বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান শুল্ক সংকট সমাধান কতদূর

USA-BD.jpg

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা (প্রতীকী) । ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির ভাগ্য কোনদিকে যাচ্ছে, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান শুল্ক সংকট সমাধানে আশাবাদের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে। আগামীকাল ২৯ জুলাই দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও, এর আগেই ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে শুল্ক হ্রাসের বিষয়ে ‘সুখবর’ আসতে পারে বলে আভাস মিলেছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্ক আরোপ নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ও চামড়াজাত পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার প্রস্তুতি চলছে, যা আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হতে পারে। তবে চলমান কূটনৈতিক তৎপরতা ও বাণিজ্য আলোচনার ইতিবাচক অগ্রগতিতে শুল্কহার ১৮ থেকে ২০ শতাংশে নামিয়ে আনার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ইতোমধ্যে ভিয়েতনাম ২০ শতাংশ ও ইন্দোনেশিয়া ১৯ শতাংশ শুল্ক সুবিদার আওতায় এসেছে।

গত ৮ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঠানো এক আনুষ্ঠানিক চিঠিতে আগামী ১ আগস্ট থেকে নতুন শুল্কহার কার্যকর করার ঘোষণা দেন। এতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের ওপর গড় শুল্কহার বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৫০ শতাংশে পৌঁছাবে।

এই মুহূর্তে দেশের রফতানিকারক, ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী, শ্রমিক, ও আমদানি-রফতানির সঙ্গে জড়িত সব পক্ষের চোখ এখন ২৯ জুলাইয়ের ভার্চুয়াল বৈঠকের দিকে। এই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র যদি ৩৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ১৮-২০ শতাংশে আনার ঘোষণা দেয়, তাহলে তা হবে বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি বড় বিজয়। এমনকি এটি শুধু একটি শুল্ক সংকট নয়, বরং দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সক্ষমতারও একটি বড় পরীক্ষা।

অনুষ্ঠেয় ওই বৈঠক সফল হলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, চামড়া ও অন্যান্য রফতানি খাত বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার নতুন সুযোগ পাবে। অন্যথায়, বড় ধরনের আর্থিক ও সামাজিক ধাক্কা লাগতে পারে দেশের অর্থনীতিতে।

এই বাড়তি শুল্ক সরাসরি প্রভাব ফেলবে বাংলাদেশের প্রধান রফতানি খাত তৈরি পোশাক শিল্প ও চামড়াজাত পণ্যের ওপর। বাড়বে পণ্যের দাম, কমবে প্রতিযোগিতা, এবং ঝুঁকিতে পড়বে লাখ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থান। এ বাস্তবতা উপলব্ধি করেই বাংলাদেশ সরকার শুরু করে জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এরই মধ্যে সরকার ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর নিরলস কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক প্রচেষ্টায় এখন আশার আলো দেখা যাচ্ছে।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আশা করা হচ্ছে, ২৯ জুলাইয়ের বৈঠকের আগেই যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক হ্রাসের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবে। যদি তা হয়, তবে দেশের রফতানি বাণিজ্য একটি বড় সংকট থেকে মুক্তি পাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top