নোয়াখালীতে দুই সাবেক এমপিসহ ২০০ জনের নামে হত্যা মামলা, অজ্ঞাত ২৫০০

LAN.jpg

নোয়াখালী প্রতিনিধি।।

নোয়াখালী-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী ও নোয়াখালী -১ এর সাবেক সংসদ সদস্য এএইচএম ইব্রাহিমসহ ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের ৩৯ জন নেতা কর্মীর নাম উল্লেখ করে জজ কোর্টে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়াও নোয়াখালীর হাতিয়ায় দুই এমপিসহ ১৪৩ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হেয়ছে।

সোনাইমুড়ী থানা পুলিশের গুলিতে নিহত আসিফের বাবা মো.মোরশেদ আলম বাদি হয়ে ১৯ আগস্ট সোমবার সকালে নোয়াখালী জজকোর্টের বেগমগঞ্জ আদালতে মামলার আবেদন করেন।

নোয়াখালীর জজকোর্ট ইন্সপেক্টর শাহ আলম মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেন। মামলার বিবরনের জানা গেছে,সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর ছাত্র জনতা ও জনসাধারণ আনন্দ মিছিল করতে যায়। সাবেক সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য এ এইচএম ইব্রাহিম ও সাবেক মেয়র আক্তার হোসেন ফয়সালের নির্দেশে ওই মিছিলে আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ, পেট্রোল বোমাসহ বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র দিয়ে অতর্কিতভাবে হামলা করা হয়।

এসময় মিছিলকারী জনতা প্রাণ ভয়ে সোনাইমুড়ী থানায় আশ্রয় নিলে আসামিগণ এলোপাতাড়ি গুলি করে। গুলিতে মো.আসিফ(২৪) গুলিবিদ্ধ হন। আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

এছাড়া ঘটনাস্থলে মারা যায় আরও চারজন। এই ঘটনায় করা মামলায় ৩৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও অনন্ত ২৫শত জনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

হাতিয়ার সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী ও তার স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউসসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ১৪৩ জন নেতাকর্মির বিরুদ্ধে থানায় মামলা। গত ১৫ আগস্ট (বৃহস্পতিবার)রাত আনুমানিক ৯ টার দিকে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ও অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বাগত জানিয়ে করা আনন্দ মিছিলে হামলা ও মারধর করার অভিযোগে হাতিয়া পৌরসভার চরকৈলাস গ্রামের বাসিন্দা আবদুল করিম(৪৭) বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন।
জানা গেছে,মামলাটিতে মোহাম্মদ আলীর পরিবারের পাঁচ সদস্য ছাড়াও ১৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি দেখানো হয়েছে ১০০ থেকে ১২০ জনকে। মামলায় সাবেক এমপির পরিবারের অপর আসামিরা হলেন মোহাম্মদ আলীর ভাই ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুব মোর্শেদ লিটন (৫৯) ও তাঁর ছোট ছেলে মাহতাব আলী অদ্রি (২৬)।
পুলিশ জানায়, মামলায় ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা সাবেক দুই সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী, তার স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস এবং তাদের ছেলে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশিক আলী ওরফে অমিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ৮ আগস্ট বিকেল চারটার দিকে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ও নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি চরকৈলাস গ্রামের ওছখালী-সাগরিয়া সড়কের এমপির পোল এলাকায় পৌঁছালে সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী, তার স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস, ভাই মাহবুব মোর্শেদ ও ছেলে আশিক আলীর নির্দেশে ও নেতৃত্বে মিছিলে সশস্ত্র হামলা চালানো হয়।
এতে বাদী আবদুল করিম, সোনাদিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নাছির ও হাতিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমান গণিসহ অনেকে আহত হন। হামলাকারীরা এ সময় সোনাদিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রুবেল উদ্দিনের একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। যোগাযোগ করা হলে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিসান আহমেদ বলেন, মামলায় ৫৪ ধারায় আটক হয়ে কারাগারে থাকা মোহাম্মদ আলী, তাঁর স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস ও ছেলে আশিক আলীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

এ ছাড়া বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছ। উল্লেখ্য, গত রোববার দিবাগত রাত তিনটার হাতিয়ার নিজ বাড়ি থেকে সাবেক সংসদ সদস্য দম্পতি মোহাম্মদ আলী, আয়েশা ফেরদাউস ও ছেলে আশিক আলী অমিকে হেফাজতে নেয় নৌবাহিনী। পরে সোমবার সকালে হাতিয়া থানায় সোপর্দ করলে পুলিশ ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদর আদালতে সোপর্দ করে। আদালত শুনানি শেষে তাদে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top