যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত পাল্টা শুল্ক কমানোর দরকষাকষিতে সরকারের দুর্বল প্রস্তুতিতে ব্যবসায়ীরা হতাশা

USA-BD.jpg

বিশেষ প্রতিবেদক ।।

১ আগস্ট থেকেই বাংলাদেশের পণ্যের রপ্তানীর ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত পাল্টা শুল্ক কমানোর দরকষাকষিতে সরকারের দুর্বল প্রস্তুতিতে ব্যবসায়ীরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, আর মাত্র কয়েক দিন পরই ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের খড়ক দাঁড়াবে বাংলাদেশের উৎপাদিত পণ্যের উপর।

বাংলাদেশের প্রতিযোগী কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যে ঘোষিত শুল্ক কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। যেখানে ভিয়েতনা ২০%, ইন্দোনেশিয়া কমবেশি ১৯% শুল্কের সুবিধা পাবে, সেখানে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের দিতে হবে কমবেশি ৩৫+১৫% মানে ৫০% শুল্ক।

কিন্তু বাংলাদেশের সরকারের শুল্ক কমানোর দরকষাকষিতে দুর্বল প্রস্তুতিতে ব্যবসায়ীরা হতাশ। প্রস্তুতিতে অনেক দুর্বলতা স্পষ্ট। এতে বিশাল রপ্তানী ঘটতিতে পড়বে বাংলাদেশ। সরকার  শুল্ক কমানোর দরকষাকষিতে বেসরকারি খাতকেও সংযুক্ত করেনি। অর্থনীতিবিদরাও এ নিয়ে আলোচনায় বিশেষজ্ঞ এবং বেসরকারি খাতকেও সংযুক্ত করা হয়নি বলে দাবি করেছেন।

গতকাল ২০ জুলাই রবিবার এক গোলটেবিল বৈঠকে এ হতাশার কথা জানিয়েছেন রপ্তানিকারক উদ্যোক্তারা। ‘যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক: কোন পথে বাংলাদেশ’ শিরোনামে এ আলোচনা রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকার একটি দৈনিক পত্রিকা এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও গবেষকরা এতে অংশ নেন।

গোলটেবিল বৈঠকের আলোচনায় বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং গবেষণা সংস্থা সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম দেখে মনে হচ্ছে, ‘আমরা একটি অত্যন্ত নিরপরাধ, নির্দোষ ও নিষ্পাপ সরকারকে সামনে নিয়ে এগোনোর চেষ্টা করছি। আমরা এখানে বসে এত কিছু বুঝি আর ওনারা বোঝেন না, আমার কাছে এটি আশ্চর্য লাগে। এ জন্যই বললাম, এত নির্দোষ, নিষ্পাপ ও নিরপরাধ সরকার আমি দেখিনি।’ এ রকম দুর্বল এবং অসমন্বিত সরকার, যাদের রাজনৈতিক বৈধতা থাকে না, তারা সফল দরকষাকষি করেছে এমন নজির কম। তাদের পক্ষে কোনো দেশের সঙ্গে দরকষাকষিতে জেতার নজির নেই।

তিনি বলেন, শুল্ক আলোচনায় ‘নন-ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট’ (এনডিএ) সই করেছে সরকার। দেশের ইতিহাসে এ ধরনের ‘এনডিএ’ এটাই প্রথম। এর বদলে ‘নন-পেপার’ করা যেত, যার অর্থ হলো, ‘এটি আমার অবস্থান, কিন্তু আমি সই করব না।’

লিখিত এ ধরনের চুক্তির কারণে এখন যদি বাংলাদেশ কোনো লবিস্ট নিয়োগ করে, তার কাছেও এই তথ্য প্রকাশ করা যাবে না।
তার মতে, বিষয়টি শুধু শুল্কের নয়, অনেক অশুল্ক আছে। এর মধ্যে রাজনীতি আছে। এ রকম ইস্যুতে বাংলাদেশের আলোচনা বিচ্ছিন্ন। তবে শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প প্রশাসনের এই নতুন শুল্কনীতি দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর হবে না। তা সত্ত্বেও তিনি বাংলাদেশের জন্য একটি ‘ওয়েক আপ কল’ হিসেবে দেখছেন। বাংলাদেশ আগামী দিনে কোথায় যাবে, তা নির্ধারণে এই নতুন শুল্ক ব্যবস্থা একটা সতর্কবার্তা।

