নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে অবৈধভাবে পাঁচ শিক্ষকের এমপিওভুক্তির অভিযোগ

ctg_board.jpg

বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির ।।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের ‘লাউতলী জুনিয়র বিদ্যালয়ে’ ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে পাঁচজন শিক্ষককে অবৈধভাবে নিয়োগ ও এমপিওভুক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঘটনা তদন্তে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. গাজী গোলাম মাওলাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ে পাঁচটি প্যাটার্নবিহীন পদে ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে পাঁচজন শিক্ষককে স্থানীয়ভাবে নিয়োগ দেখিয়ে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে।

এ এমপিওভুক্তি বাতিলের দাবিতে প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা নুরুল আমিনের ছেলে কাজী নজরুল ইসলাম শিমুল স্থানীয় সাংসদ মামুনুর রশীদ কিরন বরাবর জুন মাসে লিখিত অভিযোগ করেন।

পরে সাংসদ ওই শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি বাতিলের জন্য মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বরাবর একটি ডিও লেটার পাঠান।

অভিযোগের বিবরণ থেকে জানা যায়, নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ের বিদ্যালয়ে সমাজ বিজ্ঞানের একটি পদ এবং ওই পদে প্রতিষ্ঠানটির প্রথম এমপিওভুক্তির সময় ২০১০ সালে যথারীতি একজন শিক্ষক এমপিওভুক্ত হয়ে কর্মরত।

২০০৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ভুয়া নিয়োগ দেখিয়ে ১ জানুয়ারি ২০২০ সালে সমাজবিজ্ঞান শাখায় বাংলা বিষয়ের একজন, একই বিষয়ে ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর নিয়োগ দেখিয়ে ১ মে ২০২০ সালে একজন, ব্যবসা শিক্ষা বিষয়ের কোনো পদ না থাকলেও ১ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে নিয়োগ দেখিয়ে ১ জুলাই ২০২০ এ নতুন একজন এবং সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে একজন শিক্ষকের স্থলে অতিরিক্ত আরও তিনজন শিক্ষকের নাম এমপিওতে যুক্ত করা হয়।

এদিকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের কোনো শিক্ষকের পদ এমপিও নীতিমালায় না থাকলেও একইভাবে ১ ডিসেম্বর ২০১৬-তে নিয়োগ দেখিয়ে ১ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে একজন শিক্ষক, হিন্দু ধর্মীয় বিষয়ে অতিরিক্ত শ্রেণি শাখায় ১ ফেব্রুয়ারি ২০০৪ এ নিয়োগ দেখিয়ে ১ জুন ২০১৯ তারিখে আর একজনসহ মোট পাঁচজন শিক্ষকের নাম এমপিওতে যুক্ত করা হয়।

২০১৯ সালের শেষের দিকে বিদ্যালয়টির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক ওই ৫ শিক্ষকের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে ২০১৬ সালের পূর্বের নিয়োগ ও যোগদানপত্র দেখিয়ে তাদের এমপিওভুক্তির কাজটি করেন।

এ বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও রসুলপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান বলেন, অভিযোগকারী একজন উগ্রপন্থী দলের সদস্য। তার বাবা এক শতক জমিও বিদ্যালয়ে দান করেননি। অভিযোগকারী শিমুল বিদ্যালয়ের শহিদ মিনার ভাঙচুর করেছেন। পাঁচ শিক্ষকের এমপিওভুক্তির কাগজপত্রের কিছু ত্রুটি থাকতে পারে বলে জানান তিনি।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. হাবিব উল্যা বলেন, তার আগে প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে এ নিয়োগের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি বিভাগীয় পরিচালক, মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা, চট্টগ্রাম তদন্ত করছেন।

জেলা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা কর্মকর্তা সরিৎ কুমার চাকমা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নতুন এমপিওভুক্ত পাঁচ শিক্ষকের নিয়োগ বৈধ ছিল না।

বিষয়টির তদন্তকারী কর্মকর্তা চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. গাজী গোলাম মাওলা জানান, তিনি গত বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) এ ঘটনা তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম থেকে নোয়াখালী গিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে কিছু ত্রুটি ধরা পড়েছে। তদন্ত চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top