মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর । ফাইল ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রশংসা করেছে বিএনপি। জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলন জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে আপত্তি নেই। তবে ভোট হতে হবে জুলাই সনদের ভিত্তিতে।
গতকাল ৬ আগস্ট বুধবার পৃথক পৃথক সংবাদ সম্মেলনে এই বক্তব্য দিয়েছে দলগুলো। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচনের ঘোষণা গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সুগম করছে। ড. ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘প্রফেসর ইউনূস প্রমাণ করেছেন, নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও অবাধ করার জন্য এমন কিছু করবেন না, যা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।’
গত মঙ্গলবার রাতে প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার পর গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। এতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তারেক রহমান কবে ফিরবেন এমন প্রশ্নে পরের দিন সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। আমরা অপেক্ষায় আছি।’
স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদকে পাশে নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনের ঘোষণা রাজনৈতিক অচলাবস্থা দূর করবে। বিএনপি আশা করে, সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে সরকার ও নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নেবে। কার্যকর সংসদ গঠনে সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে বিএনপি।
জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, এনসিপি নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেছেন, ‘জনগণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সবচেয়ে বড় প্রহরী হয়ে দাঁড়াবে।’
জুলাই ঘোষণাপত্র প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি স্বাগত জানায়। বিএনপি বিশ্বাস করে, এই ঘোষণাপত্রে রাজনৈতিক দলগুলো যে অঙ্গীকার করেছে, তা পালনের মাধ্যমে নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রূপান্তরের কাজ শুরু হবে। যেসব রাজনৈতিক দল, ছাত্র, কৃষক, শ্রমিকসহ সর্বস্তরের জনগণ এই সংগ্রামে অংশ নিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন, পঙ্গু হয়েছেন– তাদের কৃতজ্ঞতা, ধন্যবাদ, অভিনন্দন জানায় বিএনপি।
সংসদের মাধ্যমে সংস্কারের সিদ্ধান্তে দলগুলোর বিভেদ রয়ে গেল কিনা– প্রশ্নে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, নির্বাচিত সংসদ সংবিধানের যাবতীয় সংস্কার বা সংশোধনী বাস্তবায়ন করবে। এটাই আইনে ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়া। এর বাইরে অন্য কোনো প্রক্রিয়া আমাদের জানা নেই। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো জুলাই সনদ আকারে সংকলিত করে সবার সই নেওয়া হবে। বিএনপি সনদে সইয়ের জন্য প্রস্তুত।
নির্বাচনের ঘোষণায় কোনো দল হতাশ কিনা– প্রশ্নে সালাহউদ্দিন বলেন, তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হতাশার কথা তারা বলেছেন। তবে আশা করব, তারা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে গণতান্ত্রিক পথকে পরিষ্কার করবেন।