধান সৃষ্টি করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, বর্তমানে উপকূলীয় এলাকায় সিপিপির ৭৬ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত রয়েছেন, যার অর্ধেক নারী। নারী স্বেচ্ছাসেবকদের ব্যাপক অংশগ্রহণের ফলে উপকূলীয় এলাকায় নারীদের মধ্যে দুর্যোগের আগাম প্রস্তুতি তুলনামূলক অনেক বেড়েছে। এ ছাড়া নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় করণীয় সম্পর্কে সচেতনতাও লক্ষণীয় হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, দুর্যোগে আগাম সতর্কবার্তা ও জীবন রক্ষাকারী সেবা দেওয়ায় নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ায় ঘূর্ণিঝড়ে নারী মৃত্যুর হার কমেছে। ঘূর্ণিঝড়ে নারী-পুরুষ মৃত্যুর অনুপাত ছিল ১৯৭০ সালে ১৪:১, ১৯৯১ সালে ৫:১, ২০১৭ সালে ২:১ এবং বর্তমানে এ অনুপাত ১:১।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top