আজ কার্যতালিকায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি 

Suprim-Cort-BD.jpg

সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

আজ (২০ অক্টোবর) মঙ্গলবারের আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় উঠেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি আপিল শুনানির জন্য । প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের বেঞ্চে শুনানির জন্য আপিল দুটি রয়েছে। এর একটি আপিল সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তির, অন্যটি বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলামের।

আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, আপিল বিভাগের মঙ্গলবারের কার্যতালিকায় ‘ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং অন্যান্য বনাম আব্দুল মান্নান খান এবং অন্যান্য’ শিরোনামে একটি আপিল ৬ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে, সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর রিভিউ আবেদনসহ কয়েকটি রিভিউ আবেদন রয়েছে। আর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বনাম আব্দুল মান্নান খান এবং অন্যান্য শিরোনামে অপর আপিলটি কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে ১৪ বছর আগে আপিল বিভাগ রায় দিয়েছিলেন। তখন আওয়ামী লীগ ছিল ক্ষমতায়, আদালতের রায়ের পর তারা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধন এনে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী এই সরকারব্যবস্থা বাদ দেয় শাসনতন্ত্র থেকে।

২৪ এর জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ওই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি আবেদন করেন। এরপর গত বছরের অক্টোবরে আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল। তারপর ওই মাসে আরেকটি আবেদন করেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছর আরেকটি আবেদন করেন। এ ছাড়া একটি সংগঠন ইন্টারভেনার (পক্ষ) হিসেবে যুক্ত হয়।

রিভিউ আবেদনের ওপর শুনানি শেষে গত ২৭ আগস্ট লিভ মঞ্জুর (আপিলের অনুমতি) করে আদেশ দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ। বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তির এবং বিএনপির মহাসচিবের করা রিভিউ আবেদন থেকে উদ্ভূত আপিলের সঙ্গে রিভিউ আবেদনগুলো শুনানির জন্য যুক্ত হবে বলে উল্লেখ করা হয়। আদেশে আপিলকারীপক্ষকে দুই সপ্তহের মধ্যে এবং বিবাদীপক্ষকে পরবর্তী দুই সপ্তাহের মধ্যে আপিলের সারসংক্ষেপ দায়ের করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে আপিল শুনানির জন্য ২১ অক্টোবর কার্যতালিকার শীর্ষে আসবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়।

মামলার পূর্বাপর
১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সলিমউল্লাহসহ অন্যরা ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছিলেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রায় দেন। সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীকে বৈধ ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছিল সেই রায়।

রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারীপক্ষ। এ আপিল মঞ্জুর করে ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ-সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top