লক্ষ্মীপুর থেকে রিয়াজ মাহমুদ বিনু ।।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নে সবুজের গোজা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার কাজ চলছে। আর এই কর্মযজ্ঞকে পুঁজি করে গ্রামে সক্রিয় শক্তিশালী দালালচক্র। চক্রের সদস্যরা পল্লী বিদ্যুতের ঠিকাদারদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এবং অফিসের কর্মকর্তাদের নাম ভাঙিয়ে বিদ্যুতের খুঁটি, লাইন স্থাপন এবং মিটার সংযোগ নিশ্চিত করার কথা বলে আগ্রহী গ্রাহকদের কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা আদায় করছে। গ্রাহকদের অভিযোগ, ঘুষ ছাড়া বিদ্যুৎ লাইন কিংবা সংযোগ কিছুই মিলছে না।
জানা যায়, উপজেলার ইউনিয়নে ২০টি সংযোগের বিদ্যুৎ লাইন সম্প্রসারণের কাজ চলছে। ঠিকাদার তাজুল ইসলাম প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি এ কাজ বাস্তবায়ন করছে।
সাধারণ গ্রাহকদের অভিযোগ, খুঁটি, লাইন এবং মিটারের জন্য গ্রাহক প্রতি ৭ হাজার টাকা করে নিচ্ছে। আব্বাস উদ্দিন দালালদের মাধ্যমে এ টাকা আদায় করা হচ্ছে। দাবি করা টাকা দিতে অস্বীকার করলে কিংবা প্রতিবাদ করলে নানা অজুহাতে তাদের বিদ্যুৎ সংযোগের বাইরে রাখা হচ্ছে। পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তাদের নাম ভাঙিয়ে এবং ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে দালালচক্র এই অপকর্ম করছে।
পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী নতুন লাইনের ক্ষেত্রে মিটার বাবদ জামানত ফি ৪০০ টাকা, সদস্য ফি ৫০ টাকা, আবেদন জমা বাবদ ১০০ টাকাসহ সর্বমোট ৭৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর পুরনো লাইনের ক্ষেত্রে অনলাইনের আবেদন ফি ১০০ টাকা বাড়তিসহ মোট ৮৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে যায়, উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডে নতুন বিদ্যুৎ লাইন স্থাপনের প্রক্রিয়া খুঁটি স্থাপন করা হয়েছে। লাইন টানা হয়েছে। মিটার বোর্ড ওয়ারিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। এই সুযোগে দালাল চক্র সক্রিয় হয়ে নতুন সংযোগ প্রত্যাশিদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে নিয়েছে ।
বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে চান- এমন ১০জন গ্রাহক কবির হোসেন, খোরশেদ আলম, ওসমান, খালেদ হাওলাদার বাড়ির সোহেল, জহির, ফিরোজ নিজাম, লতিক উল্যাহ, মিলনস অভিযোগ করে বলেন বিদ্যুৎ আসছে এমন আওয়াজ তুলে আব্বাস উদ্দিন নামের এক দালাল গত এক বছর পূর্বে গ্রামের ২০টি পরিবারের কাছ থেকে সাড়ে সাত হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছে।পল্লী বিদ্যুতের সরবরাহ লাইন স্থাপন ও মিটার বরাদ্দের নামে একই কারবার চলছে।
অভিযুক্ত দালাল আব্বাস উদ্দিন জানায়, নতুন সংযোগ পত্যাশিদের থেকে টাকা আদায়ের বিষয়টি সঠিক, তবে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে আসা যাওয়া ঠিকাদারের লোকজনকে ভাত খাওয়া, গাছ কাটা খরচ বহন করছি ঠিকাদার তাজুল ইসলাম আমি নগদে ৪০ হাজার টাকা দিয়েছি।
দালাল আব্বাস থেকে নগদ টাকা নেয়ার বিষয়ে ঠিকাদার তাজুল ইসলাম তাজুর কাছে জানতে চাইলে তিনি টাকা বিষয়ে এড়িয়ে গিয়ে বলেন, আমি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসকে লাইন বুঝিয়ে দেয়ার পর আমার বিরুদ্ধে আর কোনো অভিযোগ থাকতে পারে না।
বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিরি সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ আবু তাহের বলেন, আমরা এ বিষয়ে গ্রাহকদের সচেতন করার চেষ্টা করছি। মাঝেমধ্যে মাইকিং করা হচ্ছে। বিদ্যুতের নাম করে কেউ টাকা চাইলে তাকে ধরে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে তুলে দিতে বলেছি।