নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে নদী ও সাগরে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা, পরিবহন, বাজারজাত এবং মজুত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হচ্ছে। এই নিষেধাজ্ঞা চলবে আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত। ইলিশের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিত করতে মৎস্য অধিদফতর প্রতি বছর এই ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকে। তারই অংশ হিসেবে এবারও এটি কার্যকর হতে যাচ্ছে।
চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ভোলা ও বরগুনার ইলিশ অভয়াশ্রম এলাকাসহ নদী তীরবর্তী জেলেপল্লীতে লিফলেট বিতরণ, মাইকিংসহ ব্যাপক প্রচার চালানো হচ্ছে।
অভিযান চলাকালে কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন জেলেদের উদ্দেশে বলেন, “উৎপাদন বাড়াতে মা ইলিশকে নিরাপদে ডিম ছাড়ার সুযোগ দিতে হবে। কারণ ইলিশের জন্যই চাঁদপুর জেলা সারাদেশে পরিচিত। প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ ধরা হলে ভবিষ্যতে মাছের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই নিষেধাজ্ঞা শুধু শাস্তির জন্য নয়, বরং আপনাদের (জেলেদের) ভবিষ্যৎ সুরক্ষার জন্য।”
জানা গেছে, এই ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় বিভিন্ন নদী ও সাগরে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এতে মৎস্য কর্মকর্তাদের পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী, নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী অংশগ্রহণ করবে।
নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে জেলেদের সহায়তায় ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় প্রতি পরিবারকে ২৫ কেজি করে চাল প্রদান করা হবে। তবে জেলেরা সঠিক তালিকা তৈরির মাধ্যমে বরাদ্দ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
চাঁদপুর সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মির্জা ওমর ফারুক বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগ ২২ দিন নদীতে কঠোর নজরদারিতে থাকবে। নৌকাগুলো যাতে নদীতে না নামে, এজন্য পদ্মা-মেঘনার সংযুক্ত খালগুলোর মুখ বন্ধ করে দেওয়া হবে। খালের অভ্যন্তরে যেসব নৌকা থাকবে, সেগুলো একত্র করে বেঁধে রাখা হবে। প্রশাসনের কেউ যদি অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকে, তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান বলেন, “জেলেদের ২২ দিন ধৈর্য ধরে মা ইলিশ রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। সরকার এ সময় বিকল্প কর্মসংস্থান ও সহায়তা প্রদান করবে। তবুও যদি কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে নামে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