আলোচনায় হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ. কে. আজাদ বলেন, ‘৪০ বছরের ব্যবসায় জীবনে রপ্তানি খাতে এমন সংকট কখনও দেখিনি। আমরা ব্যবসায়ীরা এ খাতকে সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে এসেছি। কিন্তু এখন আমরা হতাশ ও ক্ষুব্ধ।’ পরিস্থিতির নাজুকতা বোঝাতে তিনি বলেন, ‘আমার এক বড় ব্র্যান্ড হেড অফিসে ডেকে নিয়ে জানায়, তারা তাদের সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান বোঝার চেষ্টা করেছেন। তাদের ভাষ্য ছিল– তোমাদের অবস্থান দুর্বল, ভালো ফল আশা করা যাচ্ছে না। যা শুনে আমি হতাশ হয়ে পড়ি। এ পরিস্থিতিতে একাধিক উপদেষ্টাকে ফোন করি। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সঙ্গেও যোগাযোগ করি। পরদিন বাণিজ্য উপদেষ্টা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেন।’

ক্রেতাদের মনোভাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার এক ক্রেতা ইমেইলে জানান, ১ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের ওপর যে শুল্ক বসবে, তা সরানো না গেলে শুল্কের ৩৫ শতাংশ আমাকে বহন করতে হবে। এখন প্রশ্ন হলো, আমি সেই শুল্ক কীভাবে বহন করব? প্রতিযোগী অন্য দেশগুলোর তৎপরতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইন্দোনেশিয়া সরকার ও ব্যবসায়ীরা একসঙ্গে কাজ করছেন। লবিস্ট নিয়োগ করেছেন, প্রতিটি স্তরে আলোচনা করেছেন। অথচ বাংলাদেশে সে সুযোগ নেই।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে এ. কে. আজাদ বলেন, ‘আপনারা বলছেন সাত-আট মাসের জন্য দায়িত্বে আছেন। এর পর চলে যাবেন। কিন্তু তখন আমরা যাব কোথায়? আমাদের কার কাছে ফেলে রাখছেন? সবার ধারণা, আমাদের মাথার ওপর একজন আছেন। তিনি একটা ফুঁ দিয়ে দেবেন, আর সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। যার জন্য আমাদের কোনো রকম মূল্যায়ন করা হচ্ছে না; কোনো লবিস্ট নিয়োগের চিন্তা করা হচ্ছে না।’ তিনি উল্লেখ করেন, ‘সরকার বলছে, ৯৫ শতাংশ সমস্যা সমাধান হয়েছে। বাকি ৫ শতাংশ নিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ চলছে। এ রকম আলোচনায় অংশ নিয়ে ব্যবসায়ীরা কী করবেন।’

বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, তিন দিন আগেও শুল্ক সংকটের একটা গ্রহণযোগ্য সমাধানের ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন তিনি। এখন পুরোপুরি হতাশ। কারণ তারা জানতেন, শুল্ক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির কার্যালয় (ইউএসটিআর) চূড়ান্ত কর্তৃপক্ষ। দুদিন আগে জানা গেল, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কার্যালয় হচ্ছে চূড়ান্ত কর্তৃপক্ষ। এ বার্তা আগে জানলে বেসরকারিভাবে লবিস্ট নিয়োগ করতে পারতেন তারা। এখন লবিস্ট পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ, সব লবিস্টই কোনো না কোনো দেশের দায়িত্ব নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তার পরও যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি লবিস্ট ফার্মের সঙ্গে কথা বলেছেন তারা। সরকারের পদক্ষেপ প্রসঙ্গে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, দুঃখজনকভাবে বেসরকারি খাতকে সরকার সেভাবে কাজে লাগাচ্ছে না। পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে এখনও রশি টানাটানি চলছে। এ পরিস্থিতিতে প্রতিযোগীদের সমান হারে শুল্কহার আরোপ হলে ব্যবসায় টিকে থাকা সম্ভব হবে। তা না হলে একটা মৌসুম হয়তো দরের সঙ্গে আপস করে টেকা যাবে, তার পর কারখানা বন্ধ হবে।

তিনি বলেন, দেশের এক হাজার ৩২২টি কারখানা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানি করে। এর মধ্যে মোট উৎপাদনের ২০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রে যায় এমন কারখানা ৮২২টি। মোটের ৯০ থেকে ১০০ ভাগ পর্যন্ত উৎপাদন ও রপ্তানি করে এ রকম ১০০ কারখানা রয়েছে। যারা এখন সবেচেয়ে বড় বিপদে রয়েছে।

সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পাল্টা শুল্ক নিয়ে সরকার ভেবেছিল, আলাপ-আলোচনা করে সমাধান করে ফেলবে। দরকষাকষির সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা ভেবেছিলেন, পাল্টা শুল্ককে ১০ শতাংশ বা শূন্য শতাংশে নামিয়ে আনতে পারবেন। সরকারি পর্যায়ে এমন আত্মবিশ্বাস ও অতি আত্মবিশ্বাসের খেসারত দিতে হচ্ছে এখন। তাঁর মতে, প্রতিযোগী দেশগুলো শুল্ক আলোচনায় কোন অবস্থায় থাকছে, তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি অশুল্ক বাধা ও ভূরাজনৈতিক কৌশলের নানা ইস্যু আছে। সেখানে সার্বভৌমত্ব, অন্য দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে কতটুকু করা সম্ভব, বিবেচনায় আনতে হবে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) ও ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্টের তফাতটা ভালোভাবে বোঝার ব্যাপার আছে। এতদিন শুধু ইউএসটিআরের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ভিত্তিতে আলাপ হয়েছে। এখন ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্টও পাল্টা শুল্ক আলোচনায় বড় অংশীদার। সেখানে আলোচনা করতে হবে, লবিস্ট নিয়োগ করতে হবে।
বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, সরকার কী করছে বা হালনাগাদ কী অগ্রগতি আছে, তা ব্যবসায়ীরা জানতে পারেননি। সরকার যদি মনে করে, ব্যবসায়ীদের সম্পৃক্ত না করে আমলাতন্ত্রের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দরকষাকষির মাধ্যমে ভারত, ভিয়েতনাম বা কম্বোডিয়ার চেয়ে ভালো সুবিধা আনতে পারবে, তাহলে তা হবে নিজেরাই নিজেদের বিপদ ডেকে আনা। তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে খাত-সংশ্লিষ্ট অংশীজনকে সঙ্গে নিয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে ভিয়েতনামসহ প্রতিযোগী দেশগুলো কী করছে, তা-ও মাথায় রাখতে হবে। শুল্কের হার যেন শেষ পর্যন্ত প্রতিযোগী দেশগুলোর অন্তত কাছাকাছি থাকে, তা দেখতে হবে।

অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্টা শুল্কসহ বাণিজ্য আলোচনায় বাংলাদেশ ইতোমধ্যে পিছিয়ে পড়েছে। তবে আলোচনা ও দরকষাকষির জায়গা শেষ হয়ে যায়নি। ক্রেতাদের মনোভাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেক ক্রেতা ক্রয়াদেশ দেওয়ার পর স্থগিত করেছে। তারা জিজ্ঞেস করছে, যদি ট্রাম্পের নতুন পাল্টা শুল্ক আরোপিত হয়, তাহলে রপ্তানিকারকরা বাড়তি শুল্কের কত ভাগের দায় নিতে পারবে। বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা খুবই কম মুনাফায় কাজ করেন। এই বাস্তবতায় ৩৫ বা ৩২ শতাংশ শুল্কের ভাগ বহন করার মতো সক্ষমতা নেই। তাঁর পরামর্শ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তানের মতো নিজেদের বিশেষজ্ঞদের কাজে লাগাতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনে বাংলাদেশের যারা ঘনিষ্ঠ আছেন, সেই পক্ষগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। কূটনৈতিক চ্যানেল যথেষ্টভাবে কাজে আসছে না। সেটাকেও কার্যকর করা যায়।

গবেষণা সংস্থা সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান জানান, বাংলাদেশের দরকষাকষি তাঁকে হতাশ করেছে। মালয়েশিয়া এনডিএ থাকা সত্ত্বেও তারা জটিল ইস্যুগুলো নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনের সঙ্গে বৈঠক করছে। বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক বাস্তবতা জটিল। চীনের সঙ্গে সম্পর্ক যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি ভারতের সঙ্গেও রয়েছে নানা জটিলতা। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ভূকৌশলগত অবস্থান ও চিন্তাভাবনার সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করতে হয়। বিশ্বায়নের এই নতুন পর্বে যেখানে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও কৌশলগত অংশীদারিত্ব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, সেখানে বাংলাদেশকে ভূরাজনৈতিক সুবিধাজনক অবস্থান নিতে হবে।

অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফ জহির বলেন, পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় প্রথম দিন থেকেই সরকারের সিরিয়াস হওয়া উচিত ছিল। মার্কিন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এনডিএ সই করার সময় ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি রাখা প্রয়োজন ছিল। ৪০ শতাংশ মূল্য সংযোজন সরকারি লোকজনের বোঝার কথা নয়। তেমনি সমরাস্ত্রের আলোচনায় সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি রাখা প্রয়োজন ছিল। এটি সরকারের কূটনৈতিক পরাজয়। তিনি বলেন, এখন হয়তো মার্কিন বাজারের জন্য পণ্য উৎপাদন করা কারখানাগুলো ছয় মাসও টিকতে পারবে না। অথচ ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকবেন তিন বছর। তত দিনে ভারত-পাকিস্তান প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাবে।

অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন সাবেক বাণিজ্য সচিব মাহবুব আহমেদ, নিরাপত্তা বিশ্লেষক লে. জে (অব.) মোহম্মদ মাহফুজুর রহমান, ওষুধ শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি আবদুল মুকতাদির। প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন মাসুম বৈঠক সঞ্চালনা করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top