বিএনপির নেতা ফখরুল ইসলামকে দায়ি করে কোম্পানীগঞ্জে গায়েবি পোস্টারিং, দিনভর কোম্পানীগঞ্জে বিক্ষোভ

fkrull.jpg

কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি ।।

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও চর এলাহী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মতিন তোতা হত্যার ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ও মূল হত্যাকারীদের আড়ালে রাখতে রাতের আধারে বিএনপির দুঃসময়ে দলের আশির্বাদ হিসেবে দলের হাল ধরা সাহসী নেতা ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির অভিভাবক মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামের নামে গায়েবি পোস্টারিং করানো হয়।

মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামের নামে গায়েবি পোস্টারিং এর প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল কোম্পানীগঞ্জ। দিনভর বিক্ষোভ করেছে উপজেলা বিএনপি ও বিএনপির সকল অঙ্গ সংগঠন।

বিএনপি নেতা ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে গতকাল ৮ সেপ্টেম্বর সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যায় বসুরহাট বাজারে সভা সমাবেশ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি ও বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি, বসুর হাট পৌরসভা বিএনপি ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ও পৌরসভা যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ সব অঙ্গ সংগঠন অংশগ্রহণ করে।

এখানে উল্লেখ্য বিএনপি নেতা মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এই প্রথম কোম্পানীগঞ্জে বিএনপি ও বিএনপির সকল সংগঠন ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদে এক সাথে মাঠে নেমেছে।

জানা যায়, গত ৭ সেপ্টেম্বর শনিবার রাতে আবদুল মতিন তোতা হত্যায় উপজেলা বিএনপির সদস্য ফখরুল ইসলামকে দায়ি করে কোম্পানীগঞ্জে গায়েবি পোস্টারিং করা হয়। এতে দলের নেতাদের ছবির পাশাপাশি বিএনপি নেতা ফখরুল ইসলামের ফাঁসি লাগানো ছবি ছাপানো হয়। পরে এসব মিথ্যা ও গায়েবি পোস্টারগুলো ছিড়ে ফেলেন বিএনপির বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা।

রবিবারের বিক্ষোভ সমাবেশে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আলম শিকদার বলেন, বিএনপি নেতা আবদুল মতিন তোতাকে হত্যা করেছেন আওয়ামী সন্ত্রাসী রাজ্জাক চেয়ারম্যান ও তার লোকজন। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা আমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির লক্ষ্যে উপজেলা বিএনপি অন্যতম সদস্য শিল্পপতি ফখরুল ইসলামকে দায়ী করে পোস্টারিং করেছে। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মাহমুদুর রহমান রিপন, পৌর বিএনপির সভাপতি আবদুল মতিন লিটন, সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল-মামুন, যুবদলের আহ্বায়ক ফজলুল কবির ফয়সাল, সদস্য সচিব জাহিদুর রহমান রাজনসহ দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য ফখরুল ইসলাম ঢাকার মেট্রো হোমস লিমিটেড এবং ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেডের চেয়ারম্যান।

ফখরুল ইসলাম মওদুদ আহমদ এর মৃত্যুর পরথেকে কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট বিএনপির অভিভাবক হিসেবে মামলা হামলায় জর্জরিত বিএনপির নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়ান।

যে সময়ে আওয়ামী সরকারের রাজনৈতিক নির্যাতনের ভয়ে বিএনপির অনেক নেতাই মাঠের রাজনীতি থেকে দূরে ছিলেন সেই সময়ে প্রতিকুল পরিবেশে মামলা হামলার তোয়াক্কা না করেই কোম্পানীগঞ্জ তথা নোয়াখালী বিএনপির পাশে দাঁড়ান স্বশরীরে।

এরপর থেকে দীর্ঘদিন নোয়াখালী-৫ আসনের কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।

কিন্তু দল যখন সুবিধা জনক অবস্থানে ঠিক তখনই একটি হত্যাকাণ্ডকে নিয়ে মঠের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে কিছু লোক সক্রিয় হয়ে উঠে।

প্রসঙ্গত; গত ২৭ আগস্ট রাতে চরএলাহী ইউনিয়নে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে বিএনপি নেতা আবদুল মতিন তোতাকে আহত করে। পরে গত ৩০ আগস্ট ঢাকার পপুলার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় গত ২ সেপ্টেম্বর সোমবার নিহত তোতার ছেলে ইসমাইল বাদি হয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ৩১জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে চরএলাহী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাককে প্রধান আসামি করা হয়েছে।

নিহত আবদুল মতিন তোতা হত্যা বিষয়ে আবদুল মতিন তোতার ছেলে ইমাম উদ্দিন সবুজ বলেন, ‘ফখরুল সাহেব ভালো মানুষ। তার বিরুদ্ধে কে বা কারা এ ধরণের পোস্টারিং করেছে তা আমরা জানি না। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নাই। আমরাও এ ষড়যন্ত্রের বিচার চাই।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরী বলেন, বিএনপি নেতা আবদুল মতিন তোতা হত্যা মামলায় আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। গায়েবি পোস্টারিংয়ের বিষয়ে শুনেছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top