ফেনীতে কোরবানির চামড়ার বাজারে ধস, ক্রেতা নাই

e1dda57fdb2837e0973fec34fe25d220-5d545a6cce6e4.jpg

ফেনী প্রতিনিধি ।।

এবার গ্রামে গ্রামে ঘুরে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের চামড়া কিনতে দেখা যায়নি। কোথাও কোথাও গরু ও মহিষের চামড়া ৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে অনেক এলাকায় একেবারেই বিক্রি না হওয়ায় চামড়াগুলো স্থানীয় মাদ্রাসায় দান করা হয়েছে। ফেনীতে কোরবানির গবাদিপশুর চামড়ার দামে ধস নেমেছে।

ফেনীর পাঁচগাছিয়া বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, ঢাকা থেকে তাঁরা চামড়ার কোনো নির্দিষ্ট দর পাননি। তা ছাড়া ঢাকায় ট্যানারিতে বা বড় আড়তে চামড়া বিক্রি করে বকেয়া টাকা ৫ বছরেও আদায় করা যায় না। এবার তাঁরা গরু ও মহিষের প্রতিটি চামড়া আকার অনুযায়ী ১৫০ থেকে ৩০০ টাকায় কিনেছেন। গতবার গরু ও মহিষের চামড়া ১৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

দাগনভূঞার করীমপুরের আবু হানিফ বলেন, সারা দিন কোনো মৌসুমি ব্যবসায়ীকে চামড়া কিনতে দেখা যায়নি। বিকেলে তাঁরা গরুর চামড়া মাত্র ৫০ টাকায় বিক্রি করেছেন। দাগনভূঞার খুশীপুর গ্রামের মনির আহম্মদ বলেন, তিনি তাঁর গরুর চামড়া ১০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। পাশের গ্রামের এক ব্যক্তি গরুর চামড়া বিক্রি করতে না পেরে দুর্গন্ধ থেকে বাঁচতে মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন।

সোনাগাজীর বাদুরিয়া গ্রামের আবুল বাসার জানান, অন্যান্য বছর একাধিক মৌসুমি ক্রেতা চামড়া কিনতে আসতেন। এ বছর সারা দিনেও চামড়া কেনার জন্য কাউকে পাওয়া যায়নি। এই কারণে তাঁরা স্থানীয় মাদ্রাসায় দিয়েছেন। ফেনী শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কের আতিয়ার সজল নামের একজন জানান, সারা দিনে চামড়া কেনার কোনো লোক না পেয়ে বিকেলে উল্টো রিকশা ভাড়া দিয়ে চামড়া স্থানীয় একটি এতিমখানায় পৌঁছে দিয়েছেন।

শনিবার সন্ধ্যায় ফেনী সদর উপজেলার কালীদহ এলাকার মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী মীর হোসেন জানান, এলাকা থেকে গড়ে ৩০০ টাকা করে ৫৫টি চামড়া কিনে ফেনীতে নিয়ে লোকসানে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি করতে হয়েছে।

মাদ্রাসার একজন তত্ত্বাবধায়ক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, স্থানীয়ভাবে গরু ও মহিষের ১৭০টি চামড়া সংগ্রহ করে পাঁচগাছিয়া বাজারের একটি বড় আড়তে নিয়ে গিয়েছিলাম। তাঁরা গড়ে প্রতিটি চামড়া ১৭০ টাকা করে দাম দিয়েছেন।

পাঁচগাছিয়া বাজারের আড়তদার হেলাল উদ্দিন রোববার সকালে জানান, তিনি গড়ে ৩৫০ টাকা দরে প্রায় চার হাজার চামড়া কিনেছেন। ঢাকায় চামড়া বিক্রি করে পাঁচ বছরেও টাকা পাওয়া যায় না।

পাঁচগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন জানান, জেলায় একমাত্র তাঁর ইউনিয়নের পাঁচগাছিয়া বাজারে চামড়ার ছোট-বড় ৪০-৪৫ জন আড়তদার ছিলেন। গত কয়েক বছরে অনেকেই ব্যবসায় গুটিয়ে নিয়েছেন। বর্তমানে ২০-২২ জন আড়তদার টিকে রয়েছেন। চলতি বছর ১৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকায় তাঁরা চামড়া কিনছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top