নোয়াখালীতে বিএনপির অন্তঃকোন্দল তুঙ্গে, কোম্পানীগঞ্জের পর চাটখিল,সেনবাগ ও সোনাইমুড়িতে পৃথক দুই গ্রুপে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন

BNP-Noakhali.png

নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি ।।

নোয়াখালীতে বিএনপির দলীয় অন্তঃকোন্দল চরমে পৌঁছেছে। পৃথক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিএনপির ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। ১ সেপ্টেম্বর সকাল ও বিকেলে টান টান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে চাটখিল, সোনাইমুড়ী, সেনবাগ ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় দু’পক্ষ দলটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পালন করে।

তবে কোথাও কোনো আপত্তিকর কোনো সংঘর্ষ বাঁধে নি। পৃথক কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন হওয়ায় দলটির অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্যে এলো বলে সংশ্নিষ্টরা মন্তব্য করেন। এর ফলে দলের নেতাকর্মীরা মূলত দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।

১ সেপ্টেম্বর ছিল দলটির ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ উপলক্ষে জেলার প্রায় সবক’টি উপজেলায় পৃথক কর্মসূচি পালিত হয়।

নোয়াখালী-৫ আসনে কোম্পানীগঞ্জে মওদুদ আহমদকে কোনঠাসা করে ঘরে ডুকিয়ে দিয়েছে বিএনপির আরেক নেতা শিল্পপতি ব্যবসায়ী ফখরুল ইসলাম। ফখরুল ইসলাম উপজেলা বিএনপির সেক্রটারীসহ বেশিরভাগ নেতাকর্মী নিয়ে বিশাল শোডাউন করে দলের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পলন করে। অন্যদকে মওদুদ আহমদ অনুসারীরা ঘরে কেক কাটে।

নোয়াখালী-১ আসনে (চাটখিল-সোনাইমুড়ী উপজেলা) বিএনপির রাজনীতি দুই ভাগে বিভক্ত। এক পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন। অন্য পক্ষে নেতৃত্বে রয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক ছাত্রনেতা মামুনুর রশিদ মামুন। এর ফলে চাটখিল ও সোনাইমুড়ী উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা দু’ভাগে বিভক্ত রয়েছেন।

মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকনের অনুসারীরা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করে। মো. শাহজাহান রানার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও চাটিখিল পৌর বিএনপির সভাপতি মোস্তফা কামাল।

অন্যদিকে একই সময়ে মামুনের রশিদ মামুনের অনুসারীরা চাটখিল উপজেলা অডিটোরিয়াম কাম কমিউনিটি সেন্টারে পৃথক আয়োজনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেন। এতে গোলাম মোস্তফা সেলিমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির কোষাধ্যক্ষ ও চাটখিল উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মামুনুর রশিদ।

একইভাবে সোনাইমুড়ী উপজেলাতেও ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন ও মামুনুর রশিদ মামুনের অনুসারীরা পৃথক কর্মসূচি পালন করে।

নোয়াখালী-২ আসনেও (সেনবাগ) বিএনপির রাজনীতি দু’ভাগে বিভক্ত। এক পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবেদীন ফারুক। অন্য পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কাজী মফিজুর রহমান। ১ সেপ্টেম্বর দুই পক্ষই আলাদাভাবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করে।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির রাজনীতিও দু’ভাগে বিভক্ত। এক পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও এরশাদ সরকারেষ সাবেক উপরাষ্ট্রপতি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও অন্য পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন ঢাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফখরুল ইসলাম। এখানেও আলাদাভাবে কর্মসূচি পালিত হয়।

এ ব্যাপারে জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, নির্বাচন ও দলের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে কোনো কোনো উপজেলায় দলের নেতাকর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে চাটখিল, সোনাইমুড়ী, সেনবাগ ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা রয়েছে। নেতাকর্মীদের এ বিভক্তি দলের জন্য ক্ষতিকর উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপির জাতীয় নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহম্মদ, বরকত উল্যাহ বুলু, মো. শাহজাহান ও মাহাবুব উদ্দিন খোকন বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top